ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতারক চক্র গ্রেফতার

পাসপোর্ট আবেদনকারীকে এসবি পরিচয়ে ফোন, টাকা আদায়

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

পাসপোর্ট আবেদনকারীকে এসবি পরিচয়ে ফোন, টাকা আদায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২০ আগস্ট মোঃ মহসীন আলম মোল্লা রাজধানীর আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে তার মা ও স্ত্রীর জন্য পাসপোর্টের আবেদন করেন। এর পাঁচ দিন পর এসবি পরিচয় দিয়ে ফোন করে বলা হয়, আমি এসবি অফিস থেকে ইন্সপেক্টর রফিক বলছি। আপনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন। আপনার ফাইল আমার কাছে আছে। মহসীনের কাছে ওই ব্যক্তি তিন হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি তৎক্ষণাৎ দেড় হাজার টাকা বিকাশ করেন। ঠিক পরদিনই পাসপোর্টের তদন্তের জন্য মালিবাগ এসবি (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) অফিস থেকে তাকে ডাকা হলে তিনি বুঝতে পারেন, এর আগে পরিচায়দানকারী এসবির ভুয়া সদস্য ছিলেন। একই চক্রের ফাঁদে পড়েছিলেন একটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। তার কাছেও পাসপোর্ট তদন্তের জন্য দুই হাজার টাকা দাবি করা হয়। তিনি এসবি পরিচয়দানকারী সদস্যকে টাকা পাঠিয়ে দেন। পরে এসবি অফিসে গিয়ে বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এই অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের পাশে একটি স্টুডিও ও ফটোকপির দোকানের সামনে থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা মেট্রোর একটি বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে এই প্রতারক চক্রের তিনজনকে আটক করে। শুক্রবার দুপুরে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, পাসপোর্ট তদন্তের জন্য পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) কর্মকর্তা পরিচয় দেয়া সংঘবদ্ধ পেশাদার প্রতারকচক্রের হোতা মোঃ রাকিব মিয়া ও তার সহযোগী মোঃ কামাল হোসেন ও মোঃ সজীবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মোবাইল ফোনের কললিস্ট থেকে আসামিদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার পরই পিবিআই অভিযান চালায়। আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মুঠোফোন ও সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়। পিবিআই জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা এমন প্রতারণা করার কথা স্বীকার করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও চারজনের বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। ওই চারজন পলাতক। বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রতারক চক্রটি আগারগাঁও ঢাকার পাসপোর্ট অফিস এলাকার বিভিন্ন ফটোকপির দোকানদার ও দালালদের কাছ থেকে প্রতিটি আবেদন ফরমের কপি ২০০-৩০০ টাকার বিনিময়ে সংগ্রহ করে থাকে। সেই ফরমে দেয়া মোবাইল নম্বরে ফোন করে এসবি মালিবাগ, ঢাকার পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে আবেদনকারীদের কাছে ভেরিফিকেশনের খরচ বাবদ টাকাপয়সা হাতিয়ে নেয়। প্রতিদিন তারা ৪০ থেকে ৫০ জন আবেদনকারীকে ফোন করে থাকে। ফোন করার জন্য তারা নিরিবিলি স্থান হিসেবে শেরেবাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠসহ বিভিন্ন স্থান বেছে নেয়। আবেদনকারীকে তারা আবেদন করার দুই-তিন দিন পর অফিস খোলার দিন এবং অফিস সময়ই ফোন করে। বেশির ভাগ সময় আবেদনকারীরা দেখা করতে চাইলে তারা বলে, খরচের বিষয় আছে, আপনি আমার বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠিয়ে দেন। আমি রিপোর্ট যথাসময়েই পাঠিয়ে দেব। এ বিষয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর এসআই এমদাদুল হক বাদী হয়ে এই চক্রের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেছেন।
×