ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারের পতন ঘটান ॥ ড. কামাল হোসেন

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 সরকারের পতন ঘটান ॥ ড. কামাল হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজনীতির এক মঞ্চে উঠে একসঙ্গে আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের ‘পতন ঘটাতে চান’ গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘ইভিএম বর্জন, জাতীয় নির্বাচন ও রাজনৈতিক জোট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানোর তাগিদ দেন তারা। এতে যুক্তফ্রন্ট নেতারাসহ মীর্জা ফখরুল, কামাল হোসেন ও বিএনপি পন্থী বুদ্ধিজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে ‘ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে’ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে ধ্বংস হতে দিতে পারি না। দেশ ও জাতির প্রয়োজনে ন্যূনতম কর্মসূচীর মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ হই। দেশকে বাঁচাতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলি।’ ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের আপোসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে রাখার জন্য জেলখানায় আদালত বসানো হয়েছে। সরকার আইনের লঙ্ঘন করেছে। স্বাধীন বাংলাদেশে এরকম কোন নজির নেই। তিনি বলেন, যেখানে আদালত করা হয়েছে, সেটি ছোট একটি রুম। অন্ধকার। হুইল চেয়ার নিয়ে এসেছেন। বেগম জিয়া বলেছেন, এখানে তিনি আর যাবেন না। খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নির্বাচনের আগে মুক্তির দাবি জানিয়ে ফখরুল বলেন, নির্বাচনের সময় জনগণের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। অনুষ্ঠানে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ গড়তে, স্বৈরাচার হঠাতে জনগণের ঐক্য হয়েছিল। আজও সেইরকম একটি বৃহত্তর ঐক্য হতে যাচ্ছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করুন। জনগণ দেশের মালিক। সংবিধানেও সে কথা বলা হয়েছে। তিনি বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রে আমরা বিশ্বাস করি। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চাই না। দেশের জনগণ ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে। অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতেই হবে। জনগণের দাবি উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। সামনে আমাদের অনেক বড় বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বৈরাচার সরকারের পতনের জন্য আমরা অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছিলাম। সমাজ থেকে অন্যায়কে মুক্ত করতে হবে। দলমত নির্বিশেষে সংবিধান ও মূল্যবোধের সপক্ষে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হই। আমরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। যারা আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে চায়, তাদের চিহ্নিত করবেন। বিকল্পধারার সভাপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, আজ দেশ সঙ্কটের মধ্যে আছে। দেশে এক ব্যক্তি, এক দলীয় শাসন চলছে। দেশের উন্নয়ন করছেন, ভাল কথা। আমরাও উন্নয়ন চাই। উন্নয়নের নামে গণতন্ত্রকে ধাক্কা দেবেন, তা হবে না। জনগণ আর সহ্য করবে না। গণতন্ত্রের নামে স্বৈরতন্ত্র চালাবেন, তা বাংলার মানুষ মেনে নেবে না। হাতুড়ি দিয়ে, বন্দুক দিয়ে জনগণের ওপর হামলা করবেন আর জনগণ সহ্য করবে, তা ভাববেন না। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ছড়াকার আখ্যায়িত করে বলেন, ছড়া লিখুন, বলুন অসুবিধা নেই। গণতন্ত্রকে ঠিক রাখুন, জনগণের দাবি মেনে নিন। বি চৌধুরী বলেন, মানুষকে শ্রদ্ধা করতে শিখুন। প্রতিহিংসা পরিহার করুন। আমরা রাজপথে আছি দেশে শ্রদ্ধার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে। প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। হাতুড়ির রাজনীতি জনগণ চায় না। জনগণ আগামী নির্বাচনে এর দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে। তিনি বলেন, এই সরকারের পতনের জন্য আমরা সারাদেশ সফর করব, জনগণের কাছে যাব।
×