সেনাবাহিনীতে চাকরি পেল বেজি
সাপে-নেউলে সম্পর্ক বাগধারাটির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। উৎসুক প্রাণী বেজি বা নেউলে গোখরো সাপ মারতে ওস্তাদ। তবে এবার বেজির সঙ্গে আরও একটি বিশেষণ যোগ হয়েছে। সেনাবাহিনীর চাকরি পেয়েছে কয়েকটি বেজি। শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর প্রকৌশল শাখা সম্প্রতি কয়েকটি বেজিকে নিয়োগ দিয়েছে। মাইন এবং বিস্ফোরক খুঁজতে এই বেজিগুলো কাজ করবে। পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসেবে কয়েকটি বেজিকে ৬ মাসের প্রশিক্ষণ দিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
এক কর্মকর্তা বলছেন, বিদেশ থেকে বিপুল অর্থ খরচ করে আনা কুকুরের চেয়ে এই বেজিগুলো বেশি কার্যকর। কারণ ছোট্ট প্রাণী বেজির ঘ্রাণ শক্তি চমৎকার। বেজি মাটি ও মাটির ওপরে পুঁতে রাখা বিস্ফোরক অনায়াসে খুঁজে আনতে পারে। আবার কুকুরের চেয়ে বেজির রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় অনেক কম।
এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত মেজর সুপুন হেরাথ বলেন, শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনীর প্রকৌশল শাখা বিস্ফোরক খুঁজতে কাজ করে। এ কাজে আমরা এতদিন কুকুরকে কাজে লাগাতাম। এসব কুকুর আমাদের দেশে জন্মায় না। বিপুল অংকের অর্থ খরচ করে আমরা এসব কুকুর বিদেশ থেকে আনতাম। ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে এসব প্রশিক্ষিত কুকুর আনতে প্রতিটার পেছনে প্রায় ২০ লাখ রুপী ব্যয় হতো।
আবার আমাদের দেশের জলবায়ুতে এসব কুকুর বেশি দিন কাজ করতে পারে না। তাই আমরা এ কাজে কুকুরের জায়গায় অন্য প্রাণীকে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করছিলাম। এরপর ২০১৬ সাল থেকে এ কাজে কয়েকটি বিলুপ্ত প্রায় বেজিকে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করি। সুপুন হেরাথ আরও বলেন, আমাদের কাছে মনে হচ্ছে মাইন খুঁজতে কুকুরের চেয়ে বেজি বেশি পারঙ্গম।
শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি বিশ্বের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিস্ফোরক চিহ্নিত করতে বেজির ব্যবহার নিয়ে গবেষণা করছেন। -নিউজ ইন এশিয়া অবলম্বনে।
ছিদ্রটি করল কে?
মহাকাশ স্টেশনে রাখা একটি মহাকাশ যানে ছোট্ট একটি ছিদ্র দেখা যাওয়ার পর এ নিয়ে হৈ চৈ শুরু হয়েছে। এই ছিদ্রটি সেখানে কিভাবে তৈরি হলো সেটা এখনও একটা রহস্য। তার মধ্যেই রাশিয়ার বেসামরিক মহাকাশ সংস্থার প্রধান বলেছেন, ড্রিল মেশিন দিয়ে এই ছিদ্রটি করা হয়েছে। তিনি ধারণা করছেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে এটা করা হয়ে থাকতে পারে। সয়ুজ মহাকাশ যানের ক্রু সদস্যরা গত বুধবার যানটির গায়ে ছিদ্রটি দেখতে পান। টেপ লাগিয়ে তারা এই ছিদ্রটি বন্ধ করে রাখার চেষ্টা করছেন। ছিদ্রটির কারণে মহাকাশ যানের ভেতরে চাপ সামান্য কমে গেছে। রুশ সংস্থাটির প্রধান দিমিত্রি রগোজিন বলেছেন, এভাবে আরও কয়েকটি ছিদ্র করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি বলছেন, ‘ছিদ্র দেখে বোঝা যাচ্ছে কাঁপা কাঁপা হাতে ছিদ্রটি করা হয়েছে। আগে ধারণা করা হয়েছিল মহাকাশে ভাসমান ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোন পাথর যা এক মাইক্রোমিটারের মতো বড়, কিংবা মহাকাশের কোন অরবিটাল বর্জ্যরে আঘাতে এই ছিদ্র তৈরি হয়ে থাকতে পারে।
কিন্তু রুশ মাহাকাশ সংস্থা সেই আশঙ্কা বাতিল করে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে বর্তমানে ছয় ক্রু সদস্য অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে তিনজন আমেরিকান, দুজন রুশ এবং একজন জার্মান। রগোজিন বলছেন, যে এই ছিদ্রটি করেছে আমরা সেই দোষী ব্যক্তিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। এজন্যে একটি কমিশন গঠন করা হবে। তিনি বলেন, রুশ যে কোম্পানি এই সয়ুজ মহাকাশ যানটি তৈরি করেছে এই ঘটনা তাদের জন্যে একটি সম্মানহানির ব্যাপার। ছিদ্রটি সয়ুজ মহাকাশ যানের এমন একটি অংশে করা হয়েছে যা নভোচারীদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার সময় ব্যবহার করা হবে না। মহাকাশ যানের গায়ে ছিদ্র তৈরি হওয়ার এই ছবিটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। রুশ মহাকাশ শিল্পের একটি সূত্র রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসকে জানিয়েছেন, কাজাখস্তান বাইকোনর কসমোড্রোমে পরীক্ষার সময় এই মহাকাশ যানটির ক্ষতিসাধন হয়ে থাকতে পারে। তারপর প্রাথমিক পরীক্ষার পর এই ত্রুটি হয়ত ঢেকে রাখা হয়েছিল।
অপর একটি সূত্রের জল্পনা, কেউ হয়ত এ রকম একটা কিছু করে ফেলেছে। তারপর ভয়ে ওই ছিদ্রটা ঢেকে রাখার চেষ্টা করেছে, যেটি দিয়ে ছিদ্রটি বন্ধ করা হয়েছিল সয়ুজ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছানোর পর সেটি শুকিয়ে হয়ত খুলে পড়ে গেছে।’ কিন্তু রগোজিন, যার বক্তব্য টেলিভিশনে প্রচার করা হয়েছে, তিনি বলেছেন, তৈরি করার সময় এই ত্রুটি ছিল নাকি পূর্বপরিকল্পিত- সেটা আমরা পরীক্ষা করে দেখছি। কিন্তু এখানে আরও একটা বিষয় আছে যেটা আমরা এখনই উড়িয়ে দিচ্ছি না।’ কি সেটা? উত্তরে তিনি বলেন, মহাকাশে কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই হামলা করেছে কিনা! তা উড়িয়ে দেয়া যায় না। -বিবিসি অবলমম্বনে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: