ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রত্যাশা অনুযায়ী হকিতে ষষ্ঠই হলো বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  প্রত্যাশা অনুযায়ী হকিতে ষষ্ঠই হলো বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কথায় আছে, ‘শেষ ভাল যার, সব ভাল তার।’ এশিয়ান গেমস হকিতে শেষটা ভাল হলো না বাংলাদেশের। শনিবার ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তার জিবিকে হকি মাঠে অনুষ্ঠিত পঞ্চম স্থান নির্ধারণী ম্যাচে তারা ০-৭ গোলের বড় ব্যবধানে হেরেছে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে। ফলে এই আসরে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেই মিশন শেষ করতে হলো তাদের। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এই ম্যাচ খেলেই আন্তর্জাতিক হকি থেকে অবসর নেন বাংলাদেশের তারকা ডিফেন্ডার মামুনুর রহমান চয়ন। প্রায় দেড়শ ম্যাচে ৮টি হ্যাটট্রিকসহ তার গোলসংখ্যা ৮০। এছাড়া শ্বাসরুদ্ধকর-তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার্পূণ ফাইনালে মালয়েশিয়াকে পেনাল্টি শটআউটে ৩-১ (৬-৬) গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো স্বর্ণ জিতেছে জাপান। এটা তাদের প্রথম ফাইনাল। এর আগে তাদের সেরা সাফল্য ছিল ১৯৬৬ ও ১৯৭০ আসরে তাপদক জয়। মজার ব্যাপার- ওই দুবারই তারা হারিয়েছিল মালয়েশিয়াকে! পক্ষান্তরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলে প্রতিবারই হারল মালয়েশিয়া। এর আগে ২০১০ আসরের ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হেরে রৌপ্য জিতেছিল মালয়বাহিনী। এছাড়া চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে ২-১ গোলে হারিয়ে তা¤্রপদক নিশ্চিত করে গত আসরের স্বর্ণজয়ী ভারত। মজার ব্যাপারÑ ২০১৪ আসরে ফাইনালেও তারা হারিয়েছিল এই পাকিস্তানকেই। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো তাপদক জিতল তারা। এর আগে তারা একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেছিল ১৯৮৬ এবং ২০১০ আসরে। পক্ষান্তরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো তাপদক বঞ্চিত হলো পাকিস্তান (আগেরবার ২০০২ সালে)। অবশ্য আসর শুরুর আগে বাংলাদেশ ষষ্ঠ হওয়ার জন্যই আশাবাদ ব্যক্ত করেছিল। সেটা বিবেচনায় নিলে অবশ্যই লক্ষ্যপূরণে সফলই হয়েছে লাল-সবুজ বাহিনী। কেননা এই আসরে ষষ্ঠ হওয়াতে চার বছর পরের এশিয়ান গেমসে (২০২২ সালে চীনে অনুষ্ঠেয়) সরাসরি খেলার সুযোগ পেল তারা। তাছাড়া এশিয়ান গেমসে এটাই তাদের সেরা সাফল্য। এর আগে চারবার সপ্তম স্থান অধিকার করেছিল তারা ১৯৮৬, ১৯৯৪, ২০০২ এবং ২০০৬ আসরে। আগের দিন লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েই কেরিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু ম্যাচের ৯ মিনিট পর্যন্ত শক্তিধর কোরিয়াকে আটকে রাখতে পারলেও দশম মিনিটে প্রথম গোল হজম করেন জিমি-চয়নরা। কেরিয়ার পক্ষে প্রথম গোলটি করেন কিম জাংঘো (১-০)। ১৫ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সিও ইনও (২-০)। প্রথম কোয়ার্টারে আর কোন গোল হয়নি। এরপর ২৫ মিনিটে জিওয়ং জানও করেন আরও এক গোল (৩-০)। ২৭ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে ব্যবধান আরও বাড়ান জাং জংঘিয়ান (৪-০)। তৃতীয় কোয়ার্টারের প্রথম দিকেই আবারও বাংলাদেশের পোস্টে বল পাঠায় কোরিয়ানরা। পেনাল্টি কর্নার থেকে জাং মানজাই গোলটি করেন (৫-০)। ৪৩ মিনিটে জাং জংঘিয়ান পেনাল্টি স্ট্রোকে আবারও বাংলাদেশের পোস্টে বল পাঠান (৬-০)। ৫৭ মিনিটে গোল করেন লি জাংজুন (৭-০)। শেষ পর্যন্ত এই স্কোরলাইনেই খেলা শেষ হলে বড় হারের স্বাদ নিয়ে ষষ্ঠ হয়ে টার্ফ ছাড়েন চয়নরা। এশিয়ান গেমস থেকে ৩২ বছর পর তৃতীয়বারের মতো পদক ছাড়া ফিরছে বাংলাদেশ! ৪৫ দেশের মধ্যে শনিবার পর্যন্ত পদক তালিকায় নাম উঠিয়েছে ৩৭ দেশ। আর পদকশূন্য ৮ দেশের মধ্যে আছে বাংলাদেশও! ১৯৭৮ সালে এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের অভিষেক। ৭৮ ও ৮২ সালে বাংলাদেশ পদক পায়নি। তবে ১৯৮৬ সালে সিউল এশিয়ান গেমসে প্রথম পদক তালিকায় নাম ওঠে তাদের। ১৯৮৬-২০১৪ পর্যন্ত এই ৩২ বছরে বাংলাদেশ ১২ পদক লাভ করে। এর ১টি সোনা, ৫টি রুপা এবং ৬টি তামা। এই ১২ পদকের মধ্যে কাবাডি থেকেই আসে ৭ পদক। আর ক্রিকেট থেকে আসে ৪ পদক। নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবার এশিয়ান গেমসে ১৪ ডিসিপ্লিনে ১১৭ ক্রীড়াবিদ পাঠায় বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন। কোচ ও অফিসিয়াল মিলে ছিলেন আরও ৩১। সেই সঙ্গে নামের আগে নানা পদবি লাগিয়ে ইন্দোনেশিয়া গিয়েছিলেন আরও ১৫ জন! সবমিলিয়ে ১৬৩ জনের বিশাল বহরের প্রাপ্তি অশ^ডিম্ব!
×