ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আকিফার দাফন সম্পন্ন ॥ মালিক চালকসহ তিন জনের নামে মামলা

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

   আকিফার দাফন সম্পন্ন ॥ মালিক চালকসহ তিন জনের নামে মামলা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুষ্টিয়া, ৩১ আগস্ট ॥ বাসের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে শিশু আকিফার মৃত্যুর ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে নিহত আকিফার বারা হারুন উর রশিদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন গঞ্জেরাজ বাসের মালিক জয়নাল মিয়া, চালক খোকন ও সুপারভাইজার ইউনুচ মাস্টার। এদের সকলের বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। আকিফার বাবা মেয়েকে হত্যার ঘটনায় ঘাতকদের বিরুদ্ধে হত্যাকান্ডের মামলা নিতে পুলিশের কাছে আবেদন করেন। তবে আইনপাশ না হওয়ায় পুলিশ মামলাটি ৩০৪ ধারায় মামলা হিসেবে এজাহারভুক্ত করেন। এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আকিফার লাশ বুধবার রাতে কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাসের বাড়িতে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজন ও প্রতিবেশীদের আহাজারিতে এ সময় পরিবেশ ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। লাশ বাড়িতে এসে পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই কয়েক শ’ শোকার্ত মানুষ শিশু আকিফাকে দেখার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। রাত সাড়ে ৮টায় চৌড়হাস ক্যালাণ সংলগ্ন মসজিদে জানাজা শেষে ওই গোরস্থানেই আকিফাকে দাফন করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে মামলা দায়েরের পর শিশুটির বাবা হারুন উর রশিদ বলেন, মামলাটি হত্যাকান্ডের অভিযোগে দন্ডবিধি ৩০২ ধারায় আমলে নেয়ার দাবি করলেও পুলিশ তা নেননি। তিনি বলেন, আপনারা ভিডিওটি দেখলেই বুঝতে পারবেন, বেপরোয়া বাসচালক আমার স্ত্রীকে তিনবার ধাক্কা দিয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাক্কায় আমার মেয়ে তার মায়ের কোল থেকে পড়ে যায়নি। তৃতীয় বার ধাক্কা মারার পর আমার মেয়ে তার মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে যায়। হারুন উর রশিদ এ ঘটনায় দায়ী বাসচালকের ফাঁসি দাবি করেন। কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক শহরতলী চৌড়হাস মোড় এলাকায় রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ফরিদপুরগামী যাত্রীবাহী বাস গঞ্জেরাজ পরিবহন (ঢাকা মেট্টো-গ-১৪-০১৭৭) শিশু আকিফার মা রিনা খাতুনকে ধাক্কা দিলে কোল থেকে শিশুটি রাস্তায় পড়ে যায়। এতে গুরুতর আহত শিশু আকিফা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনায় নিহত শিশুর পিতা বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৪১/৩০/০৮/২০১৮। ধারা ২৭৯/৩৩৮(ক), ৩০৪(খ) দ-বিধি। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর থেকে ঘাতক চালক ও হেলপারকে আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই কুষ্টিয়া ওপর দিয়ে বাসটি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। বাসের মালিক ও চালকের ঠিকানা পেয়ে গেছি। আমরা মালিক সমিতিকে বলেছি আত্মসমর্পণ না করলে যেখানে পাওয়া যাবে বাস ও মালিক-চালকে আটক করা হবে।
×