ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখেন মিঠুনও

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখেন মিঠুনও

মিথুন আশরাফ ॥ বাংলাদেশ এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কাছাকাছি যেতে পেরেছে দুইবার। ২০১২ সালে একবার। ওয়ানডে এশিয়া কাপে। ২০১৬ সালে আরেকবার টি২০ এশিয়া কাপে। প্রথমবার পাকিস্তানের কাছে ও দ্বিতীয়বার ভারতের কাছে ফাইনালে হেরে রানার্সআপ হয় বাংলাদেশ। এবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে এশিয়া কাপ হবে। গ্রুপপর্বে ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কার এবং ২০ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই এশিয়া কাপে দলের ক্রিকেটারদের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন মোহাম্মদ মিঠুনও। রবিবার মিঠুন বলেছেন, ‘আমি অবশ্যই আশাবাদী। কারণ অন্য ফরমেটে যেমনই হোক, ওয়ানডেতে কিন্তু বাংলাদেশ যথেষ্ট ভাল। বিশেষ করে গত চার বছর ধরে বাংলাদেশ ভাল করছে। সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে আমরা যারা জুনিয়ররা আছি তারা যদি অবদান রাখতে পারি তাহলে আমার কাছে মনে হয় ভাল হবে। আমাদের আসলে টুর্নামেন্টে মূল লক্ষ্য হলো চ্যাম্পিয়ন হওয়া।’ গ্রুপপর্ব অতিক্রম করতে পারলে সুপারফোরের খেলা। সুপারফোর অতিক্রম করলে ফাইনালের খেলা। তার মানে শুরুতে গ্রুপপর্ব পেরিয়ে যেতে হবে। যেটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মিঠুনের কাছেও তাই মনে হচ্ছে, ‘প্রথম ধাপটি পার করা তো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে আমরা যারা খেলব তারা যদি অবদান রাখতে পারি আমার মনে হয় খুব সহজেই দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে পারব।’ এশিয়া কাপ এবার বাংলাদেশের জন্য খুবই কঠিন হয়ে ধরা দিতে পারে। প্রতিটি দলই শক্তিশালী। বিশেষ করে আফগানিস্তানের স্পিনাররাতো আতঙ্ক তৈরি করতে পারেন। বাংলাদেশের জন্য প্রতিপক্ষ দলের লেগ স্পিনাররাই বেশি বিপদ আনতে পারেন। মিঠুন মনে করছেন, ‘দেখেন আমরা যে লেগস্পিনে খুব বেশি তৈরি হব, সেই অপশনও নেই। কেননা বাংলাদেশে খুব বেশি লেগস্পিনার নেই। আমরা লেগস্পিনার খুঁজেও পাই না। এর মধ্যে আমরা যতটুকু কাজে লাগাতে পারি যেভাবে পরিকল্পনা মাফিক খেলা যায় সেটাই চেষ্টা করব। বাংলাদেশের ব্যাপারটি আসলে নির্ভর করছে মোমেন্টামের ওপরে। আমরা যদি শুরুটা ভাল পাই আর একটি দল হিসেবে আত্মবিশ্বাসী থাকি এবং আমরা যদি প্রথম ধাপটি ভালভাবে উতরাতে পারি তাহলে ভাল হবে। ক্রিকেট হচ্ছে একটি দিনের খেলা। যে দিনটি যাদের ভাল যাবে তাদের পক্ষে ফলাফল আসবে। সুতরাং অবশ্যই চেষ্টা করব যেন আমাদের দিকে বেশি মোমেন্টাম থাকে এবং সেরা ক্রিকেটটাই খেলতে পারি।’ মিঠুন ২০১৪ সালে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ান। কিন্তু দলে নিয়মিত হওয়া হয়ে ওঠেনি। এ বছর জানুয়ারিতে ত্রিদেীশয় সিরিজের ফাইনালে খেলার পর আবার দলের বাইরে। ‘এ’ দলের হয়ে দুর্দান্ত খেলে আবার দলে সুযোগ পেয়েছেন। মিঠুনের সামনে কী চ্যালেঞ্জটা অনেক কঠিন? নিজেই জানালেন, ‘আসলে কারোরই প্রত্যাশা থাকে না শুধু দলে সুযোগ পাওয়া। অবশ্যই দলে সুযোগ পেয়ে দলের জন্য কিছু করা বা নিজের জায়গাটা পাকা করাটাই থাকে মূল উদ্দেশ্য। এরপরও কখনও হয়, কখনও হয় না। মানুষের জীবন সবসময় একরকম যায় না। সব চেষ্টা যে সফল হবে সেটাও না। আমরা চেষ্টা করতে পারি আমাদের ক্যারিয়ার কিভাবে আরও সুন্দর করা যায়। বাকিটা আল্লাহ্র ইচ্ছা এবং নিজের চেষ্টা।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘যেটি অতীতে চলে গিয়েছে সেটি চিন্তা করলে আসলে সামনে খুব বেশি ভাল কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা কম। সুতরাং যেটি চলে গিয়েছে তা গিয়েছেই। সেটি তো আর ফেরত আনতে পারব না আমি। সামনে যে সুযোগটি আসবে সেটির সম্ভাব্য ব্যবহার করার জন্য চেষ্টা করব।’ ব্যাটিং পজিশন নিয়ে মিঠুনের মাথাব্যথা নেই। দলের পছন্দকেই প্রাধান্য দিতে চান তিনি, ‘দলের যখন প্রয়োজন হয় তখন আসলে নিজের পছন্দকে ফোকাস করার কিছু নেই। প্রত্যেকটি মানুষেরই জীবনে একটি লক্ষ্য থাকে। তবে সবকিছুই যে পূরণ হবে এমন না। দলের স্বার্থে সব জায়গার জন্যই প্রস্তুত থাকতে হবে। যেখানেই আমি খেলব, সেখানেই আমি চেষ্টা করব শতভাগ দেয়ার এবং আমার দ্বারা যেন দল উপকৃত হয় সেটি খেয়াল রাখব।’ স্পিনারদের ভাল খেলেন মিঠুন। এর সঙ্গে মাঝখানের সারিতে তার ব্যাটিং প্রশংসনীয়। এ দুই কারণেই মিঠুনকে এবার চূড়ান্ত দলেও রাখা হয়েছে। মিঠুন এখন কি করেন, সেইদিকেই সবার নজর আছে। তবে মিঠুন মনে করছেন, ‘ভাল খেলতে হলে আসলে শুধু রিস্ট স্পিনার না প্রত্যেকটি বোলারকেই ভাল খেলতে হবে। একজন ব্যাটসম্যানের জন্য একটি বলই যথেষ্ট আউট হওয়ার ক্ষেত্রে। আমাকে যদি ভাল ইনিংস খেলতে হয় তাহলে প্রত্যেকটি বোলারকেই আমার ভালভাবে ফেস করতে হবে। আর আমি যদি শুধু রিস্ট স্পিনারকে টার্গেট করি তাহলে আমার কাছে মনে হয় ব্যাপারটি অনেকটা নেতিবাচক হয়ে যায়। আমি যখন যে বোলারকে ফেস করব, তখন যে ফিডব্যাক দিতে পারব সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’ ছয় সাত নম্বরে ডিমান্ড পূরণ প্রসঙ্গে মিঠুন আরও খোলাসা করে জানান, ‘আমার ক্যারিয়ারের প্রথম থেকে এখন পর্যন্ত আমি যা খেলেছি সবই ইতিবাচক খেলার চেষ্টা করেছি সবসময়। এমনকি আমি উইকেটে নেমে খুব বেশি সময় নেই না সেট হওয়ার জন্য। আমি প্রথম থেকেই চেষ্টা করি রানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য এবং স্ট্রাইক রোটেট করার জন্য। সুতরাং ছয় কিংবা সাত নম্বরে কিন্তু সেটাই গুরুত্বপূর্ণ যে নেমেই স্ট্রাইক রোটেট করতে হবে। এটি আমার ন্যাচারেই আছে। তাই খুব বেশি চিন্তা করার কিছু নেই। আর আমি যেহেতু ছোট বেলা থেকে এভাবেই খেলে অভ্যস্ত। হয়তো বা আগে নতুন বলে খেলতাম বা ওপরে অনেক সময় নিয়ে খেলতাম, যদিও এখন হয়তো সময় কম পাব। তবে ছয় কিংবা সাতে খেললে ১১০-১১৫, ১২০, ১৩০ স্ট্রাইক রেটে খেলতে হবে। একেক সময় পরিস্থিতি একেকটি ডিমান্ড করবে। তবে এই ধরনের স্ট্রাইক রেটে খেললে আমার মনে হয় যথেষ্ট ভাল হবে।’
×