ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাদক ছাড়ার শপথ দুই শতাধিক কারাবন্দীর

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 মাদক ছাড়ার শপথ দুই শতাধিক কারাবন্দীর

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ মাদকদ্রব্য সেবন, বহন, পাচার ও ব্যবসার সঙ্গে কোন না কোনভাবে সম্পৃক্ত ছিল দুই শতাধিক কারাবন্দী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে তারা এখন কক্সবাজার কারাগারে বন্দী। ওই সব হাজতিরা এখন নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে শপথও নিয়েছে। প্রতিজ্ঞা করেছে জেল থেকে বের হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবে। কারাবন্দীদের মাদকদ্রব্য সেবন, বহন, পাচার ও ব্যবসার পথ পরিহার করে সুস্থ, সুন্দর জীবন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে শনিবার কক্সবাজার জেলা কারাগারে মাদকবিরোধী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাদকমুক্ত তরুণ প্রাণে, গড়বো দেশ যুক্তির গানে’ স্লোগানকে সামনে রেখে শপথ করে মাদক স্পর্শ না করার অঙ্গীকার করেছেন কক্সবাজার জেলা কারাগারে বন্দী দুই শতাধিক হাজতি (কারাবন্দী)। কক্সবাজার জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের উদ্যোগে শনিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জেলা কারাগার অভ্যন্তরে আয়োজিত এক মাদকবিরোধী সমাবেশে এই শপথ গ্রহণ করেন বন্দীরা। তারা দীপ্ত শপথ গ্রহণ করে মাদক পরিহারের অঙ্গীকার করেন। তারা জেলেই সংশোধন হয়ে মাদককে কোন দিন স্পর্শ করবে না এবং মাদককে ঘৃণা করে ফিরে আসবে স্বাভাবিক জীবনে। শনিবার দুপুর ১টায় শপথবাক্য পাঠ করান কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সোমেন ম-ল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজার জেলা কারাগার সুপার বজলুর রশিদ আখন্দ, ডেপুটি জেলার মনির আহমেদ, কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক আবু নাঈম মাসুম, ডেপুটি জেলারগণ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের কর্মকতাগণ। সভায় জানানো হয়েছে, মাদক এখন আততায়ী হয়ে যুব সমাজ, দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করছে। যা ভবিষ্যতের জন্য অশনি সঙ্কেত। এখনই মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে না পারলে অবক্ষয়ের চোরাবালিতে ডুবে যাবে গোটা জাতি, ভেঙ্গে পড়বে সমাজব্যবস্থা। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমরা মাদকের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করার পাশাপশি সব ধরনের মাদককে ‘না’ বলার শপথ নিয়েছি। সভায় কক্সবাজার কারাগারের সুপার বজলুর রশিদ আখন্দ বলেন, দিন দিন মাদকাসক্তের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েই চলছে। এভাবে যদি বাড়তে থাকে তাহলে এক সময় প্রতিটি পরিবারেই মাদকাসক্ত ব্যক্তির উপস্থিতি দেখা যাবে। তখন প্রতিটি পরিবার এমনকি পুরো সমাজকে মাদকাসক্তের সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে। মাদক নির্মূলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি নিজের প্রতি ও সন্তানদের প্রতি আরও মনোযোগী হতে হবে। অভিন্ন মন্তব্য করে কয়েকজন হাজতি বলেন, মাদকবিরোধী সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বেশি বেশি করে এই ধরনের অনুষ্ঠান প্রয়োজন। কারণ শপথ গ্রহণ করে ফের গোপনে বা প্রকাশ্যে মাদক গ্রহণে কিছুটা হলেও তাদের নিরুৎসাহিত করবে। এতে করে মাদকের কালো থাবা থেকে সবাইকে ফিরিয়ে আনা অনেকটাই সহজ হবে।
×