ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মেধাকে দক্ষতায় পরিণত করতে চান ম্যাকেঞ্জি

প্রকাশিত: ০৮:০৬, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মেধাকে দক্ষতায় পরিণত করতে চান ম্যাকেঞ্জি

মোঃ মামুন রশীদ ॥ কোচ স্টিভ রোডসের কাজের ধরন কিছুটা ভিন্ন রকমের। প্রতিবার কোন টুর্নামেন্টের আগে ঘোষিত দলের দুয়েকটি অনুশীলন ম্যাচ থাকে। নিজেদের মধ্যেই ভাগাভাগি করে সেই ম্যাচগুলো খেলা হয়। কিন্তু এবার ম্যাচ পরিস্থিতির অনুশীলন। সেটি প্রথমবারের মতো সোমবার বিকেলে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে হয়েছে। নির্দিষ্ট একটি রানের লক্ষ্য বেঁধে দিয়ে ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং করানো হয়েছে এবং বোলাররা বোলিং করেছেন সাধ্যমতো। এতে করে ফিল্ডাররাও সুযোগ পেয়েছেন নিজেদের দক্ষতা বাড়ানোর। পুরো সময়টাতেই ব্যাটিং কোচ দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ব্যাটসম্যান নেইল ম্যাকেঞ্জি মনোযোগ দিয়ে দেখেছেন। বাংলাদেশের ব্যাটিং মেধায় বেশ মুগ্ধও হয়েছেন। বিশেষ শক্তি হিসেবে ব্যাট চালানোর গতি এবং কব্জির ব্যবহারে সন্তুষ্ট হয়েছেন। এখন এই মেধাকে কাজে লাগিয়ে তিনি ব্যাটসম্যানদের বেশি রান করার দক্ষতায় পরিণত করতে চান। সেজন্য কৌশলগত কিছু কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে নিজের কাজ এগিয়ে নিতে চান তিনি। সোমবার প্রথম দফা অনুশীলনের পর এমনটাই জানালেন ম্যাকেঞ্জি। অনেক সময়ই স্লগ ওভারের ব্যাটিং নিয়ে ভুগতে হয় বাংলাদেশ দলকে। অথচ এই দলে তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও লিটন কুমার দাসের মতো হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান আছেন। স্লগ ওভারে তবে কি ধরনের সমস্যা বাংলাদেশ দলে? এ বিষয়ে ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘আমি সবাইকে গড়ে ওঠার জন্য যথেষ্ট সময় দিতে চাই। তেমন কোন সমস্যা দেখতে পাচ্ছি না এখানে। আমার মনে হয় টি২০ গুলোতে দাস (লিটন কুমার) বেশ ভাল ইনিংস খেলেছে। তামিম অনেক রান পেয়েছে। আমি মনে করি অন্তত একজন তরুণ খেলোয়াড় এগিয়ে এসে দেখাবে তারা কি করতে পারে। আমাদের গেম প্ল্যান নিয়ে কথা বলতে হবে, কমিটমেন্ট ও বিভিন্ন বিষয়ে মানসিক দিক নিয়ে আলোচনা করতে হবে। ভাল কিছু বের করে আনার ব্যাপারে আমি ইতিবাচক।’ ম্যাকেঞ্জি মনে করেন শুধু ছক্কা হাঁকানোর দিকে মনোযোগী হলে বিপদ ঘটতে পারে আবার ভাল কিছুও হতে পারে। বিগ হিটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররা বেশ সিদ্ধহস্ত হলেও তাদের সঙ্গে নিজেদের না মিলিয়ে এক্ষেত্রে কৌশলগত পন্থায় এগিয়ে যেতে আগ্রহী ম্যাকেঞ্জি। তিনি বলেন, ‘কৌশলগতভাবে যে কেউ ভাল অবস্থানে থাকতে পারে। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা যেভাবে বলকে আঘাত করে আমরা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে যাচ্ছি না আপাতত। কিন্তু আমরা খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক অবস্থানে যেতে পারি ভালভাবে বল হিট করার দক্ষতা অর্জন করে। বেশ কয়েকজন বিগ হিটার আছে এই দলে। সিপিএলে মাত্রই রিয়াদ ১১ বলে ২৮ রান করেছে। কৌশলগতভাবে যে কেউ ভাল হিটার হতে পারে এবং বড় হিট করার মতো ভাল অবস্থানে যাওয়ার প্রবৃত্তি দেখাতে পারে। আপনি যদি প্রতি ওভারে ৬ রান নিতে মনোযোগী হন, আমি হব এক, দুইয়ের জন্য এবং ফাঁকা স্থান বের করতে। আমার মনোযোগ কাভার ও মিডউইকেটের ওপর দিয়ে খেলা। আমি সরাসরি বোলারের মাথার ওপর দিয়ে হিট করে বাউন্ডারি চাই। আমি যদি ওভারে ১২ রান চাই, সেক্ষেত্রে আমাকে আরও কিছুটা চড়াও হয়ে হিট করতে হবে এবং বড় শট খেলতে হবে।’ প্রথম দিনের অনুশীলনে এসব নিয়েই কাজ করা হয়েছে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে। ম্যাকেঞ্জি জানিয়েছেন অনেক সময়ই তো সবাই অনুশীলন করে চিরাচরিতভাবে এবং সেখানে তেমন কিছুই থাকে না। বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে আউট হলেও কিছু ঘটে না। তাই কোচ স্টিভ রোডস তাদের একটা চাপে ফেলেছেন। এটা বোলারদের জন্য খুবই ভাল অনুশীলন। ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘বাংলাদেশ খুবই ভাল একটি দল। আমাদের শক্তিমত্তা ব্যবহার করতে হবে। যেমনÑ ব্যাটের ভাল গতি এবং দারুণ কব্জির ব্যবহার। আমার মনে হয় না ছেলেদের এসব ভূমিকা পালনের সুযোগ দেয়া হয় গেম প্ল্যানের কারণে। তুলনায় যাওয়া বেশ কঠিন, হয়তো আমাকে ৬/৭ মাস পর আমাকে জিজ্ঞেস করুন, ততদিনে আমি ছেলেদের বুঝতে পারব। আমার মনে হয় বিটুইন দ্য উইকেটে আমরা বেশ দ্রুত এবং আমাদের খুব ভাল কব্জির ব্যবহার আছে। আমার মনে হয় ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দলে আমি মূল্যবান কিছু ভূমিকা রাখতে পারব। দক্ষতাপূর্ণ শট খেলার মাধ্যমে মেধা দেখানোই আসল। মিস, মিস, ছক্কা, ছক্কা- আমি ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের এই ধরনটা বদলাতে চাই। আমি বাংলাদেশের ছেলেদের দেখতে চাই তারা চার, চার এবং চার হাঁকাচ্ছে। আমি বড় বড় ছক্কা হাঁকানোর দিকে খুব বেশি মনোযোগী নই যেটাতে অনেককিছু ঘটতে পারে। আমরা ওভারে ১২ নিতে পারি খুব ভাল তিনটি শটের মাধ্যমে এবং আরেকটি মেধা কাজে লাগিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় বল ঠেলে দিয়ে।’
×