ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সৌদি সামরিক জোটের ভুল স্বীকার, দুঃখ প্রকাশ

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 সৌদি সামরিক জোটের ভুল  স্বীকার, দুঃখ প্রকাশ

ইয়েমেনে গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাসে হামলা চালানোর ঘটনায় ‘ভুল’ স্বীকার করে ‘দুঃখ’ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। ৯ আগস্ট উত্তরাঞ্চলীয় সাদা প্রদেশের একটি মার্কেটে ওই বিমান হামলায় ৪০টিরও বেশি শিশু নিহত হয়েছিল। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠনও এ হামলার নিন্দা জানিয়েছিল। শনিবার এক বিবৃতিতে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বাসে হামলার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। খবর বিবিসির অবশ্য জোটের এক মুখপাত্র বলেছেন, এক হুতি নেতাকে লক্ষ্য করেই ওই বিমান হামলা চালানো হয়েছিল বলে তাদের নিজস্ব তদন্তে উঠে এসেছে। জয়েন্ট ইনসিডেন্টস এ্যাসিসটেন্ট টিমের (জেআইএটি) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মানসুর আল মনসুর জানান, হুতি নেতা ও যোদ্ধাদের বহন করার কারণে বাসটি ‘বৈধ’ সামরিক লক্ষ্যবস্তু ছিল। হামলার স্থান নির্ধারণে ভুলের কারণেই অতিরিক্ত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি। ‘জোটের যৌথবাহিনী কমান্ড ওই ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছে। হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা, সহানুভূতি ও সংহতিও জানাচ্ছি আমরা’ সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ-তে শনিবার দেয়া বিবৃতিতে এমনটাই জানায় সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। ইয়েমেনের পশ্চিমা সমর্থিত সরকারের সঙ্গে যোগসাজশের ভিত্তিতে হতাহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার পাশাপাশি বিবৃতিতে ইয়েমেনে অভিযান পরিচালনার ধরন পর্যালোচনারও ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইয়েমেনের বিভিন্ন মার্কেট, স্কুল, হাসপাতাল ও আবাসিক এলাকায় হামলা চালিয়ে বেসামরিক নাগরিক হত্যার অভিযোগ করলেও সৌদি জোট এসব অস্বীকার করে আসছে। শনিবারের বিবৃতিতেও তারা বলেছে, সামরিক জোট ইচ্ছে করে কখনই বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালায় না। গত সপ্তাহেও ইয়েমেনের হোদায়দা বন্দরের দক্ষিণে সৌদি জোটের এক বিমান হামলায় নিহতদের মধ্যে অন্তত ২২টি শিশু ও চারজন নারী ছিল বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো নিশ্চিত করেছে। ২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুতি বিদ্রোহীরা ইয়েমেনের পশ্চিমের অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রেসিডেন্ট আব্দরাব্বু মানসুর হাদিকে বিদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য করার পর থেকে দেশটিকে ঘিরে সংঘাত মারাত্মক আকার ধারণ করে। হুতিদের সঙ্গে ইরানের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগে উদ্বিগ্ন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বেশ কয়েকটি আরব দেশ তেহরানের প্রভাব কমাতে ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে হাদির পক্ষে প্রকাশ্যে হস্তক্ষেপ শুরু করে। কয়েক বছর ধরে চলা সংঘর্ষে প্রায় ১০ হাজার লোকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ; এদের দুই-তৃতীয়াংশই বেসামরিক। আহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলেও জানিয়েছে তারা। যুদ্ধের পাশাপাশি ইয়েমেনের একাংশে সৌদি জোটের অবরোধও দুই কোটির বেশি মানুষকে মানবেতর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে বলেও ভাষ্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর।
×