ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী ফিলিপিন্স এবং লাওস, ‘এ’ গ্রুপে নেপাল, তাজিকিস্তান ও ফিলিস্তিন, খেলা দেখাবে বিটিভি,;###;টুর্নামেন্টের ভেন্যু ঢাকা, সিলেট ও নীলফামারীতে

ভাল ফলের প্রত্যাশা স্বাগতিক বাংলাদেশের ॥ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবলের বর্ণাঢ্য গ্রুপিং ড্র অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ভাল ফলের প্রত্যাশা স্বাগতিক বাংলাদেশের ॥ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবলের বর্ণাঢ্য গ্রুপিং ড্র অনুষ্ঠিত

রুমেল খান ॥ আগের চার আসর খেলে সেরা সাফল্য একবার ফাইনাল খেলে রানার্সআপ হওয়া। পঞ্চম আসরে অবশ্য এত বড় উচ্চাকাক্সক্ষা নেই। কারণ বাস্তবতা হচ্ছে অংশ নেয়া দলগুলোর সবগুলোই ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে তাদের চেয়ে এগিয়ে। তবে তুলনামূলক সহজ গ্রুপে পড়লে নকআউট পর্ব এবং খুব বেশি হলে সেমিফাইনালে খেলা সম্ভব। সে জন্যই সবার প্রত্যাশা ছিল দুটি সহজ দলের অন্তত একটি যেন গ্রুপে পড়ে। বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদী যখন লটারির পট থেকে লাওসের নামটি তুললেন, তখন রাজধানীতে অবস্থিত একটি হোটেলের বলরুমের উপস্থিত সবাই হর্ষধ্বনি করে উঠলেন। তার মানে সহজ গ্রুপেই পড়েছে বাংলাদেশ, ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা’য়। লাওসের নাম ওঠায় কেন এই উল্লাস? কারণ ‘বি’ গ্রুপে একমাত্র লাওসকে হারানোর সম্ভাবনা আছে লাল-সবুজবাহিনীর। কেননা এ বছরের ২৭ মার্চ ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে স্বাগতিক লাওসের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশ দলের কৃতিত্ব ছিল প্রথমার্ধেই দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও খেলা শেষ হবার আট মিনিটের মধ্যে দুই গোল শোধ করতে পারা। তাদের কাছে ওই ড্র ছিল যেন জয়েরই সমতুল্য। ৬ জাতির বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে স্বাগতিক বাংলাদেশ পড়েছে গ্রুপ ‘বি’তে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ফিলিপিন্স ও লাওস। গ্রুপ ‘এ’তে পড়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন নেপাল, তাজিকিস্তান এবং ফিলিস্তিন। আগামী ১ অক্টোবর থেকে শুরু হবে টুর্নামেন্ট। শেষ হবে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ এবার তিনটি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, নীলফামারীর শেখ কামাল স্টেডিয়াম এবং সিলেট জেলা স্টেডিয়াম। গ্রুপপর্বের সবগুলো ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে সিলেটে। এরপর দুটি সেমিফাইনাল নীলফামারীতে হয়ে শুধু ফাইনাল ম্যাচটি হবে ঢাকায়। দেরি করে কোন অনুষ্ঠান শুরু করার ‘সুখ্যাতি’ আছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে)। কথায় আছে ‘সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে।’ সম্ভবত বাফুফের এই রোগ সংক্রমিত হয়েছে ‘কে-স্পোর্টস’-এর মাঝেও, যারা কিনা এই আসর আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে (টুর্নামেন্ট স্বত্ব)! শনিবার নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর তারা শুরু করে এই আসরের গ্রুপিং ড্র অনুষ্ঠানটি। জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই অবশ্য ড্র অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ৬টি দেশের সাংস্কৃতিক কর্মকা- মনোজ্ঞ নাচ-গানের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। শিনা চৌহানের সাবলীল সঞ্চালনায় ড্র অনুষ্ঠানটি ছিল দারুণ আকর্ষণীয়। ১৯৯৭ সালে প্রথম এবং ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয়বার অনুষ্ঠিত হয়েছিল জাতির জনকের নামের টুর্নামেন্ট ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা’। তৃতীয় আসরের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল সুদীর্ঘ ১৫ বছর! ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সে আসর। পরের বছর ২০১৬ সালে হয় চতুর্থ এবং সর্বশেষ আসর। কিন্তু প্রতি বছর আসরটি আয়োজনের যে প্রতিশ্রুতি বাফুফে দিয়েছিল, ২০১৭ সালে সেটা বাস্তবায়ন করতে পারেনি তারা। এক বছর বিরতি দিয়ে এবার আবারও তারা আয়োজন করতে যাচ্ছে আসরটি। যদিও ২০১৬ আসরে ৮ দল অংশ নিলেও এবার দলের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৬-এ। এশিয়ার পাঁচটি ফুটবল জোন আছে। এই ৫টি জোন থেকে ৫টি দেশ এবং স্বাগতিক বাংলাদেশকে নিয়েই আসরটি আয়োজিত হতে যাচ্ছে। প্রতিযোগিতার ড্র অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, বাফুফে ও সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, ঢাকাস্থ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদান, নেপালের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ধন বাহাদুর ওলি, বাফুফের সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ, ফিফা কাউন্সিল মেম্বার মাহফুজা আক্তার কিরণ, ‘কে-স্পোর্টস’-এর চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ফাহাদ এমএ করিম প্রমুখ। টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছে কে-স্পোর্টস। টুর্নামেন্টটি আকর্ষণীয় এবং দর্শকপ্রিয়তার লক্ষ্যে সবধরনের উদ্যোগের কথাই জানানো হয়েছে। এমনকি যেসব দর্শক মাঠে এসে খেলা দেখতে পারবেন না তাদের জন্য বাংলাদেশে টেলিভিশনের পর্দায় সরাসরি ম্যাচ সম্প্রচারের ব্যবস্থা রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ফাহাদ করিম। বীরেন শিকদার বলেন, ‘জাতির পিতার নামে পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই টুর্নামেন্ট। এমন একটি আয়োজনের অংশ নিতে পেরে গর্ববোধ করছি। ফুটবল বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলা। ঢাকার বাইরে যেখানেই ফুটবল আয়োজন করা হোক না কেন মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এতে প্রমাণিত হয় ফুটবল বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের খেলা।’ সালাউদ্দিন বলেন, ‘যখন দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলো আন্তর্জাতিক ইভেন্ট আয়োজনে আগ্রহী নয়। ফিফা-এএফসির ম্যাচ নিয়েই ব্যস্ত। সেখানে আমরা আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট করতে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু ছিলেন খেলাপ্রিয় মানুষ, তার ছেলেও। বঙ্গবন্ধুর নামে এমন একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত। এশিয়ার প্রতিটি অঞ্চল থেকে দল এনে টুর্নামেন্ট করতে যাচ্ছি। যাতে এই টুর্নামেন্টে এশিয়ান ফুটবলের স্বাদ পায় সবাই।’
×