ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বার্নলির বিরুদ্ধে মরিনহোর ভাগ্যনির্ধারণী ম্যাচ

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  বার্নলির বিরুদ্ধে মরিনহোর ভাগ্যনির্ধারণী ম্যাচ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্যারিয়ারের অন্যতম কঠিন সময় অতিবাহিত করছেন জোশে মরিনহো। তারকা এই কোচ ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে কিছুতেই সফল হতে পারছেন না। গেল মৌসুমে ব্যর্থতা এবার সদ্য শুরু হওয়া নতুন মৌসুমেও রেড ডেভিলসদের অচেনা লাগছে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে প্রথম তিন ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে ম্যানইউ। প্রথম ম্যাচ জিতে শুভসূচনা করলেও পরের দু’টি ম্যাচেই হেরেছে আসরের রেকর্ড সর্বাধিক ২০ বারের চ্যাম্পিয়নরা। স্বাভাবিকভাবেই নিদারুণ চাপে আছেন কোচ মরিনহো। এখন আশপাশ থেকে শোনা যাচ্ছে যে কোন মুহূর্তে ছাঁটাই হয়ে যেতে পারেন পর্তুগীজ লৌহমানব। এমন অবস্থার মধ্যেও অবশ্য নিজের ঢাক নিজেই পিটিয়ে চলেছেন স্পেশাল ওয়ান। এমন সময়ে ইপিএলে আজ রাতে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাঠে নামছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। বার্নলির মাঠে আতিথ্য নেবে মরিনহোর শিষ্যরা। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে জোর গুঞ্জন, ম্যাচটিতে ব্যর্থতা থেকে বের হতে না পারলে আর ওল্ডট্র্যাফোর্ড ফেরা হবে না সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ কোচের। বার্নলির ম্যাচটি তাই মরিনহোর বাঁচা-মরার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। আজ রাতে আরও দু’টি ম্যাচে মাঠে নামবে আর্সেনাল ও টটেনহ্যাম হটস্পার। কার্ডিফ সিটির আতিথ্য নেবে গানার্সরা। আর ওয়াটফোর্ডের মাঠে গিয়ে খেলবে স্পার্সরা। গত ২৬ বছরে প্রিমিয়ার লীগে সবচেয়ে বাজে শুরু করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। টটেনহ্যামের কাছে হারের পর দর্শকদের দিক থেকে কটূক্তির শিকার হয়েছেন মরিনহো। বার্নলি টেস্টের আগে অবশ্য নিজের ওপর আস্থা রাখছেন তিনি। বলেন, আমি পাল্টাই না। সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয়ই জানেন আমি একজন অসাধারণ মানুষ। আশা করছি সবকিছু ঠিকঠাক হবে। মরিনহোর অর্জনের অবশ্য কমতি নেই। কিন্তু ম্যানইউর হয়ে সেটা করতে পারছেন না। ইংল্যান্ড, ইতালি আর স্পেনে লীগ জেতানোর সঙ্গে তার ঝুলিতে আছে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জেতানোর গৌরবও। কিন্তু রেড ডেভিলদের হয়ে সফল হতে না পেরে আবারও আগের মতো নিজের সাফাই গাইতে শুরু করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাঠে নামার আগেও মরিনহোকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ইউনাইটেড কোচ যেন নিজেই তা উসকে দিয়েছেন। প্রিমিয়ার লীগের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ক্লাবটির কোচের দায়িত্বটা তার কাছে কেমন সাংবাদিকরা ছুড়ে দেন এমন প্রশ্ন। স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতেই জবাব দেন মরিনহো। বলেন, আমি বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাবের কোচ, কিন্তু এর পাশাপাশি আমি বিশ্বের অন্যতম সেরা কোচও। ইউনাইটেডকে লীগ জেতাতে না পারলে এই শ্রেষ্ঠত্ব থাকবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, অবশ্যই। আপনারা কেউ দার্শনিক হেগেলকে পড়েননি? তিনি বলেছেন, সবকিছু মিলিয়েই সত্যটা দাঁড়ায়। তাই সবকিছু মিলিয়েই সত্যের দেখা পাবেন। এখানেই থেমে থাকেননি তারকা এই কোচ। নিজের শ্রেষ্ঠত্বের ঢাক পেটাতে গিয়ে তিনি খোঁচা মেরেছেন জার্গেন ক্লপ ও মাউরিচিও পচেত্তিনোকে। এ প্রসঙ্গে মরিনহো বলেন, প্রিমিয়ার লীগে তৃতীয়, চতুর্থ কিংবা পঞ্চম হওয়া কোচকে কী আপনার এই প্রশ্ন করেছেন? লীগে গত মৌসুমে টটেনহ্যামকে তিনে ও লিভারপুলকে চারে তুলেছিলেন যথাক্রমে দুটি দলের কোচ পচেত্তিনো ও ক্লপ। মরিনহো এই প্রশ্নের মাধ্যমে বুঝিয়েছেন, তিনি সেরা বলেই এই প্রশ্নটা তাকে করা হয়েছে। চরম বাজে শুরুর পরও কোচ হিসেবে মরিনহোকেই সমর্থন করছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কর্মকর্তারা। জানা গেছে, কর্মকর্তাদের বিশ্বাস মরিনহোই পারবেন দলকে এই অবস্থা থেকে বের করে আনতে। গত জানুয়ারিতে ম্যানইউর সঙ্গে নতুন চুক্তি করেন মরিনহো। ৫৫ বছর বয়সী এই কোচের ২০২১ সাল পর্যন্ত থাকার কথা। ম্যানইউতে গত দুই বছরে মরিনহো ইউরোপা লীগ এবং লীগ কাপ (২০১৬-১৭) জিতেছেন। প্রিমিয়ার লীগে ছিলেন দ্বিতীয়। এছাড়া এফএ কাপ ফাইনালে (২০১৭-১৮) হেরেছেন। এ বছর বাজে শুরুর পর অনেকেই তাকে বরখাস্তের দাবি তোলেন। তবে যত যাই হোক, বার্নলির বিরুদ্ধে ম্যাচে পাশ করতে না পারলে এবার সত্যিই বারোটা বেজে যেতে পারে মরিনহোর।
×