ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন করে সম্পর্ক শুরুর আশা

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নতুন করে সম্পর্ক শুরুর আশা

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বুধবার রাজধানী ইসলামাবাদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। জঙ্গী দমনে ব্যর্থতার অভিযোগে পাকিস্তানকে দেয় মার্কিন সাহায্য বাতিলের পর দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের প্রত্যাশা নিয়ে পম্পেও পাকিস্তান সফর করেন। উভয়পক্ষই এদিন সম্পর্ক নতুন করে শুরু করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে। এবিসি নিউজ ও এএফপি। সিআইএর সাবেক প্রধান পম্পেও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম সফরে পাকিস্তান যান। পাকিস্তানে তিনি চার ঘণ্টা সময় কাটান। এরপর ভারতের উদ্দেশে রওনা হন। বিমানবন্দরে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সামনে এগিয়ে যাওয়ার একটা ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখনও অনেক পথ যাওয়ার বাকি আছে, অনেক আলোচনা করতে হবে। আমাদের যৌথ অঙ্গীকার রক্ষা করা শুরু করতে এটাই সময়। আমরা অনেক সময় কাটিয়েছি যেখানে আমরা আলোচনা করেছি ও চুক্তি করেছি। তবে আমরা ওগুলোকে ঠিকঠাকভাবে কার্যকর করতে পারিনি।’ পম্পেও ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশী এবং শক্তিশালী আর্মি প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। পম্পেও বলেন, ‘আমরা তাদের নতুন সরকার নিয়ে কথা বলেছি, আমাদের দুই দেশের মধ্যে ব্যাপকহারে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের সুযোগ, অর্থনৈতিক, ব্যবসায়িক ও বাণিজ্যিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’ তিনি বলেন, তারা আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আলোচনা করেছেন যেটা নিশ্চিতভাবেই আফগানিস্তানের উপকার করছে এবং একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানেরও উপকার করছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গত মাসে শপথ নেয়া সাবেক তারকা ক্রিকেটার খান বলেন, ‘আপনারা জানেন আমি জন্মগতভাবে আশাবাদী। একজন খেলোয়াড় সবসময়ই একজন আশাবাদী লোক। তিনি মাঠে নামেন এবং চিন্তা করেন তিনি জিততে যাচ্ছেন।’ পম্পেওর যাওয়ার পর ইসলামাবাদের মার্কিন দূতাবাস বলেছে, ‘পম্পেও তার সব বৈঠকেই আফগানিস্তানে শান্তি আনতে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার এবং আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতির প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসী, জঙ্গীদের বিরুদ্ধে টেকসই ও চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে পাকিস্তানের নীতির ওপর জোর দিয়েছেন।’ তাবেলবান ও অন্যান্য জঙ্গীদের দমনে পাকিস্তান যথেষ্ট কিছু করছে না অভিযোগে তুলে গত সপ্তাহে ইসলামাবাদকে প্রদেয় ৩০ কোটি ডলার বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্র। পাকিস্তানের দাবি, চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন অভিযানে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, যেটা শুরু হয়েছিল ৯/১১ হামলার পর। দক্ষিণ এশিয়ায় রওয়ানা হওয়ার আগে বিমানবন্দরে পম্পেও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্ক এখন নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মুখে। তবে আশা করছি দেশটির নতুন সরকারের সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করার কিছু বিষয় আমরা খুঁজে পাব এবং দুই দেশের সম্পর্ক পুনরুদ্ধার হবে। পম্পেও সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জালমে খলিলজাদ আফগানিস্তানে শান্তি প্রচেষ্টায় নতুন ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে জানান। ওয়াশিংটন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩০ কোটি মার্কিন ডলারের সহায়তা তহবিল বাতিল করে দেয়ার কয়েকদিন পর পম্পেও পাকিস্তানের বিষয়ে আপোসমূলক এ মন্তব্য করেন। আফগান যুদ্ধ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এখন এই অধ্যায় শেষের সময় এসেছে।’ মার্কিন কর্মকর্তারা আফগান তালেবান ও হাক্কানী নেটওয়ার্কের মতো জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোকে প্রশ্রয় দেয়া, এমনকি তাদের সহায়তা করছে বলেও ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর জন্য আফগান সীমান্তবর্তী পাকিস্তান ভূখ- অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। হোয়াইট হাউসের বিশ্বাস পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টিলিজেন্স এজেন্সি ও অন্যান্য সামরিক সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে তালেবানদের অর্থ এবং অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে আসছে। এভাবে তারা আফগানিস্তানে ভারতীয় প্রভাব ঠেকাতেও চেষ্টা চালাচ্ছে।
×