ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মেসি-সুয়ারেজের জোড়া গোলে খেইল দেখাল বার্সিলোনা

প্রকাশিত: ০৮:০৬, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মেসি-সুয়ারেজের জোড়া গোলে খেইল দেখাল বার্সিলোনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্প্যানিশ লা লিগার নবাগত দল হুয়েস্কা। ২০১৮-১৯ মৌসুমের শুরুটা বেশ ভালভাবেই করে তারা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে এইবারকে হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে এ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের সঙ্গে ড্র করে। রবিবার বার্সিলোনার বিপক্ষেও দুর্দান্ত শুরু করে। কিন্তু শেষটা ছিল চরম লজ্জার। ন্যুক্যাম্পে বার্সিলোনার কাছে ৮-২ গোলে লজ্জাজনকভাবে হার মানে। ম্যাচের বয়স তখন মাত্র তিন মিনিট। ন্যুক্যাম্পের হাজারো দর্শকদের মুহূর্তের মাঝেই চমকে দেন চুচো হার্নান্দেজ। তার গোলেই যে এগিয়ে যায় লীগের নবীন দল হুয়েস্কা। কিন্তু শুরুর এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে বেশি সময় নেয়নি বার্সিলোনা। একে একে মোট আটবার লা লিগার নবাগত দলটির জালে বল জড়ায় আর্নেস্তো ভালভার্দের শিষ্যরা। শুরুতে ধাক্কা খেলেও শেষ পর্যন্ত এমন গোলোৎসব সম্ভব হয়েছে লিওনেল মেসির জাদুকরী পারফর্মেন্সের কারণেই। নিজেদের মাঠে এদিন জোড়া গোল করেন অধিনায়ক মেসি। ছিল হ্যাটট্রিকের সুযোগও। তবে নিজে পেনাল্টি না নিয়ে বল তুলে দেন লুইস সুয়ারেজের হাতে। শেষ পর্যন্ত উরুগুইয়ান স্ট্রাইকারও করেন দুই গোল। এছাড়া একটি করে গোল করেন উসমান দেম্বেলে, ইভান রাকিটিচ এবং জর্ডি আলবা। ম্যাচ শুরুর তৃতীয় মিনিটে গোল হজম করতেই যেন ক্ষেপে ওঠে বার্সিলোনা। পাল্টা আক্রমণে মরিয়া হয়ে ওঠে লা লিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। আর তাতে নেতৃত্ব দেন মেসি নিজেই। ম্যাচের ১৬ মিনিটে মেসির গোলেই সমতায় ফেরে কাতালানরা। তার ৮ মিনিট পর নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে দেয় হুয়েস্কার হোর্হে পুলিদো। প্রথমার্ধের ৩৯ মিনিটে ব্যবধান ৩-১ করেন লুইস সুয়ারেজ। তার তিন মিনিট পরই অবশ্য ব্যবধান কমিয়ে আনেন হুয়েস্কার এ্যালেক্স গ্যালার। দ্বিতীয়ার্ধে লা লিগার নবাগত দলটিকে আরও চেপে ধরে বার্সা। বলা যায় এই অর্ধে হুয়েস্কাকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করে স্বাগতিকরা। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে উসমান দেম্বেলের গোলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৪-২। চার মিনিট পর দলের হয়ে পঞ্চম গোল করেন বিশ্বকাপের ফাইনাল মাতানো ইভান রাকিটিচ। ৬১ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় ও দলের হয়ে ষষ্ঠ গোলটি করেন মেসি। ৮১ মিনিটে আবারও হুয়েস্কার জালে বল জড়ায় বার্সা। এবার গোলদাতা ডিফেন্ডার জর্ডি আলবা। তবে স্বাগতিকদের গোলোৎসব তখনও বাকি। ইনজুরি সময়ে যে পেনাল্টি পায় বার্সিলোনা। ম্যাচের বয়স যখন ৯২, তখন একাই বল নিয়ে হুয়েস্কার ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন সুয়ারেজ। তাকে আটকাতে উয়েস্কার গোলরক্ষক ফাউল করে বসেন। পেনাল্টির বাঁশি বাজাতে একটুও দেরি করেননি রেফারি। মেসির হ্যাটট্রিক করার সুযোগ থাকলেও পেনাল্টি দিয়ে দেন সুয়ারেজকে। নিজের দ্বিতীয় ও দলের অষ্টম গোলটি করতে ভুল করেননি সুয়ারেজও। হুয়েস্কার বিপক্ষে মেসি নিজে দুই গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আরও দুই গোল। আর তাতেই নিজেকে নিয়ে যান ইতিহাসের সোনালি পাতায়। একবিংশ শতাব্দীর ইতিহাসে প্রথম ফুটবলার হিসেবে ১৫০ গোলে এ্যাসিস্ট করার মাইলফলক স্পর্শ করেন এলএম টেন। নিজে গোল করায় সিদ্ধহস্ত বার্সিলোনার এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। তার এই পরিসংখ্যানটা প্রমাণ করে যে, সতীর্থদের দিয়ে গোল করাতেও তার তুলনা নেই। ইউরোপের শীর্ষ লীগগুলোতে সর্বোচ্চ এ্যাসিস্ট করার তালিকায় লিওনেল মেসির পরে রয়েছেন সেস ফ্যাব্রিগাস। তার এ্যাসিস্ট ১৪৩। ফ্যাব্রিগাসের পর ১২৮ গোলে এ্যাসিস্ট করে তিনে রয়েছেন আর্সেনালের জার্মান মিডফিল্ডার মেসুত ওজিল। মেসির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো রয়েছেন চারে। ১২২ গোলে এ্যাসিস্ট করেছেন সি আর সেভেন। ১১০ গোলে এ্যাসিস্ট করে এই তালিকার পাঁচে অবস্থান করছেন পিএসজির ব্রাজিলিয়ান তারকা দানি আলভেজ। লিওনেল মেসি তার সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি ২৩ গোল করিয়েছেন লুইস সুয়ারেজকে দিয়ে। ১৪ গোল করিয়েছেন পেদ্রো রদ্রিগুয়েজকে দিয়ে। আর স্যামুয়েল ইতোকে দিয়ে করিয়েছেন ১৩ গোল। সাবেক ক্লাব সতীর্থ নেইমারকে দিয়ে করিয়েছেন ১২ গোল। ডেভিড ভিয়াকে দিয়ে ১০ গোল করিয়েছেন এলএম টেন।
×