ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘এ পদক্ষেপ জনগণের ওপর হামলার শামিল’

ফিলিস্তিনী শরণার্থী সংস্থায় মার্কিন সহায়তা বন্ধ

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 ফিলিস্তিনী শরণার্থী সংস্থায়  মার্কিন সহায়তা বন্ধ

জাতিসংঘের ত্রাণ ও কাজ বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিনী শরণার্থীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ নানা ধরনের সেবা দিয়ে আসছে। ফিলিস্তিনী শরণার্থীদের সহায়তায় জাতিসংঘের গঠিত সংস্থায় আর আর্থিক সাহায্য দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা জাতিসংঘের ত্রাণ ও কাজ বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-কে ‘অবিশ্বাস্য রকমের ত্রুটিপূর্ণ’ প্রতিষ্ঠান হিসেবেও অ্যাখ্যা দিয়েছে। খবর বিবিসি’র। মার্কিন প্রশাসনের মুখপাত্র হিদার নুয়ের্ত বলেছেন, ফিলিস্তিনী শরণার্থীদের বিষয়টি ‘সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা শেষে’ ইউএনআরডব্লিউএ-র তহবিলে আর অর্থ না দেয়ার এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের এক মুখপাত্র ট্রাম্প প্রশাসনের এ পদক্ষেপকে ফিলিস্তিনী জনগণের ওপর ‘হামলা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ‘সঙ্কট সমাধানে জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রস্তাবনাকে অবজ্ঞা’ করল বলেও মন্তব্য নাবিল আবু রুদেইনার। ‘ইউএনআরডব্লিউএ-র স্কুল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও জরুরী সহায়তা কর্মসূচীকে অবিশ্বাস্য রকমের ত্রুটিপূর্ণ হিসেবে যে অ্যাখ্যা দেয়া হয়েছে, আমরা তা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করছি,’ টুইটারে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন জাতিসংঘের ফিলিস্তিনী শরণার্থী বিষয়ক সংস্থাটির মুখপাত্র ক্রিস গানেসও। ১৯৪৮ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের ধারাবাহিকতায় বাস্তুচ্যুত লাখো ফিলিস্তিনীর সহায়তায় জাতিসংঘ এ ত্রাণ ও কাজ বিষয়ক সংস্থাটি গঠন করেছিল। ইউএনআরডব্লিউএ বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ নানা ধরনের সেবা দিয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রই জাতিসংঘের এ সংস্থাটির একক বৃহত্তম দাতা। ২০১৬ সালেও মার্কিন প্রশাসন ইউএনআরডব্লিউএ-র জন্য ৩৭ কোটি ডলার ছাড় করেছিল; মধ্যপ্রাচ্যে সংস্থাটির ৩০ শতাংশ কার্যক্রমেও ছিল মার্কিন সহায়তা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসন জাতিসংঘের এ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার জন্য প্রতিশ্রুত কিস্তির ৬ কোটি ডলার ছাড় করলেও পর্যালোচনার কথা বলে বাকি সাড়ে ছয় কোটি ডলারের ছাড় আটকে দিয়েছিল। তহবিল বন্ধে সিদ্ধান্ত হওয়ায় আটকে রাখা ওই অর্থ ইউএনআরডব্লিউএ-র কাছে যাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার আগেই শুক্রবার জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস জাতিসংঘের এ ফিলিস্তিনী শরণার্থী বিষয়ক সংস্থায় তার দেশ সাহায্যের পরিমাণ বাড়াবে বলে জানিয়েছিলেন। ইউএনআরডব্লিউএ-র আর্থিক সঙ্কট মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতা বাড়িয়ে দিতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। ‘প্রতিষ্ঠানটির এ ক্ষতি, নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না এমন চেইন রিএ্যাকশনের সূচনা করতে পারে,’ ভাষ্য জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।
×