ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়ে পোল্ট্রি শিল্পের সম্ভাবনা বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়ে পোল্ট্রি শিল্পের সম্ভাবনা বাড়ছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ অর্থনৈতিক উন্নয়নের পোল্ট্রি শিল্পের গুরুত্বারোপ করে দেশের সর্ব উত্তরের অনগ্রসর জেলা ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড়ে পোল্ট্রি শিল্প আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে। শুধু ডিম ও মুরগির মাংসের চাহিদা পূরণই নয় প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে এই শিল্প। সরকারের সহযোগিতা পেলে জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) অর্জনে পোল্ট্রি শিল্প এ অঞ্চলে আরও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। ঠাকুরগাঁও ইএসডিও চেতনা বিকাশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শনিবার দিনব্যাপী সাংবাদিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ‘পোল্ট্রি শিল্প বিষয়ে এক কর্মশালায় বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত উপস্থাপনের মাধ্যমে এ দাবি করা হয়েছে। কর্মশালায় ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলায় কর্মরত বিভিন্ন মিডিয়ার ৩০ জন সাংবাদিক অংশ নেন। ‘বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল’র (বিপিআইসিসি) সহযোগিতায় বেসরকারী সংস্থা ওয়াচডগ বাংলাদেশ আয়োজিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মোঃ আখতারুজ্জামান। এতে আরও বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শশী আহমেদ, ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি এবং বিপিআইসিসির সহ-সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ, ঢাকা থেকে আগত সাংবাদিক সোহরাব হাসান ও ফয়জুল সিদ্দিকী। বক্তারা ঢাকার বাইরে অনেক ক্ষেত্রেই সাংবাদিকদের কাছে পোল্ট্রি বিষয়ে তথ্যের অপ্রতুলতা রয়েছে উল্লেখ করে এসব তথ্য চাহিদা পূরণে পোল্ট্রি সংশ্লিষ্ট এসোসিয়েশনগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। বক্তারা বলেন, পোল্ট্রি যেহেতু একটি সায়েন্টিফিক এবং স্পর্শকাতর শিল্প তাই এ বিষয়ে রিপোর্ট করার আগে প্রয়োজনীয় তথ্য পরিপূর্ণভাবে জেনে নিয়ে সতর্ক থেকে প্রতিবেদন করার ওপর গুরুত্বারোপসহ সমাজের ও সাধারণ মানুষের প্রতি গণমাধ্যমের দায়বদ্ধতা রয়েছে তাই ভোক্তার স্বার্থ ক্ষুণœ হচ্ছে কি-না সে বিষয়ে সংবাদকর্মীদের খেয়াল রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেন। এ সময় ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি এবং বিপিআইসিসির সহ-সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ গ্রামের তৃণমূল খামারিদের যে কোন মূল্যে বাঁচিয়ে রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, নিরাপদ পোল্ট্রি উৎপাদনের লক্ষ্যে তৃণমূল খামারিদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। পোল্ট্রি ফিডের ব্যাগে পাটের ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও পোল্ট্রি ফিড মোড়কীকরণে পাটের ব্যাগের ব্যবহার হয় না কারণ এতে ফিড নষ্ট হয়ে যায়, মুরগির স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। শুধু প্যাকেজিংয়ের কারণেই প্রতি কেজি ফিডের খরচ দুই টাকা বাড়বে। তিনি বলেন, পৃথিবীর কোন দেশে পাটের ব্যাগের ব্যবহার নেই। ভারতে পাটের ব্যাগ ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু কিছু দিনের মধ্যে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। তিনি বলেন, এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে আশা করা যায় শীঘ্রই এ জটিলতার অবসান হবে। এন্টিবায়োটি প্রসঙ্গে বলেন- পোল্ট্রি ফিডে এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটারের ব্যবহার নিষিদ্ধ, তবে রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে তা ব্যবহারে কোন বাধা নেই। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর অপব্যবহারও হচ্ছে। তাই এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের নীতিমালা থাকা দরকার। পৃথিবীর পোল্ট্রি উৎপাদনকারী শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোতে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার আছে, সেগুলো পোল্ট্রিতে অনুমোদিত। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুর রহিম বলেন, অজ্ঞানতার কারণে ছোট খামারিরা হয়ত কোন কোন ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার করতে পারে তবে আধুনিক বাণিজ্যিক পোল্ট্রি খামারে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার হয় না কারণ এতে করে খরচ বাড়ে এবং উৎপাদন কমে যায়। কৃষি বিষয়ক প্রতিবেদক ফয়জুল সিদ্দিকী বলেন, প্রায় তিন বছর ধরে প্লাস্টিকের ডিমের অনুসন্ধানে লেগে থাকলেও এ পর্যন্ত তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। যে ডিমগুলো পাওয়া গেছে সেগুলো মূলত পরিবেশ, তাপমাত্রাসহ নানা কারণে নিম্নমানের ছিল বলেই সাধারণ মানুষের কাছে তা নকল ডিম বলে মনে হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শশী আহমেদ বাংলাদেশে নকল ডিমের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে বলেন, আধুনিক ফিড ইন্ডাস্ট্রিতে ট্যানারির বর্জ্য বা নিম্নমানের কাঁচামাল ব্যবহার হয় না।
×