ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তিন বছর পর ফিরেই পাকিস্তানের রোমাঞ্চকর জয়

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

তিন বছর পর ফিরেই পাকিস্তানের রোমাঞ্চকর জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এখনকার ফুটবলে যা হয়, যে দলের বল পজেশন বেশি থাকে, সেই দলই হেরে যায়। মঙ্গলবার নেপাল ফুটবল দলেরও সেই দুরবস্থাই হলো। পুরো ম্যাচে ৬৫ শতাংশ বল পজেশন থাকলেও তারা শেষমেষ ম্যাচটা আর জিততে পারেনি। বরং মাত্র ৩৫ শতাংশ বল পজেশনে রেখেও রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ খেলে ম্যাচটা ২-১ গোলে জিতে দারুণভাবে শুভসূচনা করলো ‘পাক শাহিন’ খ্যাত পাকিস্তান। এই জয়ে সাফ সুজুকি কাপে (সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ) শেষ চারে খেলার পথে একধাপ এগিয়ে গেল তারা। এই জয় পাকিস্তানের জন্য নিঃসন্দেহে স্মরণীয়। কারণ ঘরোয়া সমস্যার কারণে তিন বছর এবং ফিফা কর্তৃক নিষিদ্ধ হবার কারণে এক বছর তারা যে কোন ধরনের ফুটবল থেকেই দূরে ছিল। তিন বছর পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরে এসেই এই জয় স্মরণীয় না হয়ে উপায় আছে? আর সে জন্যই বোধহয় খেলা শেষে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়ে যাবার পথে গ্যালারিতে উপস্থিত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শকের হাততালি-অভিনন্দন পেলেন পাকি ফুটবলার। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচের প্রথমার্ধে পাকিস্তানের বল নিয়ন্ত্রণের পরিমাণ শুনলে নির্ঘাত চোখ কপালে উঠে যাবে পাঠকদের, মাত্র ৯ শতাংশ। নিজেদের ডিফেন্স সুরক্ষিত রেখেই কাউন্টার এ্যাটাক স্টাইলে খেলার পদ্ধতি বেছে নেয় তারা এবং তাতেই করে বাজিমাত। এ নিয়ে ১৬ বার ‘দ্য গুর্খা’ খ্যাত নেপালের মুখোমুখি হলো পাকিস্তান। এ নিয়ে সপ্তম বারের মতো জিতলো তারা। পক্ষান্তরে নেপাল জিতেছে ৪ ম্যাচে। বাকি ৫ ম্যাচে ড্র হয়। গোলসংখ্যায় এতদিন সমতা থাকলেও এই ম্যাচে এগিয়ে গেল পাকিরাই (১৮-১৭)। ম্যাচের ৩ মিনিটে নেপালের অনন্ত তামাং বল নিয়ে বক্সে ঢুকে চিপ করলেও পাকি গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেননি। ২৩ মিনিটে বাঁপ্রান্ত থেকে বিমল গাত্রি মাগারের কৌণিক শট অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে। পরের মিনিটেই ডানপ্রান্ত থেকে দলীয় অধিনায়ক বিরাজ মহারজনের শট সরাসরি গিয়ে পড়ে পাকিস্তানের গোলরক্ষকের হাতে। ৩৪ মিনিটে বিরাজ মহারজন নিজেদের বক্সে ফাউল করেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ রিয়াজকে। পেনাল্টির বাঁশি বাজান জর্দানের রেফারি হাসান মাহমুদ আরাফাহ। পাকিস্তানের হাসান নাওয়িদ বশিরের গড়ানো শট জড়ায় জালে (১-০)। ৪০ মিনিটে নেপালের কর্নার থেকে বক্সে জটলায় বল পেয়ে দারুণ হেড নেন ডিফেন্ডার সুমন এরিয়াল। কিন্তু সেই হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে ডানপ্রান্ত থেকে বিমল গাত্রির ক্রস ছোট বক্সে পান নওয়াগ শ্রেষ্ঠ। কিন্তু পাকিস্তানী ডিফেন্ডারদের চাপের মুখে নিশ্চিত গোল থেকেই বঞ্চিত করেন দলকে। ৭৪ মিনিটে বক্সের প্রায় ত্রিশ গজ দূর থেকে ডান পায়ের উঁচু শট নেন পাকিস্তানের বদলি ফরোয়ার্ড সাদউল্লাহ। বল বারে লেগে ফেরত আসে। দুর্ভাগ্য পাকিস্তানের। গোল শোধে মরিয়া নেপাল ৮২ মিনিটে সফল হয়। সুজল শ্রেষ্ঠর কর্নার থেকে বল পেয়ে বদলি মিডফিল্ডার নিরঞ্জন খাদকা হেড নেন। বক্সে বল পান বিমল গাত্রি। পোস্টের খুব কাছ থেকে বাঁ পায়ের তীব্র শটে লক্ষ্যভেদ করেন বিমল (১-১)। পুরো ৯০ মিনিটে ম্যাচটি অমীমাংসিত থাকলেও ইনজুরি টাইমের শেষে নাটকীয় মোড় নেয়। সংযুক্তি সময়ে (৯০+৪) মিনিটে আদিলের ক্রস বক্সে পেয়ে হেড দিয়ে সতীর্থের উদ্দেশে পাঠান সাদউল্লাহ। বল পেয়ে হেডে নেপালের গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন মোহাম্মদ আলী। আর এই গোলের কিছুক্ষণ পরই শেষ বাঁশি বাজান রেফারি। পয়েন্ট খুইয়ে মাঠ ছাড়ে নেপাল। উল্লেখ্য, এবারের এশিয়ান গেমসেও নেপালকে গ্রুপপর্বে হারিয়েছিল পাকিস্তান। মজার ব্যাপারÑ এখানেও স্কোরলাইন ছিল একই ২-১!
×