ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলায় বিএনপির মিছিল থেকে পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপ, আহত ৪

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 ভোলায় বিএনপির মিছিল থেকে পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপ, আহত ৪

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ভোলায় মিছিল থেকে পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপের অভিযোগে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ দুজন এবং কুষ্টিয়ায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ৭২ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে রাজশাহীতে পেট্রোলবোমাসহ গ্রেফতার হয়েছে আরও তিনজন। শুক্র ও শনিবার এদের গ্রেফতার করে পুলিশ। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। জানা গেছে, ভোলায় বিএনপির মিছিল থেকে পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় ৪ পুলিশ আহত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভোলা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ ট্রুম্যানসহ ২ জনকে শুক্রবার রাতে আটক করা হয়েছে। এদিকে বিএনপির সম্পাদককে আটকের পর রাত সাড়ে ১০ টার দিকে শহরের মহাজনপট্টি এলাকায় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাফিন মাহামুদ জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৮ টার দিকে মহাজনপট্টির হাবিব হোটেলের সামনে বিএনপির একটি মিছিল যাচ্ছিল। এ সময় পুলিশের একটি টহল টিমের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে ৪ পুলিশ আহত হয়। আহতরা হচ্ছে মামুন, মাসুদ, সজল ও গোপাল। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদিকে পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় ভোলা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ ট্রুম্যানকে আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেন ভোলা পুলিশ সুপার মোঃ মোকতার হোসেন। থানার ওসি ছগির মিঞা জানান, পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় শুক্রবার সুমন নামে আরও এক বিএনপির কর্মীকে আটক করা হয়। হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৯৮ জনের নামে এবং অজ্ঞাত ১০০ থেকে ১৫০ জনের নামে ভোলা থানায় একটি মামলা হয়েছে। এদিকে ভোলা জেলা যুবদলের নেতা তরিকুল ইসলাম কায়েদ জানান, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা দিকে তারা ভোলা কে জাহান মার্কেটের সামনে থেকে একটি মিছিল নিয়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে যায়। এর পর তারা একটি সভা করছিল। এ সময় তারা বাইরে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ পান বলে তিনি জানান। এদিকে ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর জানান, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় তাদের দলীয় কার্যালয়ে সভা হয়। এর পরই পুলিশী তৎপরতা শুরু হয়। পুলিশের ওপর বোমা হামলার ঘটনা মিথ্যা দাবি করে তিনি বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ট্র্যুমনকে গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা জানান। কুষ্টিয়া ॥ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ বিএনপি ও জামায়াতের ৫৮ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত জেলাজুড়ে এ গ্রেফতার অভিযানকালে ৬২টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। জেলা পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, কুষ্টিয়ার বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে মডেল থানা পুলিশ ১২জন, কুমারখালী থানা পুলিশ ১১ জন, দৌলতপুরে ১৪ জন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় ১১ জন, মিরপুরে ৪ জন, ভেড়ামারায় ৪ জন ও খোকসা থানার পুলিশ ২ জনকে আটক করে। এদের মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের কয়েক নেতাও রয়েছে। এ ছাড়া আটকদের মধ্যে কুমারখালীর এক ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতিসহ ছয় শূরা সদস্য, জেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও কুষ্টিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মহিউদ্দীন চৌধুরী মিলন রয়েছে। পুলিশ জানায়, নাশকতার প্রস্তুতির অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় সাতটি মামলা করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতসহ আসামি করা হয়েছে ১৪৩ জনকে। এদিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দিন অভিযোগ করেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। রাজশাহী ॥ পুঠিয়া ও বাঘায় নাশকতার পরিকল্পনার সময় ছাত্র শিবিরের দুই কর্মী ও যুবদলের এক নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় জিহাদী বই, পেট্রোলবোমা ও ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে পুঠিয়া সদর ইউনিয়নের ধোপাপাড়া গ্রামের ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে শিবিরকর্মী ওয়াদুদ আলী (২০) ও কান্দ্রা গ্রামের মাহাবুর রহমানের ছেলে নাহিদুল ইসলামকে (২৩) গ্রেফতার করা হয়। এই দু’জন পুঠিয়া ইসলামিয়া ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক জামায়াত নেতা এএইচএম মুনসুরুল হক মন্টুর বাড়িতে গোপন বৈঠক করছিল। শনিবার দুপুরে রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী সুপার (সদর) আবদুর রাজ্জাক খান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুঠিয়া থানার ওসি সাকিল উদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বে ধোপাপাড়া গ্রামে অভিযান চালানো হয়। পরে জামায়াত নেতা মুনসুরুল হক মন্টুর বাড়িতে গোপন বৈঠকের সময় দুই শিবির কর্মীকে আটক করা হয়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আগেই সেখান থেকে ১০-১৫ জন পালিয়ে যান। এরপর বাড়িটি তল্লাশি করে ৫০টি জিহাদী বই, ৪টি পেট্রোলবোমা ও ২টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। এদিকে রাজশাহীর বাঘায় নাশকতার পরিকল্পনাকারী উপজেলা যুবদল আহ্বায়ক সালেহ আহম্মেদ সালামকে তিনটি ককটেলসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাঘা মাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
×