ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাল্যবিয়ে ॥ অন্তঃসত্ত্বা ভাবি অভিনয় করে ফেঁসে গেল

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 বাল্যবিয়ে ॥ অন্তঃসত্ত্বা  ভাবি অভিনয় করে ফেঁসে গেল

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ স্কুলছাত্রীর বাল্যবিয়ের অনুষ্ঠান চলছে। বরযাত্রী এসে হাজির। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে গেলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন নাহার। সঙ্গে পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে বাল্যবিয়ের কনে নবম শ্রেণীর ছাত্রীর অভিভাবকরা ঠিক সিনেমা নাটকের মতো কাহিনী তৈরি করে কৌশল অবলম্বন করলেন। তারা এটি বাল্যবিয়ে নয় প্রমাণ করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে হাজির করলেন নবম শ্রেণীর ছাত্রীর ২২ বছরের ভাবি লাকী আক্তারকে কনে সাজিয়ে। এমন সময় ধরা পড়ে যায়, কনে সেজে যে নারী ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে দাঁড়িয়েছে তার গর্ভে ৭ মাসের সন্তান। ভ্রাম্যমাণ আদালত বিষয়টি ধরার সঙ্গে সঙ্গে যার বাল্যবিয়ে সেই স্কুলছাত্রী ঘর হতে বেরিয়ে জানান দিল তাকে জোর করে বিয়ে দেয়া হচ্ছে। ছাত্রীটি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবার মনবাসনা প্রকাশ করে তার বাল্যবিয়ে রুখে দেয়ার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করতে থাকে। সইে সঙ্গে অপরাধ স্বীকার করে ছাত্রীর বাবা-মা ও ভাবি ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিয়ে বন্ধ ও অর্থদ- এবং অভিভাবকদের কাছে মুচলেকা আদায় করে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের দোহলপাড়া গ্রামে। জানা যায়, কনে ওই গ্রামের রমজান আলীর মেয়ে ও দোহলপাড়া আদর্শ স্কুল এ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্রী আসমা আক্তার। অপর দিকে বর হলো একই উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের ঠাকুরগঞ্জ গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে জিয়ারুল ইসলাম (২২)। একদিকে আইনকে বৃদ্ধাআঙ্গুল দেখিয়ে স্কুলছাত্রী মেয়ের বাল্যবিয়ের আয়োজন, অপরদিকে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা এবং সরকারী কাজে বাধা প্রদানের অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত স্কুলছাত্রীর বাবা ও মাকে ১০ হাজার এবং বরকে ৩ হাজারসহ মোট ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করে। সেই সঙ্গে স্কুলছাত্রীর মেয়ের বাল্যবিয়ে না দেয়ার মুচলেকা লিখে নেয়।
×