ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

আন্তঃদেশীয় সংযোগ বৃদ্ধির প্রত্যয়ে শুরু ‘ঢাকা ডক ল্যাব’

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আন্তঃদেশীয় সংযোগ বৃদ্ধির প্রত্যয়ে শুরু ‘ঢাকা ডক ল্যাব’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুক্ত চলচ্চিত্র নির্মাণে তহবিল সংগ্রহ ও কারিগরি সহায়তায় আন্তঃদেশীয় সংযোগ বৃদ্ধির প্রত্যয়ে শুরু হলো প্রামাণ্যচিত্রের আসর ‘ঢাকা ডক ল্যাব’। দেশের চলচ্চিত্রকে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে মেলে ধরতে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণের কলাকৌশল প্রশিক্ষণ দিতে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ আসর। শুক্রবার বিকেলে আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে ছয় দিনব্যাপী এ আসরের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা ডক ল্যাবের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দীন ইউসুফ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, ভারতের ডকুমেন্টারি রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নীলোৎপল মজুমদার, ঢাকা ডক ল্যাবের পরিচালক তারেক আহমেদ, জর্জিয়ার চলচ্চিত্রকার সালম জোশি। আসাদুজ্জামান নূর বলেন, প্রামাণ্যচিত্রের নিজস্ব একটি ভাষা রয়েছে, রয়েছে নিজস্ব স্বকীয়তা। কোথাও কোন কল্পনার রং না চড়িয়ে প্রামাণ্যচিত্র সরাসরি সত্যের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে যায় আমাদের। সত্যের নিরেট শক্তিকে সে তুলে ধরে। নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, প্রামাণ্যচিত্রের প্রকল্পগুলো নিয়ে ঢাকা ডব ল্যাবের প্ল্যাটফর্মে আসতে তরুণদের আমরা স্বাগত জানাই। আমাদের চারপাশে অনেক গল্প রয়েছে, যা হয়তো এখনও চলচ্চিত্র আকারে আসেনি। তরুণদের প্রকল্প যুতসই মনে হলে, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে অনুদান পাওয়া যেতে পারে নির্মাণের ক্ষেত্রে। ছয় দিনের এই কর্মশালা দুই অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশে অংশগ্রহণকারীরা ৪টি গ্রুপে ভাগ হয়ে তিন দিনের প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন। কর্মশালায় দেশী-বিদেশী মেন্টররা প্রত্যেকেই একেকটি গ্রুপে বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রশিক্ষক ও পরামর্শকের কাজ করবেন। আয়োজনের দ্বিতীয় ভাগে যৌথ প্রযোজনা সংক্রান্ত পিচিং সেশনের আয়োজন করা হবে। বাছাইকৃত ১৫ জন অংশগ্রহণকারী ইতোমধ্যেই যে প্রকল্পগুলো মেন্টরিংয়ের সুযোগ পেয়েছেন, তা দেশী-বিদেশী প্রযোজক, সম্প্রচার মাধ্যম, কমিশনিং এডিটর, চলচ্চিত্র পরিবেশক, চলচ্চিত্র বাজার বিশেষজ্ঞ ও সিনেমায় অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সামনে পিচিংয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করবেন। প্রত্যেক নির্মাতা তার চলচ্চিত্র প্রকল্প উপস্থাপন ও প্রশ্নোত্তরের জন্য ১৫ মিনিট করে সময় পাবেন। পরবর্তীতে প্রত্যেকেই আগ্রহী সম্প্রচার মাধ্যম, চলচ্চিত্র পরিবেশক, সিনেমায় অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সুযোগ পাবেন। ৫ সেপ্টেম্বর সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে সেরা প্রকল্পগুলোকে পুরস্কৃত করা হবে। ঢাকা ডক ল্যাব-এ প্রদর্শনীর জন্য দক্ষিণ এশিয়ার ৯টি দেশ থেকে চলচ্চিত্র জমা পড়ে। সেখান থেকে জুরি বোর্ড বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের ১৫টি প্রামাণ্যচিত্র নির্বাচন করেন। চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে মিয়ানমারের চলচ্চিত্রকার খিন মায়ো মায়াতের ‘মিয়ানমার মিডওয়াইফ’ চলচ্চিত্রটি এবারের আসরে প্রদর্শিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে মিয়ানমার সরকার খিন মায়ো মায়াতকে চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশে প্রদর্শনের অনুমতি দেয়নি। তিন শিল্পীর এ্যালবাম ‘কানসূতা ০০২’ ॥ প্রকাশিত হলো এনামুল করিম নির্ঝরের কথা ও সুরারোপিত গানের এ্যালবাম ‘কানসূতা ০০২’। সঙ্গীত সংকলনটিকে গান গেয়েছেন ফাহমিদা নবী, সুজন ও সুকন্যা। সঙ্গীতায়োজন করেছেন কামরুজ্জামান সুজন। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ছায়ানট মিলনায়তনে গানশালা’র আয়োজনে এ্যালবামটির প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়। এতে শ্রোতা ও শিল্পীরা একসঙ্গে বসে এ্যালবামের গানগুলো শোনার পাশাপাশি সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। চলচ্চিত্র মুক্তির আগে প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজনের রীতি থাকলেও গানশালাই প্রথমবারের মতো এ্যালবামের প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে এ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করেন গুণী চিত্রশিল্পী মুস্তফা মনোয়ার। অনুষ্ঠানে পরিবেশিত ১৫টি গানের এই সংকলন প্রকাশিত হলো জিপি মিউজিক, বাংলালিঙ্ক ভাইব, রবি স্পø্যাশ, ভারতের টাইমস মিউজিক, ও গানশালার ইউটিউব চ্যানেলে। এছাড়াও প্রকাশিত হয় মিউজিক ভিডিও। এ্যালবামটির ব্যতিক্রমী প্রিমিয়ার প্রসঙ্গে এনামুল করিম নির্ঝর বলেন, আমার কাছে সময়টা হচ্ছে আত্মোপলব্ধির মতো ব্যাপার। গানের কথায় বোধের দরজার যতটুকু কড়া যায় বরাবরের মতো সে প্রচেষ্টারই প্রতিফলন ঘটেছে গানগুলোতে। অন্যদিকে গান প্রকাশের আগে শ্রোতা এবং শিল্পীকে মুখোমুখি করে দেয়া এবং আড্ডার মাধ্যমে জবাবদিহিতার ক্ষেত্র তৈরি করে দিতেই এমন প্রিমিয়ারের আয়োজন। ‘কানসূতা ০০২’ এ্যালবামটি এনামুল করিম নির্ঝরের এক নির্ঝরের গান প্রকল্পের উদ্যোগে প্রকাশিত এ্যালবাম। এর আগে গত ৬ এপ্রিল প্রকাশিত হয় ‘কানসূতা ০০১’ এ্যালবামটি। সে এ্যালবামে গান করেন আরমিন মুসা, অর্ক ও জয়িতা। দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী শুরু আজ ॥ ১৯৮১ সালে আন্তর্জাতিক শিল্প-আসরটির সূচনা হয়েছিল ১৪টি দেশের অংশগ্রহণে। এবার রেকর্ডসংখ্যক ৬৮ দেশের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দ্বিবার্ষিকী এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী। আয়োজনের নামের সঙ্গে এশিয়া জড়িয়ে থাকলেও অংশ নিচ্ছে সকল মহাদেশের রাষ্ট্রসমূহ। বিশ শিল্পকলার সঙ্গে বাংলাদেশের চারুকলার মেলবন্ধনের অষ্টাদশতম আসরটি শুরু হচ্ছে আজ শনিবার। বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন। সম্মানিত অতিথি থাকবেন জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক তেতসুইয়া নোদা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। প্রতিযোগিতার পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীদের নাম ঘোষণা করবেন জুরি বোর্ডের সভাপতি শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় মাসব্যাপী এ প্রদর্শনীর আয়োজক শিল্পকলা একাডেমি। এশিয়ার বৃহত্তম এ চারুকলা প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন ১৯৯ জন বাংলাদেশী শিল্পী। তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন ১০৭ শিল্পী। পারফর্মেন্স আর্টে দেশের ১৬ শিল্পীর সঙ্গে অংশ নেবেন বিদেশের ৩০ শিল্পী। বিশেষ আমন্ত্রণে অংশ নিচ্ছেন ৬৩ শিল্পী। সব মিলিয়ে ২৬৬ বিদেশী শিল্পী অংশ নেবেন এশিয়ান আর্ট বিয়েনালে। যাদের মধ্যে ২২৩ শিল্পী প্রতিযোগিতায় শিল্পকর্ম জমা দিয়েছেন, ২৯ জন বিশেষ আমন্ত্রণে অংশ নিচ্ছেন এবং ১৪ পারফর্মেন্স আর্টে অংশ নেবেন। এবারের আয়োজনে থাকবে দেশী-বিদেশী শিল্পীদের মোট ৩৬৮ চিত্রকর্ম, ছাপচিত্র ও আলোকচিত্র, ৩৩টি ভাস্কর্য, ৫২টি ইলাস্ট্রেশন আর্ট এবং ৩০ পারফর্মেন্স আর্টিস্টের শিল্পনৈপুণ্য প্রদর্শনী। সব মিলিয়ে দেশ-বিদেশের ৪৬৫ শিল্পীর ৫৮৩টি শিল্পকর্ম উপস্থাপিত হবে প্রদর্শনীতে। সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে শিল্প রসিকরা বেলা ১১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত জাতীয় চিত্রশালার ছয়টি গ্যালারিতে অবলোকন করতে পারবেন প্রদর্শনীর শিল্পকর্মসমূহ। ২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রদর্শনী চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
×