ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইয়েমেন যুদ্ধের জন্য দায়ী বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ইয়েমেন যুদ্ধের জন্য দায়ী বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ

সৌদি আরবের শাহজাদা আহমেদ বিন আবদেল আজিজ লন্ডনে মানবাধিকার কর্মীদের জানিয়েছেন, দেশটির বৈদেশিক নীতির জন্য বৃহৎ পরিসরে রাজপরিবারকে দায়ী করা উচিত নয়। ওই অঞ্চলে কি হচ্ছে তার জন্য শুধু বাদশাহ সালমান ও তার উত্তরাধিকারী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দায়ী। আলজাজিরা। ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনে শাহজাদা আহমেদ মন্তব্যটি করেন। এক ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা ‘ডাউন, ডাউন, আল সৌদ’ ও ‘ক্রিমিনাল ফ্যামিলি আল সৌদ’ বলে স্লোগান দিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফুটেজটি ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে শাহজাদা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দেন। শাহজাদা আহমেদ সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতার কয়েকজন ছেলের মধ্যে একজন। শাহজাদা বাদশাহ সালমানের একজন ভাই। তিনি বাদশার কর্মকা-ের একজন বিরোধী। তিনি বিক্ষোভকারীদের বলেন, সব আল সৌদকে আপনারা দোষী সাব্যস্ত করতে পারেন না। নির্দিষ্ট কিছু লোক আছেন যারা ইয়েমেন যুদ্ধের জন্য দায়ী। আপনারা সেই ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসা করুন। বাদশাহ ও তার উত্তরাধিকারীই এর জন্য দায়ী। যুবরাজ এমবিএস নামেও পরিচিত। ইয়েমেন যুদ্ধ ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে বিস্তৃত পরিসরে বাড়তে থাকে। সে সময় থেকেই হুতি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনী সামরিক অভিযান শুরু করে। সঙ্ঘাত শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দশ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। এছাড়া লাখ লাখ লোক তাদের বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এমবিএস সৌদি আরবের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর ইয়েমেন যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। জাতিসংঘ একে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক বিপর্যয় হিসেবে বর্ণনা করেছে। রাজপরিবারের সদস্যরা প্রকাশ্যে খুব কমই মন্তব্য করেন। কেননা সরকারের ও সৌদি রাজতন্ত্রের সমালোচনা যেই করুক না কেন তাকে দীর্ঘ মেয়াদে কারাদ- ভোগ করতে হয়। পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতন ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। ২০১৭ সালের নবেম্বর মাসে কথিত দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে রাজপরিবারের অনেক সদস্য, মন্ত্রী ও শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের আটক করা হয়। এই অভিযানটি এমবিএস পরিচালনা করেন। আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, ঘুষ ও কর্মকর্তাদের বহিষ্কারের অভিযোগ আনা হয়। রাজকীয় ডিক্রির বলে অভিযান চালানো হয়। ডিক্রিতে বলা হয়, যারা জনগণের স্বার্থকে ভুলে নিজেদের স্বার্থে কতিপয় লোকের ওপর শোষণ করেছে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। এরা অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেছে। অধিকাংশকেই পরে সরকার এক নিষ্পত্তিমূলক চুক্তি বলে ছেড়ে দেয়া হয়। যার মধ্যে সৌদি ব্যবসায়ী ও বিলিওনিয়ার শাহজাদা আলওয়ালিদ বিন তালালও রয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা সে সময় যুক্তি দিয়েছেন যে, সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য যুবরাজ এই গ্রেফতার অভিযান পরিচালিত করেছেন।
×