ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রিশালে মুক্তিযোদ্ধা হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ॥ অংশ নেয় ৭ জন

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 ত্রিশালে মুক্তিযোদ্ধা হত্যার  রহস্য উদ্ঘাটন ॥ অংশ নেয় ৭ জন

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ ত্রিশালে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন মাস্টার হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। জমি নিয়ে বিরোধ এবং গত ইউপি নির্বাচনে বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকান্ড। সাবেক এক ইউপি মেম্বরসহ সাতজন এই হত্যাকান্ডে অংশ নেয়। পিবিআই ইতোমধ্যে হত্যাকান্ডে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতারসহ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাইনিজ কুড়াল ও ছুরি উদ্ধার করেছে। আদালতে দুই আসামি ইদ্রিস ও সোহাগ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীও দিয়েছে। ফলে এই হত্যাকান্ডের মোটিভ এখন পুলিশের কাছে পরিষ্কার। গত ৩ জুলাই, ২০১৮ তারিখ বাড়ির পাশে নিজ ফিসারির ভেতর খুন হন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন মাস্টার। এর আগে ত্রিশাল থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে কোন কুলকিনারা করতে পারেনি। পরে গত ১৩ আগস্ট এই মামলার তদন্তভার পায় পিবিআই। স্থানীয় সূত্র জানায়, ত্রিশাল থানা পুলিশ গত ৩ জুলাই সকালে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে আব্দুল মতিন মাস্টারের লাশ উদ্ধার করে। পরিবারের অভিযোগ এ ব্যাপারে অজ্ঞাতনামা আসামি করে ত্রিশাল থানায় মামলা হলেও গত একমাসে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কূলকিনারা হয়নি মামলার। অবশেষে গত ১৩ আগস্ট আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার দেয়া হয় পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে। তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে পিপিআই মফাজ্জল হোসেন রুবেল (৩০), দুলাল মিয়া (৪৫), সেলিম ডাকাত (৪০), ইদ্রিস আলী (৪০) ও সোহাগ (২৬) এই পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। আসামিদের দেয়া তথ্য মতে বৃহস্পতিবার রাতে সেলিমের বাড়ি থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাইনিজ কুড়াল ও একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। এর আগে গ্রেফতার হওয়া ইদ্রিস গত ২৩ আগস্ট ও সোহাগ গত ২৮ আগস্ট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে আব্দুল মতিন মাস্টার হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে হত্যাকান্ডে বিবরণ জানায়। গ্রেফতার হওয়া পাঁচজনসহ মোট সাতজন এই হত্যাকান্ডে অংশ নেয়। গত ইউপি নির্বাচনে এক মেম্বার প্রার্থীর বিরোধিতা করেছিলেন আব্দুল মতিন মাস্টার। এছাড়া ত্রিশালে একটি বহুজাতিক কোম্পানির জমির কেনাবেচায় দালালদের সঙ্গেও বিরোধ ছিল মতিন মাস্টারের। এসবের জের ধরেই এই হত্যাকান্ড বলে জানিয়েছে গ্রেফতার হওয়া আসামিরা। সাবেক এক ইউপি মেম্বারসহ দুই কিলার এখনও পলাতক রয়েছে। পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিক জানান, আব্দুল মতিন মাস্টার হত্যাকান্ডে রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। খুব শীঘ্রই আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন ও আসামিদের গ্রেফতারে স্বস্তি প্রকাশ করেছে মতিন মাস্টারের পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসী।
×