ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির পড়াশোনা

প্রকাশিত: ০৮:২৬, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির পড়াশোনা

প্রভাষক, কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগ খুলনা পাবলিক কলেজ, খুলনা। ই-মেইল: [email protected] I‡qetww w.ahsanrajon.wordpress.com জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং সুপ্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে তোমাদেরকে স্বাগতম। আজ আমরা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। য় মজেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (Genetic Engineering) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (Genetic Engineering) হল বায়োইনফরমেটিক্স (Bio-Informatics) সংশ্লিষ্ট এমন এক প্রযুক্তি যার মাধ্যমে নতুন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টির জন্য কোন জীবের জিনের গঠন (Structure) অনুসন্ধান (Analysis), শনাক্তকরণ (Identification), পৃথকীকরণ (Segregation), সংযোজন (Insertion), সংশ্লেষন (ঝুহঃযবংরং) তথা ডিএনএ (উঘঅ) এর পরিবর্তন (গড়ফরভরপধঃরড়হ) সম্পর্কে আলোচনা করে। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা জবপড়সনরহধহঃ উঘঅ ঞবপযহড়ষড়মু এর গবেষণার অন্যতম মূল নিয়ামক হল কম্পিউটার যা উঘঅ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রক্রিয়া করে থাকে। সহজভাবে বলা চলে, যে বায়োইনফরমেটিক্স পদ্ধতির সাহায্যে মানুষের গঠনমূলক প্রয়োজনে জীবের জিনোম গঠনে (এবহড়সব ঝঃৎঁপঃঁৎব) নতুন এক বা একাধিক জিন যোগ করে অথবা এক বা একাধিক জিন অপসারণ করে নতুবা জিনের পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে মূল জীনোম গঠনকে নতুন অথবা উন্নততর বৈশিষ্ট্যের গঠন উপযোগী করে তোলা হয় সেই পদ্ধতিকে জিন প্রকৌশল বা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়। জিন পরিবর্তনের ফলে যে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জীব অথবা পূর্বতন জীবের নতুন প্রকারভেদ পাওয়া যায় তাকে এবহবঃরপধষষু গড়ফরভরবফ ঙৎমধহরংস (এগঙ) বলা হয়। নিউক্লিয়াসের মধ্যে জীবের বৈশিষ্ট্য বহনকারী উপাদান ক্রমোজোমের (ঈযৎড়সড়ংড়সব) ভিতরে চেইনের মত ল্যাচানো অংশগুলিকে ডিএনএ (উঘঅ: উবড়ীু-ৎরনড়-ঘঁপষবরপ-ধপরফ) বলে। এই ডিএনএ এর গঠণকারী একটি মৌলিক উপাদান হল জিন (এবহব)। য় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা জীন প্রযুক্তির ক্ষেত্রসমূহ জীন প্রকৌশল বা জীন প্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্রসমূহ তথা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যবহারসমূহের মধ্যে রয়েছে- য় জিন প্রযুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন এবং উল্লেখযোগ্য ব্যবহার হল উন্নতমানের খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন করা। কৃষিবিজ্ঞানের উন্নতি ঘটিয়ে জীনের পরিবর্তনের মাধ্যমে ট্রন্সজেনিক (ঞৎধহংমবহরপ) উদ্ভিদ উদ্ভাবনের প্রেক্ষিতে অধিক ফলনশীল খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্নতা আনয়ন করা এবং অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল-ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। স্বল্পকাল স্থায়ী মৌসুমী ফসলকে দীর্ঘস্থায়ী ফসলে রূপান্তরিত করা জীন প্রযুক্তির একটি সাফল্য। এছাড়াও, প্রতিকূল আবহাওয়া সহিষ্ণু এবং কম সেচ ও কীটনাশক প্রয়োজন ও কম-পচনশীল এমন ফসল উৎপাদন করে দরিদ্র দেশগুলিকে খাদ্য চাহিদা পূরণে বিশেষ সহায়তা প্রদান জীন প্রকৌশলের একটি বড় অবদান। জিনের পরিবর্তনের মাধ্যমে কৃত্রিম উৎপাদন ও কৃষিপণ্যের বহুমুখী ব্যবহারসহ রোগ প্রতিরোধে সক্ষম জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে কীটনাশকের প্রয়োগ হ্রাস করার মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা সম্ভব হচ্ছে। য় জীন প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষি ও শিল্পের মৌলিক উপাদানের উৎপাদন ব্যয় কমানোর কারনে পন্যের সহজলভ্যতা সৃষ্টি হচ্ছে যা অর্থনীতিকে সচল রাখছে। য় জীন প্রকৌশল এর যুগান্তকারী অবদান হল রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ (জবপড়সনরহধহঃ উঘঅ) তৈরি করা যেটির সাহায্যে প্রয়োজনমত এবং পরিমানমত বিশুদ্ধ মানব ইনসুলিন ও মানুষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন উৎপাদন নিয়ন্ত্রন সম্ভব। য় ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তি সনাক্তকরণ, অপরাধী চিহ্নিতকরণ, সন্তানের পিতৃত্ব-মাতৃত্ব নির্ধারণের জন্য জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সফল প্রয়োগ এখন বহুল প্রচলিত। য় জীনপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এবং অনুজীব থেকে মানুষের জীবনরক্ষাকারী বিভিন্ন ওষুধপত্র তৈরি হচ্ছে। য় মানুষের রোগ প্রতিকারের পাশাপাশি জীনের পরিবর্তনের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের পদ্ধতি উদ্ভাবন জিন প্রকৌশলের উল্লেখযোগ্য একটি অবদান। ক্যান্সার রোগীদের জন্য ওষুধ উদ্ভাবনেও জীন প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রয়েছে। য় প্রাণির বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রক হরমোনের জিন অন্য প্রাণিতে স্থানান্তরের মাধ্যমে অল্প সময়ে অধিক দৈহিক বৃদ্ধির প্রযুক্তি যথেষ্ট সাফল্য পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, স্যামন মাছের হরমোনাল জিন অন্যান্য দেশী মাছের জিনে কৌশলগত প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করে মাগুর, তেলাপিয়াসহ অনেক মাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা হচ্ছে। কিছু ব্যাকটেরিয়ার জিনের পরিবর্তন ঘটিয়ে দ্রুততম সময়ে বর্জ্য পরিষ্কারকরণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ থেকে উৎপন্ন দূষিত বিষাক্ত পদার্থ শোষণের মাধ্যমে পরিবেশ উন্নয়নেও জিন প্রকৌশলের ব্যবহার রয়েছে। বিকল্প শক্তির উৎস অনুসন্ধানেও জিন প্রকৌশল সফলভাবে কাজ করছে। য় অনেক ক্ষেত্রে আকরিক থেকে বিভিন্ন ধাতু (যেমন সোনা, ইউরেনিয়াম, তামা) আহরনে এবং বিভিন্ন ধাতু-অধাতু মুক্তকরণের কাজে প্রভাবক হিসাবে জিন প্রকৌশলের ব্যবহার রয়েছে।
×