ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আসছে নতুন ধারাবাহিক নাটক ‘লাকি থার্টিন’

প্রকাশিত: ০৪:১২, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 আসছে নতুন ধারাবাহিক  নাটক ‘লাকি থার্টিন’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সম্প্রতি নির্মিত হচ্ছে হাস্যরসাত্মক দীর্ঘ ধারাবাহিক নাটক ‘লাকি থার্টিন’। নাটকটি রচনা করেছেন জাকির হোসেন উজ্জ্বল। পরিচালনায় রয়েছেন ফরিদুল হাসান। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন আমিরুল হক চৌধুরী, শর্মিলী আহমেদ, অহনা, আনিসুর রহমান মিলন, খালেদা আক্তার কল্পনা, মিলি বাশার, সাজু খাদেম, সিদ্দিকুর রহমান, নাজিরা মৌ, তানিয়া বৃষ্টি, সোহেল খান, শফিক খান দিলু, আমীন আজাদ, বড়া দা মিঠু, মৌসুমি নাগ, সাজু, সিরাজ ইসলাম প্রমুখ। কাশবন প্রডাকশন হাউসের ব্যানারে নির্মিত ‘লাকি থার্টিন’ নাটকের নির্বাহী প্রযোজক একে আজাদ। নাটকটি আরটিভিতে প্রচারের জন্য নির্মিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। ‘লাকি থার্টিন’ নাটকের গল্পে দেখা যাবে উত্তর তাজপুর গ্রামের মোহাব্বত হাওলাদারের বিশাল একান্নবর্তী পরিবার। যার মূলে রয়েছে তার একডজন বিবাহ। সত্তর বছর বয়সী মোহাব্বত হাওলাদারের স্ত্রীদের মধ্যে এখনও তিনজন তার সঙ্গে আছেন। তাদের প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা সংসার। বাকিদের কেউ কেউ মারা গেছেন কেউ তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। সর্বশেষ বিয়ে করেছিলেন পনের বছর আগে। ছেলে-মেয়ে সব বড় হয়ে গেছে। এমনকি নাতি-নাতনিদের মধ্যেও অনেকের বিয়ের বয়স হয়ে গেছে। সবার ধারণা হয়েছিল বিয়ে রোগ মনে হয় সেরে গেছে তার। কিন্তু তখনই তিনি হঠাৎ একদিন নতুন একটা বিয়ে করে নিয়ে আসেন। পাত্রী পাশের গ্রামের অপরূপ সুন্দরী অষ্টাদশী লাকি বেগম। যেহেতু এটা তার তের নাম্বার বিয়ে সবাই তাকে ডাকতে শুরু করে লাকি থার্টিন। নাটকের গল্পের শুরু এখানে থেকে। মোহাব্বত হাওলাদার ভেনগাড়িতে করে নববধূ লাকিকে নিয়ে গ্রামে ঢুকতেই মোটামুটি হৈচৈ পড়ে যায়। মুহূর্তে সংবাদটা ছড়িয়ে যায় চারদিকে। তার পরিবারের লোকজন তো আছেই, গ্রামের লোকজন ছুটে আসতে থাকে। সংবাদ পেয়ে মোহাব্বত হাওলাদারের বৌয়েরা ঝাড়ু নিয়ে বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করে। ছেলেরা প্রতিজ্ঞা করে কিছুতেই বাবার এই রকম একটা কাজ তারা সমর্থন করবে না। আর নাতি-নাতনিরা এবং গ্রামবাসী কৌতূহলি হয়ে অপেক্ষা করে কি ঘটে দেখার জন্য। মোহাব্বত হাওলাদার বাড়ির সামনে আসে। সন্তানরা বাধা হয়ে দাঁড়াবে সেটা সে আগে থেকেই জানে। এর আগেও সে এই ধরনের পরিস্থিতিতে পড়েছে। তবে আগে যেমন ধমক দিয়ে বা দুই চারটা চড়-থাপ্পড় দিয়ে তত করে নতুন বৌ নিয়ে ঘরে চলে যেন, এবার যে সেটা হবে না বুঝতে পেরেছিলেন। বাড়ির সামনে ছেলেরা যখন ভেন থামিয়ে দেয় তিনি পকেট থেকে একটা সবুজ গ্রেনেড বের করেন। কেউ যদি তাকে বাড়িতে বৌ নিয়ে ঢুকতে বাঁধা দেয় তাহলে নিজেকে শেষ করে দেয়ার ঘোষণা দেয়। গ্রেনেড দেখে সবাই সরে যায়। ঝাড়ু হাতে বৌয়েরাও পিছিয়ে যায়। মোহাব্বত হাওলাদার তার স্ত্রীকে নামিয়ে সম্মানে তার ঘরে নিয়ে যায়। একে একে সবাই বউ দেখতে আসে। নতুন বৌয়ের রূপ দেখে সবাই মুগ্ধ হয়। মোহাব্বত হাওলাদারের তিন ছেলের ঘরের তিন নাতি রাজা, বাদশা, সম্রাট সব সময় দাদার কাছাকাছি থেকে তার মন জুগিয়ে চলতে চেষ্টা করে। নানানভাবে দাদার চাটুকারী তোষামোদি করে। উদ্দেশ্য দাদা মারা যাওয়ার আগে যদি বিষয় সম্পত্তি লিখে দিয়ে যায়। এই তিনজনের মধ্যে সবসময় একটা প্রতিযোগিতা থাকে। দাদাজানের প্রতি একজন আরেকজনের চাইতে বেশি ভক্তি শ্রদ্ধা দেখায়। কিন্তু বিয়ের ব্যাপারটা এই তিনজনের কাছেও গোপন রাখে তাদের দাদাজান। সে কারণে বিয়ের কথা শুনেই ওরা দৌড়ে আসে। দাদার ঘরে ঢুকে রাজা নতুন বৌ দেখে চমকে উঠে। কারণ সে আর কেউ নয় ওর প্রেমিকা লাকি। রাজার প্রেমিকা লাকি পাশের গ্রামের জয়নাল মিয়ার মেয়ে। জয়নাল মিয়া একটা ভাদাইম্মা টাইপের লোক। কোন কাজ করে না কিন্তু সব সময় বড় বড় কথা বলে। এর কাছ থেকে ওর কাছ থেকে ধার করে চলে। নরমালি সে ধারের টাকা ফেরতও দেয় না। যদি খুব বিপদে পড়ে যায় কোনভাবেই ম্যানেজ করতে না পারে তাহলে একজনের কাছ থেকে নিয়ে আরেক জনকে ফেরত দেয়। লাকির সঙ্গে যে রাজার প্রেম সেটা সেও জানে। আর সেই সুযোগে প্রায়ই রাজার কাছ থেকে এটা সেটা বলে টাকা নিত। টাকা না দিলে মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দিবে না বিধায় রাজা মনে করেছিল একেবারে বিয়ে করে নিয়ে আসতে পারলে এই ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। সে জন্য কয়েকদিন আগে বাদশা আর সম্রাটের চোখ ফাঁকি দিয়ে দাদাকে ওদের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। আজ তারই ফল হচ্ছে লাকি সেই দাদার বৌ। লাকিকে প্রথম দর্শনেই ভালবেসে ফেলে মোহাব্বত হাওলাদার। ওকে দেখে তার প্রথম যৌবনের কথা মনে পড়ে যায়। জয়নাল মিয়ার কাছে প্রস্তাব দিতেও দেরি হয় না। ধূর্ত জয়নাল এক মুহূর্ত চিন্তা না করেই রাজি হয়ে যায়। তবে শর্ত একটাই মোহাব্বত হাওলাদারের অর্ধেক সম্পত্তি তাকে লিখে দিতে হবে। জীবনে অনেক সম্পত্তি গড়েছে মোহাব্বত হাওলাদার। শেষ বয়সে মনের একটা খায়েস পূরণের জন্য রাজি হয়ে যায়। তাছাড়া কদিন পর মারা গেলে এই সম্পত্তি এমনিতেই ভাগবাটয়ারা হয়ে যাবে। সেই সম্পত্তির লোভ করে আর লাভ কি? তার চাইতে জীবনের শেষ কয়েকটা দিন আনন্দে কাটলেই ভাল। জয়নাল মিয়ার নামে জমি লিখে দিয়ে সে লাকিকে বিয়ে করে। বধূ বেশে লাকিকে দেখে রাজা যেন আকাশ থেকে পড়ে। মনের দুঃখে ও বারান্দার পিলারের সঙ্গে নিজের মাথা ঠুকতে থাকে। এই বিয়ে সে কিছুতেই মেনে নিতে পারে না। হৈ চৈ শুরু করে। রাজা দাদার বিরুদ্ধে গেলে বাদশা এবং সম্রাট ওদের দুজনের লাভ। একজন প্রতিদ্বন্দ্বী কমে যায় সেই চিন্তা করে ওরা ওকে দাদার বিরুদ্ধে উস্কে দেয়। রাজা দাদার কাছে প্রতিবাদ করতে যায়, কিন্তু সবাই জানে মোহাব্বত হাওলাদারও অতো তো সহজে দমে যাওয়ার পাত্র না।
×