পাকিস্তানের নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শুক্রবার ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার কথা বলেছেন। ইরানের পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার পর ইসলামাবাদ এই ইস্যুতে তেহরানের অবস্থানকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেছে। ডন।
ইমরান খান শুক্রবার ইসলামাবাদে সফররত ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফের সঙ্গে বৈঠককালে বলেন, ইরান ও পাকিস্তানের সম্পর্কে একটি ‘অবিচ্ছেদ্য বন্ধন’ রয়েছে। এই সম্পর্ক উন্নয়নে তার সরকার সবক্ষেত্রে কাজ করে যাবে বলে তিনি জানান। পিটিআই নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর জাভাদই প্রথম পাকিস্তান সফরকারী কোন উচ্চপর্যায় বিদেশী প্রতিনিধি। ইমরান বলেন, দু’দেশের মধ্যে নাগরিক পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ানো থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দু’দেশ আঞ্চলিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশীর সঙ্গে আলোচনাকালে জাভাদ বলেন, সীমান্ত ইস্যুতে দু’দেশের সহযোগিতা শুরুর পর গত বছর থেকেই দুু’দেশের সম্পর্কে উন্নতি ঘটে, দু’দেশ সীমান্তে সহযোগিতা বাড়ায়। কোরেশী বলেন, তার দেশ পরমাণু চুক্তি ইস্যুতে ইরানকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে। চুক্তিটি জয়েন্ট কম্প্র্রিহেনসিভ প্ল্যান অব এ্যাকশন নামে পরিচিত। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ইরানের সঙ্গে ছয়টি পশ্চিমা দেশের সঙ্গে সম্পাদিত ওই চুক্তি থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন চলতি বছর মে মাসে বেরিয়ে গেছে। তবে ইরান যে ওই চুক্তির প্রতি এখনও দায়বদ্ধ আছে জাতিসংঘ পরমাণু নজরদারি সংস্থা আইএইএ একাধিকবার সেটি নিশ্চিত করেছে। চুক্তির পর ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হয়। দেশটি আন্তর্জাতিক বাজারে তেল বিক্রি এবং বৈদেশিক বাণিজ্যের সুযোগ ফিরে পায়। দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকে উভয় দেশ বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও জনগণের পারস্পরিক যোগাযোগ আরও বাড়াতে সম্মত হয়। দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবিশ্বাস ও ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে। পাকিস্তানে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইরান সম্পর্কে জটিলতাগুলো কাটিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়। ইমরান খানের শপথ অনুষ্ঠানে না গেলেও তার উদ্দেশে শুভেচ্ছাবাণী পাঠান ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। জাভাদ আগামী মাসে ইরানে অনুষ্ঠেয় এশিয়ান কো-অপারেশন ডায়লগে (এসিডি) অংশ নেয়ার জন্য ইমরান খানের কাছে তার সরকারের পক্ষ থেকে একটি আমন্ত্রণ বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। এদিকে ইমরানও কাশ্মীরের আত্ম নিয়ন্ত্রণ ইস্যু সমর্থন করা এবং চলতি বছর ইরানে পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন করার জন্য দেশটির সর্বোচ্চ নেতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। চলতি বছর ইরানের কয়েকটি বড় শহরে পাকিস্তানের জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান বড় মনিটরে প্রদর্শিত হয়, যা আগে কখনও হয়নি।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: