ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কামাল হোসেনের শর্ত মানলে বিএনপির অস্তিত্বই থাকে না

সরকারের প্রতি বিএনপির একেক সময় একেক শর্তনামা

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 সরকারের প্রতি বিএনপির একেক সময় একেক শর্তনামা

শরীফুল ইসলাম ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেতে বিএনপি একেক সময় একেক রকম শর্ত দিচ্ছে। আসলে তাদের ক’টি শর্ত এ বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে বলছে না। তাই তাদের শর্ত নিয়ে জনমনে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। এদিকে যুক্তফ্রন্ট ও কিছু বাম দলকে নিয়ে বিএনপি যে সরকার বিরোধী বৃহত্তর ঐক্য করতে চাচ্ছে তাদের মধ্য থেকে কোন কোন দল ঐক্যের জন্য যে শর্ত দিচ্ছে তা পূরণ করতে গেলে বিএনপির অস্তিত্বই থাকে না। এ পরিস্থিতিতে বিএনপিসহ এসব রাজনৈতিক দল সংবিধান অনুসারে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনে যেতে চায় নাকি রাজনীতির মাঠ ঘোলা করে নির্বাচন ঠেকানোই মূল লক্ষ্য এ নিয়ে জনমনে নানামুখী প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে যুক্তফ্রন্টের এক শীর্ষ নেতা যখন বলেন, নির্বাচন নাও হতে পারে তখন বিএনপি ও তাদের মিত্রদের নিয়ে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কারাবন্দী হওয়ার আগে নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে ৬টি শর্ত দিয়ে গেছেন। তিনি কারাগারে যাওয়ার পর দলের মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী দলের নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ৪টি শর্ত দিয়েছেন। আর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কখনও ৪টি, কখনও ৬টি আবার কখনও ৭টি শর্ত দিয়েছেন। সর্বশেষ ১ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে তিনি ৫টি শর্তের কথা উল্লেখ করেছেন। সূত্র মতে, দলের চরম দুরবস্থায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শুধু বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট আওয়ামী লীগকে মোকাবেলা করতে পারবে না ভেবে কারাবন্দী হওয়ার আগেই খালেদা জিয়া সরকারবিরোধী বৃহত্তর ঐক্যের আহ্বান জানান। ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের সাজা মাথায় নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ক’জন সিনিয়র নেতা যুক্তফ্রন্টভুক্ত ৫ দল ও ক’টি বাম দলসহ আরও কিছু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৃহত্তর ঐক্য নিয়ে মতবিনিময় করেন। কিন্তু ঐক্য প্রক্রিয়া কিছুটা অগ্রসর হলেও এক পর্যায়ে বিভিন্ন শর্ত মানা না মানা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। অভিজ্ঞ মহলের মতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেতে বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল একেক সময় একেক রকম কথা বলার পেছনে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মহলের ইঙ্গিত থাকতে পারে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সংবিধান অনুসারে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন ঠেকানোই তাদের মূল লক্ষ্য। বিশেষ করে যুক্তফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন নির্বাচন নাও হতে পারে বলে যে মন্তব্য করেছেন তাতে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। তারা ওয়ান-ইলেভেনের মতো আবারও একটি জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে কোন তৎপরতায় লিপ্ত কি না বিভিন্ন মহল থেকে এমন আশঙ্কাও করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার ৪ দিন আগে রাজধানীর র‌্যাডিসন হোটেলে দলের নির্বাহী কমিটির বৈঠক করেন। ৮ ফেব্রুয়ারির মামলার রায়ে সাজা হবে এমন আশঙ্কা থেকে খালেদা জিয়া জেলে থাকলে সংবিধান অনুসারে নির্ধারিত সময়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করবে বিএনপি এমন একটি সম্ভাবনা থেকেই নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে ৬টি শর্ত দেন তিনি। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে খালেদা জিয়ার দেয়া ৬ শর্তের একটি হচ্ছে ‘সংসদ ভেঙ্গে নির্বাচন’, যেটি করতে হলে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। আর সংবিধান পরিবর্তন করতে হলে জাতীয় সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন লাখবে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচনের আগে সংবিধান পরিবর্তন হবে না এবং বর্তমান সংবিধান অনুসারেই নির্বাচন হবে। আর বিএনপিও ভাল করে জানে আওয়ামী লীগ সংবিধান ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে না। তাই খালেদা জিয়ার ৬টি শর্তের মধ্যে এই একটি শর্ত পর্যালোচনা করলেই দলটির উদ্দেশ্য বোঝা যায়। খালেদা জিয়ার দেয়া আরেকটি শর্ত হচ্ছে ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন’। কিন্তু যেহেতু ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নির্বাচনের আগে সংবিধান সংশোধনের বিপক্ষে সেহেতু নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের কোন সুযোগ থাকছে না। আর আওয়ামী লীগের সব পর্যায় থেকে ইতোমধ্যেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে নির্বাচনকালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ছোট পরিসরে একটি সরকার থাকবে। তাই খালেদা জিয়ার এ শর্তটিও পূরণ করার সুযোগ নেই। খালেদা জিয়ার দেয়া তৃতীয় শর্ত হচ্ছেÑ ‘নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ করতে হবে’। তবে দলীয় সরকারের নিয়োগ করা নির্বাচন কমিশনকে পুরোপুরি নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে কাজ করা সত্যিই কঠিন। আর নিরপেক্ষ থাকলেও বিরোধী দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। কুমিল্লা ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হওয়ার পরও নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে অভিযোগ করেছে রাজনৈতিক কারণে। তাই নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ থাকার বিষয়ে দেয়া শর্তটিও বুঝেশুনেই দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার দেয়া চতুর্থ শর্তটি হচ্ছে ‘জনগণকে ভোটকেন্দ্রে আসার মতো পরিবেশ তৈরি করা’। এটিও নির্দলীয় সরকার ছাড়া অনেক ক্ষেত্রেই অসম্ভব। আর অতীতে দেখা গেছে সবাইকে নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে আসার সুযোগ দেয়ার পরও যে দল যখন হেরে গেছে সে দল তখন ভোট কারচুপির অভিযোগ করেছে। খালেদা জিয়ার দেয়া ৫ম শর্ত হচ্ছে ভোটের জন্য ইভিএম বা ডিভিএম ব্যবহার না করা। খালেদা জিয়ার দেয়া ৬ষ্ঠ শর্তটি হচ্ছে- ভোটের সময় মোবাইল ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এমন ব্যবস্থা রাখার সম্ভাবনার কথা এখন পর্যন্ত বলা হয়নি। খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পর সর্বপ্রথম ১৮ মার্চ দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী চার শর্ত পূরণ হলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে বলে জানান। শর্তগুলো হচ্ছে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির নির্বাচনে অংশ গ্রহণ, নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে এবং নির্দলীয় সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা। ২০ জুলাই বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামেনে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচনে যেতে ৪টি শর্ত প্রদান করেন। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হলে এক নম্বর শর্ত খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, নির্বাচন কমিমশন পুনর্গঠন করতে হবে এবং নির্বাচনকালে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। ২৮ আগস্ট নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যৌথসভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল নির্বাচনে যেতে ৬টি শর্ত উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে যেতে প্রথম শর্ত খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, তারপর নির্বাচনী পবেশ তৈকরতে হবে, সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে,র্ াচনকানিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে এবং নির্বাচনকালে সেনাবা মোতায়েন করতে হবে। একদিন পর ২৯ আগস্ট বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেতে ৭টি শর্ত দেন। শর্তগুলো হচ্ছে- খালেদা জিয়ার মুক্তি, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি, নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে পুনর্গঠন করা, সংসদ ভেঙ্গে দেয়া, সব দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েন। সর্বশেষ ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে ৫টি শর্ত পূরণের দাবি জানান। এগুলো হচ্ছেÑ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে এবং নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। এর আগে ক’দফা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে বিএনপি তাদের দাবিদাওয়া জানিয়েছে। এ সময় ১৩টি শর্ত তুলে ধরা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে তফসিল ঘোষণার আগেই স্বাভাবিক নিয়মে রাজনৈতিক কর্মকা-ের সুযোগ প্রদান করা, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা, ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ না করা, নির্বাচনকালে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা, নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থেকে দায়িত্ব পালন করা, নিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ অর্থাৎ অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেভাবে হয়েছে সেভাবে সীমানা নির্ধারণ করা, সবার জন্য সমান সুযোগ অর্থাৎ লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রাখা, নির্বাচনের অন্তত এক মাস আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের সকল স্তরে রদবদল করা, প্রিসাইডিং অফিসারসহ ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনরত সকল কর্মকর্তাকে নির্ভয়ে দায়িত্ব পালনের নিশ্চয়তা প্রদান, ভোট কেন্দ্রে সকল প্রার্থীর এজেন্টের উপস্থিতি নিশ্চিত করা ও দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষকদের জন্য ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের অবাধ সুযোগ রাখা। এদিকে বিএনপি যখন সরকার বিরোধী বৃহত্তর ঐক্য গঠনের বিষয়ে তোড়জোড় শুরু করে তখন যুক্তফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন জানান, বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে সরকারবিরোধী বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে আপত্তি নেই। তবে এ ঐক্য প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে তিনটি শর্ত জুড়ে দেন ড. কামাল। এ শর্তগুলো হচ্ছে, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপিকে সম্পর্ক ত্যাগ করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী থাকলে তিনি সেই জোটে থাকবেন না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। দ্বিতীয় শর্ত হচ্ছে, জোটগতভাবে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি করা যাবে না। বিএনপি নিজেদের মতো করে তাদের দলের প্রধানের মুক্তির দাবিতে সোচ্চার থাকতে পারে, প্রয়োজনে আইনী লড়াইও অব্যাহত রাখতে পারে। বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করার বিষয়ে ড. কামালের তৃতীয় শর্ত হচ্ছে জোটগতভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া যাবে না। তবে বিএনপি চাইলে দলগতভাবে তারেক রহমানের প্রসঙ্গটি সামনে আনতে পারে। ড. কামালের ৩ শর্তের সঙ্গে যুক্তফ্রন্টভুক্ত অন্যদলগুলোও একমত পোষণ করেছে বলে জানা গেছে। এ কারণে বিএনপির সঙ্গে বিভিন্ন দলের বৃহত্তর ঐক্যের বিষয়ে অনিশ্চয়তা দিয়েছে। কারণ এ শর্তগুলো মানলে বিএনপির অস্তিত্বই থাকে না। সে ক্ষেত্রে নেতৃত্ব চলে যাবে ড. কামাল হোসেন ও অধ্যাপক বি চৌধুরীর কাছে। তাই বিএনপির একটি অংশ এখন বৃহত্তর ঐক্যের বিষয়টিকে ভাল চোখে দেখছে না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দলের পক্ষ থেকে আমরা যে দাবিদাওয়া দিয়েছে তা পূরণ না করলে নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব হবে কি না তা আমরা ভেবে দেখব। ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন আর হতে দেয়া হবে না। তাই আমরা আশা করব সরকার ও নির্বাচন কমিশন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা করণীয় তা করবেন। আর তফসিলের আগে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে আন্দোলনে এমন পরিস্থিতি সুষ্টি করা হবে যাতে সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা জানান, সুনির্দিষ্ট সংখ্যক শর্ত না থাকলেও এখন পর্যন্ত দলের পক্ষ থেকে যে শর্তগুলো দেয়া হয়েছে তার সবই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন। তবে এ শর্তগুলো দেয়া হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে। যেভাবেই হোক বিএনপি চায় সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা। তা না করে সরকার একতরফা নির্বাচনের ব্যবস্থা করলে ২০০৬ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ যেভাবে আন্দোলন শুরু করে বিএনপিও এবার সে ধরনের আন্দোলন করতে পারে।
×