ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আজ পাকিদের হারাতে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  আজ পাকিদের হারাতে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ

রুমেল খান ॥ এক লাফে মগডালে পৌঁছানো যায় না। এ জন্য প্রয়োজন ধাপে ধাপে এগোনো। মোট কথা সাফল্যের জন্য কোন সংক্ষিপ্ত রাস্তা নেই। এ জন্য করতে হবে কঠোর পরিশ্রম। সেই সঙ্গে পেতে হবে ভাগ্যদেবীর পরশও। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের প্রসঙ্গেই কথাগুলোর অবতারণা। চলমান সাফ সুজুকি কাপে (সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ) তাদের সাফল্যের পূর্বশর্ত হচ্ছে একে একে পাঁচটি ধাপ অতিক্রম করা। এই সাফল্যের জন্যই তারা হা-পিত্যেশ করে মরছে গত ১৫ বছর ধরে। সেই ২০০৩ সালে স্বাগতিক হিসেবে তারা জিতেছিল ‘দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ’ খ্যাত এই মর্যাদার আসরটি। দীর্ঘ সময় পর আবারও দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে সফল দল হওয়ার সুযোগ এসেছে লাল-সবুজদের জন্য। পাঁচ ধাপের প্রথমটি বেশ সফলভাবেই পেরিয়েছে তারা। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী দিনে ভুটানকে ২-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে স্বপ্নপূরণের পথে একধাপ এগিয়ে গেছে জামাল ভুঁইয়ারা। প্রথম ধাপের পর আজ বাংলাদেশকে পেরুতে হবে দ্বিতীয় ধাপ। সেই ধাপে আছে শক্তিশালী-সমীহ জাগানিয়া দল পাকিস্তান। আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সন্ধ্যা ৭টায় নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাতে পারলেই ‘এ’ গ্রুপ থেকে সেমিফাইনালে নাম লেখানোটা নিশ্চিত হয়ে যাবে ‘দ্য বেঙ্গল টাইগার্স’ দলের। ফলে এই ম্যাচ ঘিরে ফুটবলপ্রেমীদের আগ্রহের পারদটা অবস্থান করছে তুঙ্গে। ফলে আজ স্টেডিয়ামের গ্যালারি যে পরিপূর্ণ থাকবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। একই গ্রুপের আরেক ম্যাচে আজ বিকেল ৪টায় মুখোমুখি হবে নেপাল ও ভুটান। দু’টি দলই নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরেছে। যে কারণে এ আসরে টিকে থাকতে হলে এ ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই তাদের। ম্যাচটি যদি ড্র হয় তাহলে লাভবান হবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দু’দলই। তখন ‘এ’ গ্রুপ থেকে এই দুই দেশেরই সেমিফাইনাল খেলা প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাবে। সাত জাতির এই চ্যাম্পিয়নশিপে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ যে দু’টি দেশের চেয়ে এগিয়ে তার মধ্যে একটি পাকিস্তান। বর্তমানে র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৯৪ আর পাকিস্তানের ২০১। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে তিন বছর পর ফিরেই দুর্দান্ত জয় পেয়েছে পাকিরা। স্বাগতিকরা কঠিন প্রতিপক্ষ হলেও তাই জয়ের স্বপ্ন বুনছে সাদ্দাম হোসেনের দলও। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সবসময়ই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়ে থাকে দেশটির। পরিসংখ্যানে এটি পরিষ্কার। এ পর্যন্ত দু’দল ১৬ বার মুখোমুখি হয়েছে। এতে দু’দলই জিতেছে ৬টি করে ম্যাচ। বাকি ৪টি ম্যাচ ড্র হয়। যে কোন ফুটবলে দু’দেশের সর্বশেষ দেখায় জয় পাকিদেরই। ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর নেপালের কাঠমান্ডুতে প্রীতি ম্যাচে ১-২ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। পাকিদের বাংলাদেশ সবশেষ হারিয়েছে সাত বছর আগে। ২০১১ সালের ২৯ জুন এই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামেই বিশ্বকাপ বাছাই ফুটবলে লাল-সবুজের দেশ জিতেছিল ৩-০ গোলে। সফল হতে গেলে চাই সুষ্ঠু পরিকল্পনা, সদিচ্ছা, আত্মবিশ্বাস, কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা, ধাপে ধাপে অগ্রসর হওয়া এবং ভাগ্যের পরশ। সেই সফলতার সন্ধানই বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল করে আসছে গত ১৫ বছর ধরে। সেই ২০০৩ সালে স্বাগতিক হিসেবে তারা জিতেছিল ‘দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ’ খ্যাত সাফ সজুকি কাপের (সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ) শিরোপা। এবার আবারও তারা স্বাগতিকের ভূমিকায়। আগের চেয়ে এবারের দলটি বেশ সংগঠিত এবং সম্ভাবনাময়। ফলে তাদের নিয়েই এখন শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশের কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমী। নিজভূমে এ লক্ষ্যে শুরুটাও দুর্দান্ত হয়েছে লাল-সবুজের। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী দিনে ভুটানকে ২-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে স্বপ্নের পরিধি আরও বাড়িয়েছে ‘বেঙ্গল টাইগার্স’ দল। আজ বাংলাদেশ দ্বিতীয় গ্রুপ (‘এ’) ম্যাচে মোকাবেলা করবে পাকিস্তান দলকে। এই ম্যাচে পাকিস্তানকে হারালে সেমিফাইনাল খেলা নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। অবশ্য হারলেও সমস্যা নেই। কেননা তখন হাতে থাকবে আরেকটি ম্যাচ। সেই ম্যাচে তখন অবশ্যই জিততে হবে।
×