ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভিয়েতনামী ডাব চাষ

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 ভিয়েতনামী ডাব চাষ

এবার ডাব বিপ্লব শুরু করেছে দেশের অন্যতম বৃহত্তম হর্টিকালচার সেন্টার কল্যাণপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ। মাত্র আড়াই থেকে তিন ফুট এই গাছে প্রথম ফুল ধরেছে। এই ফুল দেখতে ভিড় করছে মানুষ। ভিয়েতনাম থেকে আনা হয়েছে এই ডাব গাছ। কয়েক জন কৃষি বিজ্ঞানী ভিয়েতনাম সফরে গিয়ে ডাবের এই অস্বাভাবিক ফলন দেখে উৎফুল্ল হন। চেয়ে বসেন চারা। কিন্তু ভিয়েতনাম কর্তৃপক্ষ তাদের চারা সরবরাহ করতে অসম্মতি প্রকাশ করে। এতে বাংলাদেশের কৃষি বিজ্ঞানী ও গবেষকদের উৎসাহ আরও বেড়ে যায়। তারা বেশ কয়েকটি চারা গোপনে ব্যাগে পুরে দেশে নিয়ে আসেন। এদলে কল্যাণপুর হর্টিকালচারের বর্তমান উপপরিচালক ও গবেষক ড. সাইফুর রহমান ছিলেন। তারা দেশে ফিরে ওই চারা সম্প্রসারণের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেন গাজীপুরে। ফলে কয়েক লাখ চারা উৎপাদন করতে সক্ষম হন। কল্যাণপুর হর্টিকালচারে মাত্র ৮টি চারা দিয়ে চাষ শুরু করা হয়। একই সঙ্গে ১৩ হাজার ভিয়েতনামি ডাবের চারা এখানে এনে প্রতিটি পাঁচশত টাকা দামে বিক্রি শুরু করেন। মাত্র আড়াইফুট লম্বা হওয়া নারিকেল গাছ ফলন দিবে এমন খবরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে আগ্রহী কৃষকরা। তারা (কৃষকরা) অনেকেই ২ থেকে শুরু করে ৮ একর পর্যন্ত ভিয়েতনামী ডাবের চারা লাগিয়ে বাগান করেন। ড. সাইফুর রহমান জানান ভিয়েতনামী ডাবের চাষ শুরু করা হয়েছে। শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৬৫ লাখ টাকার চারা বিক্রি হয়েছে। দেশের অন্যান্য কৃষি ফার্মও একই ধারাই চারা বিক্রি করেছে। তিনি জানান, মাত্র ৩৩ মাস বয়সের হলেই প্রথমে ফল আসবে গাছে। সেই ধারায় কল্যাণপুর হর্টিকালচারের ৪টি গাছে ফুল এসেছে। দুই বছর থেকে ডাব আসা শুরু হবে। ডাবের পরিমাণ হবে ৪০ থেকে ৫০টির মধ্যে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে অধিকাংশ ডাবের বাগানের বয়স ২১ মাস হয়েছে। ৩৩ মাস হলেই প্রথমে ফুল আসবে। পরের বছর ডাব। মানে ভিয়েতনামী এইসব বাগান মালিক, আগামী দুই বছর পেরিয়ে গেলেই অর্থকরী ফসল ডাব পাবে। এইসব ডাবে পানির পরিমাণ ৭ থেকে ১০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত এক সেরের কাছাকাছি। দেশী ডাবের তুলনায় দিগুণ দাম পাবে। এ ছাড়াও অন্যান্য আরও ১২ ধরনের উপাদান থাকবে। যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এ ছাড়াও বহু কৃষক মুখিয়ে রয়েছে নারিকেলের মাধ্যমে চারা তৈরি করে বিক্রি করে লাভবান হবে। কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে বাংলাদেশের আবহাওয়া ভিয়েতনামী ডাব চাষের উপযোগী। এদিকে দিন দিন ভিয়েতনামী ডাবের চারার চাহিদা বাড়ায় কল্যাণপুর খামার ইতোমধ্যেই বড় সংখ্যার ভিয়েতনামী ডাবের চারা পাঠাতে গাজীপুর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে। এই ডাব চাষে বড় ধরনের সারের পরিমাণ অনেক কম লাগবে। সেচ সুবিধার তেমন প্রয়োজন হবে না। শুধু খরার সময়ে পাতা বিবর্ণ আকার ধারণ করলে সেচ সুবিধা সম্প্রসারণের প্রয়োজন পড়বে। অন্য মৌসুমে গাছের গোড়ায় আগাছা না জন্মে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। -ডি.এম তালেবুন নবী চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে
×