ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফেমবোসা সম্মেলনে স্পীকার

নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের মূলভিত্তি। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা অন্যতম প্রধান শর্ত। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। দক্ষিণ এশিয়ার নির্বাচন কমিশনের সংগঠন ‘ফোরাম অব ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বডিস অব সাউথ এশিয়ার (ফেমবোসা) দুদিনব্যাপী সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে সিইসি কেএম নুরুল হুদা বলেন, সংবিধান অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বুধবার রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে দুদিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার সম্মেলনের সমাপনী দিন। এতে দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশের নির্বাচন কমিশনের ২১ জন প্রতিনিধি যোগদান করছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আফগানিস্তানের নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান ও ফেমবোসার বর্তমান চেয়ারম্যান ডাঃ গোলাজান এ. বাদি সাইদ এবং বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা বক্তব্য দেন। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী নবম ‘ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বডিস অব সাউথ এশিয়া’ এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পরে তিনি ফেমবোসার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটটির উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রথম সাধারণ অধিবেশনে ফেমবোসার বর্তমান সভাপ্রধান স্বাগতিক বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার কাছে সভাপ্রধানের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী আরও বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্র চর্চার কেন্দ্রবিন্দু সংসদ। তাই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের আস্থা অর্জন জরুরী। সংবিধান অনুযায়ী সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। সেই কারণে জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কারিগরী উদ্ভাবনী, ওয়েবসাইট ডিজাইন, নির্বাচন প্রশিক্ষণ বিষয়ে আলোকপাত করার জন্য গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে চলতি দশম সংসদের মেয়াদ শেষ দিকে রয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। এ অবস্থায় সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশনও প্রস্তুতি নিচ্ছে। শক্তিশালী গণতন্ত্র চর্চায় সংবিধান ও আরপিও অনুযায়ী অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে কমিশন দায়বদ্ধ। ফেমবোসার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা অন্যতম প্রধান শর্ত। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করাই ফেমবোসার মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন খুব নিকটে। ইতোমধ্যে কমিশন স্মার্ট কার্ডসহ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। ফেমবোসার এ ধরনের সম্মেলন দক্ষিণ এশিয়া দেশসমূহের মাঝে অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং পারস্পরিক জ্ঞান লাভে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসযোগ্যতা ও আস্থা আনয়নে ফেমবোসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা বলেন, সংবিধান অনুযায়ী অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই সম্মেলনের অভিজ্ঞতা আমাদের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে সহায়তা করবে। এদিকে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে কথা বলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) জোর করে চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না। এটা নিয়ে তাড়াহুড়ার কিছু নেই। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে এটি ব্যবহার করে সবার মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করার পর জাতীয় নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম ব্যবহার করা যেতে পারে। তিনি বলেন আমাদের সময় ইভিএম চালু করা হয়। পরে এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি। আমরা যেটা শুরু করেছিলাম তার ধারাবাহিকতা রাখা হলে এখন কোন অসুবিধা হতো না। এ সময় শামসুল হুদা আরও বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করার দায়িত্ব মূলত সরকারের।
×