ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গাছের কান্না

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 গাছের কান্না

গাছ থেকে রক্ত বের হয়-এ কথা কোনদিন শোনা যায়নি। তবে দক্ষিণ-প্রশান্ত মহাসাগরীয় নিউ ক্যালেডোনিয়া দ্বীপে এক ধরনের উদ্ভিদের খোঁজ মিলেছে যেটি কাটলে অঝোরে কষ বের হয়। এই কষের রং অদ্ভুত। স্থানীয়রা এই ঘটনাকে গাছের কান্না বলে মনে করে। তারা জানায়, মানুষ কাঁদলে চোখ দিয়ে পানি ঝরে আর গাছ কাঁদলে রক্ত ঝরে। এ খবরের প্রকৃত বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিরূপণে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক মনে করছেন, সাধারণত নিকেল ও দস্তারমতো ভারি ধাতু উদ্ভিদে পুঞ্জীভূত অবস্থায় থাকে। কিন্তু নিউ ক্যালেডোনিয়া দ্বীপে পাইসাদ্রা এ্যাকুমিনাটা নামে একটি বিরল উদ্ভিদে হাইপারএ্যাকুমুলেটর্স নামে একটি বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। পাইসাদ্রা এ্যাকুমিনাটা উদ্ভিদের কান্ড, পাতা ও বীজে এই পদার্থ রয়েছে। এই পদার্থের উপস্থিতির কারণে এই গাছ পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করে। তবে বিজ্ঞানীরা এতদিন মনে করতেন নিকেলের উপস্থিতির কারণে উদ্ভিদ নিজেদের পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। পাইসাদ্রা এ্যাকুমিনাটা নামের এই গাছে ২৫ শতাংশের বেশি নিকেল রয়েছে। বিরল প্রজাতির এই গাছ ২০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। বিজ্ঞনীরা মনে করছেন, পাইসাদ্রা এ্যাকুমিনাটায় হাইপার এ্যাকুমুলেটর্স নামের ও বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতির কারণে এটি কাটলে এক ধরনের রঙিন কষ নির্গত হয় আর স্থানীয়রা যেটিকে গাছের কান্না বলে ধরে নেয়। কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও এই গবেষণা দলের প্রধান ডক্টর এ্যান্টনি ভ্যান ডার এন্ট জানান, পাইসাদ্রা এ্যাকুমিনাটা খুবই ধীরে ধীরে বাড়ে। এদের ফুল ও বীজ জন্মাতে কয়েক যুগ অপেক্ষা করতে হয়। তিনি বলেন, বনাঞ্চল উজাড় করে ফেলার কারণে এই উদ্ভিদগুলো এখন বিলুপ্তির পথে রয়েছে। সাধারণ এক্স-রে পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে এই গবেষণাটি করা হচ্ছে। কয়েক বিজ্ঞানী আশা করছেন, এসব উদ্ভিদের মাধ্যমে হয়ত কোন অঞ্চলের মাটি ও পরিবেশে মনুষ্যসৃষ্ট বিষাক্ত উপাদানগুলোকে সরিয়ে ফেলা সম্ভব হতে পারে। কারণ এই উদ্ভিদ পরিবেশের বিষাক্ত উপাদানগুলো শুষে নিতে সক্ষম। -সায়েন্স ডেইলি অবলম্বনে।
×