ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেয়ার হস্তান্তর মঙ্গলবার

চীনের কনসোর্টিয়ামের টাকা আসছে আজ

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

চীনের কনসোর্টিয়ামের  টাকা আসছে আজ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চলতি বছরের ১৪ মে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে প্রায় ৯৪৭ কোটি টাকায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ২৫ শতাংশ শেয়ার কিনতে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর করে শেনঝেন-সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের চীনা কনসোর্টিয়াম। আইনী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষে ডিএসইর কৌশলগত অংশীদার হওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে চীনা কনসোর্টিয়াম। আজ চীন থেকে বাংলাদেশে আসছে শেয়ার বিক্রির টাকা। আর পরদিন মঙ্গলবার শেয়ার হস্তান্তর ও টাকা বুঝে পাওয়ার মধ্য দিয়েই কৌশলগত অংশীদারের কাছে ডিএসইর শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটছে। ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, ৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে খোলা এ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাবে চীনা কনসোর্টিয়াম। পরদিন সিটি ব্যাংকে থাকা ডিএসইর এ্যাকাউন্টে সে টাকা ট্রান্সফার হয়ে যাবে। একই দিন সিডিবিএলে খোলা চীনা কনসোর্টিয়ামের বিও হিসাবে ডিএসইর ২৫ শতাংশ শেয়ার চলে যাবে। এ দিন দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিফ্রিং করবে ডিএসই। এর আগে গত ২৬ আগস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিএসইর কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চীনা কনসোর্টিয়ামকে নন রেসিডেন্ট ইনভেস্টরস টাকা এ্যাকাউন্টের (নিটা) মাধ্যমে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর অনুমতি দেয়। মূলত পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিদেশী বিনিয়োগের টাকা দেশে আনা এবং এ বিনিয়োগের বিপরীতে প্রাপ্ত লভ্যাংশ বিদেশে পাঠাতে নিটা এ্যাকাউন্ট ব্যবহৃত হয়। কিন্তু ডিএসই তালিকাবহির্ভূত কোম্পানি হওয়ায় চীনা কনসোর্টিয়ামের পক্ষ থেকে এর শেয়ার কেনার টাকা নিটা এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে অনুমতি চেয়েছিল ডিএসই। এ বিষয়ে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান বলেন, বর্তমানে ডিএসই একটি তালিকাবহির্ভূত কোম্পানি। তবে স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচুয়ালাইজেশন (ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা পৃথকীকরণ) স্কিম অনুসারে কৌশলগত অংশীদারের কাছে শেয়ার বিক্রি ও প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ার বিক্রির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চীনা কনসোর্টিয়ামের কাছে শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে আমরা একটি বাধ্যবাধকতা পূরণ করেছি। সামনে আইপিওতে ডিএসইর শেয়ার বিক্রি করা হবে। এসব দিক বিবেচনা করে তালিকাবহির্ভূত কোম্পানি হওয়া সত্ত্বেও আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিটা এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ডিএসইর শেয়ার কেনার টাকা পরিশোধের জন্য চীনা কনসোর্টিয়ামকে অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এদিকে অর্থ ও শেয়ার হস্তান্তরের কাজে বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন ডিএসই ও চীনা কনসোর্টিয়ামের কর্মকর্তারা। আজ ও আগামীকালের মধ্যেই চীনা কনসোর্টিয়ামের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাংলাদেশে এসে পৌঁছবেন। মঙ্গলবার সকালে ডিএসইর পর্ষদ সভা আহ্বান করা হয়েছে। এ সভায় ডিএসই ও চীনা কনসোর্টিয়ামের প্রতিনিধিদের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগের অর্থ ও শেয়ার হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে। এ সভার মাধ্যমেই চীনা কনসোর্টিয়ামের প্রতিনিধি হিসেবে শেনঝেন স্টক এক্সচেঞ্জের কারিগরি ব্যবস্থাপনা কমিটির উপ-পরিচালক শি ওয়েনহাই ডিএসই পর্ষদে পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। অন্যদিকে চীনা কনসোর্টিয়ামের কাছে প্রায় ৯৪৭ কোটি টাকায় শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে আয়কর অধ্যাদেশ অনুসারে শেয়ার হস্তান্তরের কারণে উদ্ভূত মূলধনী মুনাফার ওপর ১৫ শতাংশ হারে ১৪২ কোটি টাকার ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স দিতে হবে ডিএসইর শেয়ারহোল্ডারদের। তবে বাজারের স্বার্থে মূলধনী মুনাফার অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের শর্তে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্সে অব্যাহতি চাইছে এক্সচেঞ্জটির শেয়ারহোল্ডাররা। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে ডিএসই ব্র্রোকারেজ এ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রসঙ্গত, এ বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি কৌশলগত অংশীদারদের প্রস্তাব সংবলিত টেন্ডার বক্স উন্মোচন করে ডিএসই। দরপত্র প্রক্রিয়ায় কৌশলগত অংশীদারের জন্য সংরক্ষিত ডিএসইর ১৮০ কোটি ৩৭ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০ শেয়ারের এক-চতুর্থাংশ বা ৪৫ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ১২৫টি শেয়ার কিনতে দুটি কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাব জমা হয়। এর মধ্যে শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের চীনা কনসোর্টিয়াম ডিএসইর প্রতি শেয়ারের জন্য ২২ টাকা হারে ৯৯২ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব করে। এর বাইরে তারা ডিএসইকে বিনামূল্যে বিভিন্ন কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়, যার মূল্য উল্লেখ করা হয় ৩০৮ কোটি টাকা। তবে মধ্যবর্তী সময়ে সর্বশেষ হিসাব বছরের জন্য বর্তমান শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দেয়ায় ডিএসইর প্রতিটি শেয়ারের ভ্যালুয়েশন ১ টাকা কমে যায়, যা চূড়ান্ত শেয়ার ক্রয় চুক্তিতে (এসপিএ) সমন্বয় করা হয়েছে। ফলে চীনা কনসোর্টিয়ামের কাছে শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে শেয়ারপ্রতি ২১ টাকা হিসাবে ৯৪৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৬ হাজার ৬২৫ টাকা পাবে ডিএসই। চীনা কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাবিত কারিগরি সহায়তায় মধ্যে ডিএসইর ট্রেডিং ও সার্ভিল্যান্স সিস্টেমের আধুনিকায়ন, বিজনেস প্রসেস ম্যানেজমেন্ট (বিপিএম) সিস্টেম কনসাল্টিং প্ল্যান, বন্ডের টেন্ডার সিস্টেমের জন্য কনসাল্টিং সার্ভিস, ইনফরমেশন ডিসক্লোজার সিস্টেমের জন্য কনসাল্টিং সিস্টেম প্ল্যান, ডাটা সেন্টার ও কো-লোকেশনের জন্য কনসাল্টিং সার্ভিস প্ল্যান, এফডিইপি ও ফিন্যান্সিয়াল ক্লাউড টেকনোলজি স্থানা
×