ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্যবসায়িক পরিকল্পনা পরিবর্তন করেছে আইপিডিসি

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  ব্যবসায়িক পরিকল্পনা পরিবর্তন  করেছে আইপিডিসি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক খাতের কোম্পানি আইপিডিসি ফিন্যান্স লিমিটেড অনুমোদিত মূলধন ৪০০ কোটি টাকা থেকে ২ হাজার কোটি টাকায় বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কোম্পানিটির এ পরিকল্পনা বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) শেয়ারহোল্ডাররা অনুমোদনও দিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা ৮০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর অনুমোদন দেয়ায় অনুমোদিত মূলধন বৃদ্ধির পরিকল্পনায় আবারও পরিবর্তন আনতে ইজিএম আহ্বান করেছে প্রতিষ্ঠানটি। উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে আইপিডিসি শেয়ারহোল্ডারদের জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশে অনুমোদিত মূলধন ২ হাজার কোটি টাকা না করে ৮০০ কোটি টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পর্ষদ। এজন্য সংঘস্মারক ও সংঘবিধির ৫নং ধারা সংশোধন করতে হবে। অনুমোদিত মূলধন হ্রাস এবং সংঘস্মারক ও সংঘবিধির ধারা সংশোধনের প্রস্তাবে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিতে ১৯ সেপ্টেম্বর ইজিএম আহ্বান করা হয়েছে। এ বিষয়ে রেকর্ড ডেট ছিল ২৭ আগস্ট। তবে এজিএমের স্থান ও সময় এখনও জানানো হয়নি। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ব্যবসা সম্প্রসারণ ও মূলধনভিত্তি বাড়াতে রাইট শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেয় আইপিডিসির পর্ষদ। তিন টাকা প্রিমিয়ামসহ ১৩ টাকা ইস্যু মূল্যে বিদ্যমান দুটি সাধারণ শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট শেয়ার ইস্যুর ঘোষণা দেয় কোম্পানিটি। পাশাপাশি অনুমোদিত মূলধন ৪০০ কোটি থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার কোটিতে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এজন্য কোম্পানির সংঘস্মারক ও সংঘবিধির ৫নং ধারা সংশোধন করার প্রস্তাবে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিতে ২৫ মার্চ ইজিএম আয়োজন করে তারা। সেখানে শেয়ারহোল্ডাররা মূলধন বৃদ্ধির পরিকল্পনায় সম্মতি দেয়ার পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে অনুমোদনের জন্য আবেদন করে আইপিডিসি। উল্লেখ্য, সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৭ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ২০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে আইপিডিসি। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৮৫ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ১৭ টাকা ১১ পয়সায়। এর আগে ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্যও ২০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেয় আইপিডিসি। নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৬ সালে আইপিডিসির ইপিএস হয় ২ টাকা। ২০১৫ হিসাব বছরের জন্যও শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে ৭৮ পয়সা ইপিএস দেখিয়েছে আইপিডিসি, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৬০ পয়সা। ৩০ জুন কোম্পানির এনএভিপিএস ছিল ১৫ টাকা ৪ পয়সা। ডিএসইতে সর্বশেষ ৪৪ টাকা ২০ পয়সায় আইপিডিসির শেয়ার হাত বদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর ছিল ৫৩ টাকা ৩০ পয়সা ও সর্বনিম্ন ২৮ টাকা ৩০ পয়সা। দেশের প্রথম ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ সালে ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রমোশন এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি (আইপিডিসি) অব বাংলাদেশ লিমিটেড নামে শেয়ারবাজারে আসে। মালিকানা কাঠামোয় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসার পর গেল বছর কোম্পানির নাম পরিবর্তন হয়। বর্তমানে কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৪০০ কোটি, পরিশোধিত মূলধন ২১৮ কোটি ১৬ লাখ ১০ হাজার ও রিজার্ভ ৭৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আইপিডিসির মোট শেয়ারের মধ্যে বর্তমানে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে কোম্পানির ৫১ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, বাংলাদেশ সরকারের হাতে ২১ দশমিক ৮৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ১৫ দশমিক ১০, বিদেশী শূন্য দশমিক ১৮ ও বাকি ১১ দশমিক ৭৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে। বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের পর সর্বশেষ নিরীক্ষিত মুনাফা ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ২৮ দশমিক ৫৭, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত মুনাফার ভিত্তিতে যা ২৮ দশমিক ২১।
×