ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গোলাম সারওয়ার ও মোয়াজ্জেম হোসেন বাতিঘর হয়ে পথ দেখিয়ে যাবেন

প্রকাশিত: ০৭:৩৮, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 গোলাম সারওয়ার ও মোয়াজ্জেম হোসেন বাতিঘর হয়ে পথ দেখিয়ে যাবেন

স্টাফ রিপোর্টার \ সাংবাদিকতার পেশাদারিত্বে গোলাম সারওয়ার ও মোয়াজ্জেম হোসেন অনন্য আদর্শের প্রতীক। পেশাদার সাংবাদিকতার মর্যাদা ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় তারা দু’জনই অনুকরণীয় অবদান রেখে গেছেন। বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্ম তাদের অনুসরণ করে এই পোশাকে আরও সমৃদ্ধ করবে। কর্মই তাদের বাঁচিয়ে রাখবে। বাতিঘর হয়ে তাঁরা এ দেশের সাংবাদিক সমাজকে পথ দেখিয়ে যাবেন। শুক্রবার দুপুর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক শোকসভায় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এসব কথা বলেন। একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য সাংবাদিক সমকাল সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা গোলাম সারওয়ার ও দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস পত্রিকার সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেনের মৃত্যুতে এই শোকসভার আয়োজন করা হয়। জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে শোকসভায় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও নিউজ টুডে সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমদ, দৈনিক সমকালের প্রকাশক এ কে আজাদ, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, সাংবাদিক নেতা আবেদ খান, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, মরহুম গোলাম সারওয়ারের ছেলে গোলাম শাহরিয়ার রঞ্জন ও মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে ফাহিম হোসেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। সভায় জাতীয় প্রেসক্লাব, বিএফইউজে, ডিইউজে নেতৃবৃন্দ ছাড়াও প্রয়াত দুই সাংবাদিকের সহকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, সম্পাদক হয়েও সংবাদপত্রের প্রাণ বার্তা বিভাগে এই দুই সাংবাদিক আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। তাদের কাছ থেকে নতুন প্রজন্মকে অনেক কিছুরই শেখার আছে। অসাম্প্রদায়িকতা, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতা এবং জাতীয় পতাকার প্রতি অবিচল আস্থা নিয়ে তারা সাংবাদিকতা পেশার মর্যাদাকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকদের পেশাগত অধিকার সুরক্ষায় তারা যেভাবে কাজ করে গেছেন তা সর্বদা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। রিয়াজ উদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠায় ও প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে মোয়াজ্জেম হোসেন এক বিশাল অবদান রেখে গেছেন। তার নীতি ও আদর্শ অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের জন্য সব সময় অনুকরণীয় হওয়া উচিত। আবেদ খান বলেন, গোলাম সারওয়ার তার কর্মের মধ্যে দিয়ে বেঁচে থাকবেন। সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকদের পেশাগত অধিকার সুরক্ষায় দুই সম্পাাদক যেভাবে কাজ করে গেছেন তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে সব সময়। তাদের কর্ম ও আদর্শকে ধারণ করতে হবে। সাংবাদিকতায় সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ারের অনন্য অবদান তুলে ধরে মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, তিনি ছিলেন আমাদের অভিভাবক। বার্তাকক্ষ ছিল তার প্রাণশক্তি। তিনি সেখানে থেকে হাতে কলমে অসংখ্য তরুণ সাংবাদিক তৈরি করেছেন। সহকর্মী হিসেবে তার কাছ থেকে শিখেছি। তার মৃত্যুতে পেশাগত সাংবাদিকতার বিশাল ক্ষতি হলো। যেভাবে তরুণদের এ পেশায় শেখাতেন তার বড় অভাব দেখা দেবে এখন। তিনি সাংবাদিকতায় মোয়াজ্জেম হোসেনের অবদানও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। গোলাম সারওয়ার দৈনিক সংবাদ, ইত্তেফাক, সাপ্তাহিক পূর্বাণীতে বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন। তিনি দৈনিক যুগান্তর ও সমকালের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। ছিলেন তিনি সম্পাদক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও পিআইবির চেয়ারম্যান। ২০১৪ সালে তিনি সাংবাদিকতায় একুশে পদক পান। গত ১৩ আগস্ট সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। মোয়াজ্জেম হোসেন দ্য ফিন্যান্সিয়াল পত্রিকার সম্পাদক ছাড়াও বাংলাদেশ অবজারভার ও ডেইলি স্টারসহ বিভিন্ন পত্রিকায় অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা বিকাশের ক্ষেত্রে অবদান রেখে গেছেন। গত ১ আগস্ট ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন।
×