ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দেশী পেঁয়াজের ঝাঁজ কমেছে, আগাম শীতকালীন সবজির দাম চড়া

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  দেশী পেঁয়াজের ঝাঁজ কমেছে, আগাম শীতকালীন সবজির দাম চড়া

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নাড়ির টানে ঘরে ফেরা মানুষ ঈদ শেষে ঢাকা ফিরে আসায় জমে উঠেছে রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজার। দেশী পেঁয়াজের ঝাঁজ কিছুটা কমেছে। দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগির। বেড়েছে আদার দাম। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আগাম শীতকালীন সবজি। চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও আটার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর কাপ্তান বাজার, কাওরান বাজার, ফকিরাপুল বাজার এবং ফার্মগেট কাঁচা বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। দাম কিছুটা কমে দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে আদা। এছাড়া প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা। ঈদের ছুটি শেষে গ্রামের মানুষ ফিরে আসায় জমে উঠেছে সবজি বাজার। শীতের আগাম সবজি পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। তবে দাম চড়া। ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, পালং শাক, শিম, লাউ ও মুলাসহ সব ধরনের সবজি পাওয়া যাচ্ছে। ছোট সাইজের প্রতিপিস ফুলকপি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিপিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। এছাড়া অন্যান্য সবজি গড়ে ৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। সবজি বিক্রেতারা বলছেন, ঈদ শেষে লোকজন ফিরে আসায় আবার জমে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। বিশেষ করে পণ্যবাহী ট্রাক আবার রাজধানীতে আসা শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মহাজনরা ট্রাকভর্তি সবজি ঢাকায় নিয়ে আসছেন। কাপ্তান বাজারের সবজি বিক্রেতা খলিল জনকণ্ঠকে বলেন, শীতের আগাম সবজি উঠতে শুরু করেছে। তবে এসব সবজির দাম খুব চড়া। সারাবছর কিছু কিছু শীতকালীন সবজি পাওয়া গেলেও সেসব সবজির স্বাদ তেমন পাওয়া যায় না। তবে এখন যেসব সবজি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো মৌসুমি সবজি এবং খেতেও মজা। এ কারণে আগাম শীতকালীন সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, কোরবানির পর মাংসের বাজার এখনো জমে উঠেনি। ব্রয়লার মুরগির দাম কমে গেছে। এছাড়া গরু ও খাসির মাংস বিক্রেতারা কম করে পশু জবাই করছেন। পশুর সরবরাহ ও জবাই কমলেও মাংসের দাম বাড়েনি। মাংস বিক্রেতারা বলছে, ঢাকাবাসী এখন কোরবানির মাংস খাচ্ছে। প্রতিটি পরিবারের ফ্রিজে কম বেশি মাংস রয়েছে। এ কারণে মাংসের ক্রেতাও কম। আগামী কয়েক মাস পর্যন্ত গরু ও খাসির মাংসের চাহিদা কম থাকবে। ফকিরাপুল বাজারের মাংস বিক্রেতা সামাদ বলেন, গরু ও খাসির মাংসের দাম বাড়েনি। বরং চাহিদা কমায় বিক্রি কমে গেছে। তিনি বলেন, কোরবানির পর সাধারণত দু’এক মাস গরু ও খাসির মাংসের চাহিদা কম থাকে। এরপর পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়। কোরবানিতে এ বছর বিপুল সংখ্যক পশু কোরবানি হয়েছে। এ সব পশুর মাংস এখন ফ্রিজে সংরক্ষণ করেছেন কোরবানি দাতারা। ফলে এ সময় ক্রেতার পরিমাণও কম থাকে। জানা গেছে, মাংসের বাজার স্থিতিশীল থাকলেও বাজারে ইলিশসহ দেশী জাতীয় সব ধরনের মাছের দাম বেড়ে গেছে। বছরের এ সময়টাতে বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশ মাছ থাকার কথা। কিন্তু এবছর বাজারে সেইভাবে সরবরাহ বাড়েনি। গতবছর দাম এত সস্তা হয়ে গিয়েছিল যে, নগরবাসী সাধ্যমতো ফ্রিজে ইলিশ মাছ সংরক্ষণ করেছিল। এবার মৌসুম শুরু হয়ে গেছে, কিন্তু ইলিশের সরবরাহ বাড়ছে না। বরং দাম চড়া। আর সারাবছর এবার দেশী মাছ বিক্রি হয়েছে বেশি দামে। কাওরান বাজারে মাছ কিনতে এসেছেন পূর্ব রাজা বাজারের বাসিন্দা আহমেদ শফিক। তিনি জানান, এবার মাছের দাম চড়া। মৌসুম শুরু হলেও বাজারে ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে, বাজারে দেশী জাতীয় মাছের সরবরাহ আছে কিন্তু বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। রুই কাতলা ও কার্প জাতীয় মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৪০০ টাকা কেজি। ৬০০ টাকার নিচে কোন চিংড়ি মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া প্রতিপিস মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে দেশে মাছের উৎপাদন ভাল। এ কারণে দাম কমার কথা থাকলেও কমেনি। ফলে ভোক্তাদের বেশি দামে মাছ খেতে হচ্ছে। এদিকে, চাল, ডাল ও আটার মতো নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। মিনিকেট ও নাজির শাইলের মতো সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮-৬৮ টাকা, মাঝারি মানের স্বর্ণা পাইজাম ৫০-৫৫ এবং চায়না ইরি ও লতা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৫ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের পর চালের দাম বাড়েনি। সামনে আমন ধান উঠবে। নতুন ধান উঠলে চালের দাম কিছুটা কমতে পারে।
×