ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ডিসেম্বরে পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ডিসেম্বরে পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগামী ডিসেম্বরেই পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স এ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তবে নিম্নতম মজুরি কত হচ্ছে- এখনও তা নির্ধারণ করতে পারেনি সরকার গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ড। মজুরি নির্ধারণে বোর্ডের কাছে দেয়া প্রস্তাব থেকে কিছুটা ছাড় দিয়ে মালিক ও শ্রমিক উভয় পক্ষকে ভারসাম্যে আসার আহ্বান জানিয়েছেন নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান সিনিয়র জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম। তবে তিনি জানিয়েছেন, মজুরি নির্ধারণে আগামী ১৭ অক্টোবর বোর্ড থেকে সরকারের কাছে চূড়ান্ত প্রস্তাব পাঠানো হবে। পরে তা উঠবে শ্রম মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ে। আর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর বোর্ডের পঞ্চম সভা অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার রাজধানীর তোপখানা রোডে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নূন্যতম মজুরি বোর্ডের চতুর্থ বৈঠকে সংশ্লিষ্টরা এসব তথ্য জানিয়েছেন। বৈঠকে চার সদস্য বিশিষ্ট স্থায়ী নিম্নতম মজুরি বোর্ডেও চেয়ারম্যান সিনিয়র জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, মালিক পক্ষের প্রতিনিধি কাজী সাইফুদ্দীন আহমদ, শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি ফজলুল হক মন্টু ও নিরপেক্ষ প্রতিনিধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অস্থায়ী প্রতিনিধিদের মধ্যে বিজিএমইএ সভাপতি মোঃ সিদ্দিকুর রহমান ও শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি জাতীয় শ্রমিক লীগের নারীবিষয়ক সম্পাদিকা বেগম শামসুন্নাহার ভূঁইয়া। এর আগে, ১৬ জুলাই তৃতীয় বৈঠকে মালিক ও শ্রমিক পক্ষ তাদের প্রস্তাবনা জমা দেয়। ওই বৈঠকে শ্রমিক পক্ষ সর্বনিম্ন মজুরি ১২ হাজার ২০ টাকা করার দাবি করে। বিদ্যমান মজুরি ১২৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় তারা। তবে মালিক পক্ষ ৬ হাজার ৩৬০ টাকার প্রস্তাব দেয়। মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বিভিন্ন গ্রেডে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ মজুরি বাড়াতে চাওয়ার কথা জানান। তবে উভয় পক্ষের তাৎক্ষণিকভাবে নাকচ করে দেয় গার্মেন্টস শ্রমিকদের কয়েকটি সংগঠন। সেই সংগঠনগুলো নূন্যতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা করার দাবিতে অটল রয়েছে। পঞ্চম বৈঠকের দিন সোমবারও নি¤œতম মজুরি বোর্ডের নিচে বিক্ষোভ দেখিয়েছে সংগঠনগুলো। অধিকাংশ সংগঠন ১৬ হাজার টাকার দাবি জানিয়ে আসলেও এখনও কয়েকটি সংগঠন ১৮ হাজার টাকার দাবিতে অটল রয়েছে। মজুরি বোর্ডের বৈঠক চলার সময়ে নিম্নতম মজুরি বোর্ড কার্যালয়ে নিচে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র ও গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ বিক্ষোভ করেছে, যেখানে পূর্ববতী বৈঠকের দিনগুলোর চেয়ে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল বেশি। মজুরি বোর্ডের বৈঠক শেষে এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান সিনিয়র জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বৈঠকে মালিক ও শ্রমিক উভয় পক্ষকে আমরা অনুরোধ করেছি একটু বিবেচনা করে দেখার জন্যÑতাদের প্রস্তাব থেকে কিছুটা ছাড় দেয়া যায় কি-না। এবং একটু কাছাকাছি আসা যায় কি-না। এই বিষয়ে আমরা উভয় পক্ষের কাছে প্রস্তাব রেখেছি। উভয় পক্ষই এ বিষয়ে আমাদের আশ^স্ত করেছেন। মালিক ও শ্রমিক পক্ষ উভয়ই তাদের সংগঠনগুলোর সঙ্গে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন।’ এ সময় বোর্ড চেয়ারম্যান জানান, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর বোর্ডের পঞ্চম সভা অনুষ্ঠিত হবে। সে সময়ের মধ্যে উভয় পক্ষ একটি কাছাকাছি অবস্থানে আসতে পারবে বলে তার প্রত্যাশা। আর মজুরি নির্ধারণে আগামী ১৭ অক্টোবর বোর্ড থেকে সরকারের কাছে চূড়ান্ত প্রস্তাব পাঠানো হবে। পরে তা দেখবে শ্রম মন্ত্রণালয়। বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আলোচনা করে আমরা কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনি বিধায়, আবার আরেকটি মিটিং দেয়া হয়েছে। সেই মিটিংয়েই যে হয়ে যাবে সেটাও আমরা বলতে পারছি না। আমরা চেষ্টা করছি সবাই মিলে এমন একটা জায়গায় আসা যায় যাতে শিল্পের সক্ষমতা এবং শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা রক্ষা পায়। সেই চেষ্টাটাই আমরা করে যাচ্ছি। আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলেই ফাইনাল এমাউন্ট (নতুন মজুরি) আমরা আপনাদের জানাতে পারব। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, ‘পূর্বের নিয়ম অনুযায়ীই নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন হবে। আর নতুন মজুরি কাঠামো ডিসেম্বরেই বাস্তবায়ন হবে।
×