ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সড়ক দুর্ঘটনায় গাইবান্ধা ও নেত্রকোনায় গেল আরও ১০ প্রাণ

প্রকাশিত: ০৫:০১, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 সড়ক দুর্ঘটনায় গাইবান্ধা ও নেত্রকোনায় গেল আরও ১০ প্রাণ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ সড়ক দুর্ঘটনায় গাইবান্ধা ও নেত্রকোনায় ১০ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধায় বাস ও ট্রাক্টরের সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজনসহ পাঁচজন এবং নেত্রকোনায় বেপরোয়া বাসের চাপায় সিএনজির চার যাত্রী নিহত হন। এছাড়া বাসের ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল আরোহীও নিহত হন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ১৩ জন। শুক্রবার রাত ও শনিবার এসব দুর্ঘটনা ঘটে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অদূরে মহদিপুরের রাইচমিল এলাকায় শুক্রবার রাত ১২টায় ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে ট্রাক্টরের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের তিনজনসহ পাঁচজন নিহত এবং অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। নিহতরা হলো সুন্দরগঞ্জের তারাপুর ইউনিয়নের নাচুনি ঘাগোয়া গ্রামের ইমদাদুল ইসলাম (২৫), তার স্ত্রী কাকলি খাতুন (২০) ও মেয়ে হেনা খাতুন (৫), চাচিয়া মীরগঞ্জ গ্রামের আফরোজা খাতুন (৩০) ও পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার সুমন মিয়া (৩২)। আহত ১০ জনের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর। তারা হলো সাদুল্যাপুরের খামার বোয়ালিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে মুন্নি আক্তার (১৫), দক্ষিণ সাহাবাজ নলডাঙ্গা গ্রামের শাজাহান মিয়া (২৬), তাঁর স্ত্রী আখি আক্তার (২৩), কুড়িগ্রামের চিলমারীর পাথরঘাটা গ্রামের আল মামুনের স্ত্রী রুমা আক্তার (১৮), পশ্চিম ঘরোরিয়া গ্রামের মৃত হাসেন আলীর ছেলে আব্দুল হাই (৫০)। তাদের পলাশবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ঈদের ছুটিতে ঢাকায় কর্মরত শ্রমিকরা সাউদিয়া পরিবহনের (দরবার) একটি বাসে করে গাইবান্ধায় আসেন। রাতে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির সময় বাসটি রাইচ মিল এলাকায় পৌঁছলে সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা হাবিবা হালিম ফুডস পরিবহন নামে টাক্টরের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারায়। দ্রুতগামী বাসটি পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে সড়কের পাশে খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন ও হাসপাতালে নেয়ার পর শিশুসহ দুজন নিহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে। পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, খবর পেয়ে হতাহতদের উদ্ধার করা হয়। এছাড়া দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও ট্রাক্টরটি আটক করা হলেও চালক ও সহকারীরা পালিয়ে গেছে। নেত্রকোনায় ৪ সিএনজি যাত্রী ॥ কেন্দুয়া-আঠারবাড়ি সড়কে বেপরোয়া বাসের চাপায় সিএনজির চালকসহ চার যাত্রী নিহত এবং তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। শনিবার বিকেল পৌনে তিনটার দিকে কেন্দুয়ার মাসকা বাজার সংলগ্ন কাঁঠালতলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় সিএনজিটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন কেন্দুয়ার বলাইশিমুল (চকপাড়া) গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে সিএনজি চালক জামাল মিয়া, কুতুবপুর নওয়াপাড়া গ্রামের হাদিস উদ্দিনের ছেলে নাজির হোসেন, কাউরাট গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে কেন্দুয়া ডিগ্রী কলেজের এইচএসসির ছাত্র শরীফ মিয়া এবং মোহনগঞ্জের সোয়াইর গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে মুরাদ হোসেন। এদিকে গুরুতর আহত তিনজনকে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন গোলাম রব্বানী, জসিম উদ্দিন ও সাকিব। এদের প্রত্যেকের বাড়ি কেন্দুয়ার কুতুবপুর গ্রামে। কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আলী মোহাম্মদ হোসাইন জানান, আহত প্রত্যেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। তাদের মাথায় মারাত্মক জখম এবং রক্তক্ষরণ হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, বিকেল পৌনে তিনটার দিকে কেন্দুয়া সদর থেকে যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজি ময়মনসিংহের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় ঢাকা থেকে কলমাকান্দার পাঁচকাঠাগামী যাত্রীবাহী ‘মায়ের দোয়া পরিবহন’ সিএনজিটিকে চাপা দেয়। এতে সিএনজিটি সম্পূর্ণ বাসের নিচে ঢুকে পরে এবং দুমড়ে-মুচড়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় দমকল বাহিনী, পুলিশ ও এলাকাবাসী সিএনজির যাত্রীদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তখন চারজনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং মুমূর্ষু তিনজনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। কেন্দুয়া থানার ওসি ইমারত হোসেন গাজী জানান, ঘাতক বাসটি আটক করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছে। মোটরসাইকেল আরোহী নিহত ॥ এদিকে নেত্রকোনা শহরের বারহাট্টা রোডে বাসের ধাক্কায় সুদীপ সূত্রধর নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। সুদীপ জেলা সদরের ঠাকুরাকোনা ইউনিয়নের আসদহাটি গ্রামের মৃত বঙ্কিম সূত্রধরের ছেলে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে গরুহাট্টা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সুদীপ সূত্রধর নেত্রকোনা শহর থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে গরুহাট্টা এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস তার মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে রাস্তায় পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘাতক বাসটি আটক করা হয়েছে।
×