ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

স্বপ্না বর্মণকে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার, সরকারী চাকরি

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ৩১ আগস্ট ২০১৮

স্বপ্না বর্মণকে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার, সরকারী চাকরি

এশিয়াডে সোনা জয়ী জলপাইগুড়ির স্বপ্না বর্মণকে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেই সঙ্গে দেয়া হবে সরকারী চাকরিও। বুধবার রাতে স্বপ্নার সোনা জয়ের খবর পান মুখ্যমন্ত্রী। পরে বৃহস্পতিবার টেলিফোনে স্বপ্নার মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। স্বপ্নাকে শুভেচ্ছা জানান। তার নির্দেশেই এদিন সকালে স্বপ্নার জলপাইগুড়ির বাড়িতে যান পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। স্বপ্নার সোনা জয়ের খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার জলপাইগুড়ির বাড়িতে ভিড় করতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে স্বপ্নার বাড়িতে। হেপ্টাথলনের মতো কঠিন ইভেন্টে বাঙালীর এই প্রথম এশিয়ান গেমসের সোনা জয়। শুধু তাই নয়, এশিয়ান গেমস থেকে ভারতেও হেপ্টাথলনের সোনা এলো এই প্রথম। হেপ্টাথলনে এশিয়াডে বাঙালীর পদক জয় অবশ্য নতুন নয়। এর আগে পরপর দু’বার রুপা জিতেছেন সোমা বিশ্বাস। ২০০২ ও ২০০৬ সালে। স্বপ্না হলেন চতুর্থ বাঙালী যিনি এশিয়ান গেমসে ব্যক্তিগত সোনার পদক জিতলেন। বাবা পঞ্চানন বর্মন ভ্যান রিকশা চালাতেন। মা বাসনা ছিলেন চা বাগানের শ্রমিক। এ রকম এক দরিদ্র পরিবারে স্বপ্নার জন্ম। এখানেই শেষ নয়। জন্মছিলেন দু’পায়ে ৬টি করে আঙ্গুল নিয়ে। যা নানাভাবে শারীরিক সমস্যায় ফেলে। ফলে নিয়মিত চিকিৎসা চালাতে হয়। যা দরিদ্র মা-বাবাকে আরও আর্থিক সঙ্কটের দিকে ঠেলে দেয়। এ রকম দরিদ্র পরিবারে সাধারণত যা হয়ে থাকে, প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল পায়ের ওই সমস্যা কাটিয়ে মেয়েকে চা শ্রমিকের কাজ করার উপযুক্ত করে তোলা। কিন্তু তা হয়নি। ছোট্টবেলা থেকেই খেলাধুলায় আগ্রহ দেখে বাবা-মা হাজার অসুবিধার মধ্যেও মেয়ের খেলাধুলা চালিয়ে যেতে সাহায্য করে যান। ২০১৩ সালে সংসারে আরও আর্থিক সঙ্কট দেখা দেয়। বাবার স্ট্রোক হয়। ফলে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। বলা যায়, সেই থেকেই ‘বেকার’। এশিয়ান গেমসে প্রথম সোনার পদক হলেও এশিয়ান এ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে আগে সোনা জিতেছেন চারুচন্দ্র কলেজের ছাত্রী স্বপ্না। সেটা গত বছরই ভুবনেশ্বরে। তারপরই অংশ নিয়েছেন লন্ডনে বিশ্ব এ্যাথলেটিক্সে। ওই বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের পর থেকে টান প্রায় এক বছর চোটের কারণে প্রতিযোগিতায় নামতে পারেননি। কিন্তু কখনও ভেঙ্গেও পড়েননি। এবার জুন মাসে গুয়াহাটিতে আন্তঃরাজ্য এ্যাথলেটিক্সে আবার প্রতিযোগিতায় ফেরেন। এশিয়াডের যোগ্যতামানও পার হয় ওখানেই। সূত্র : আজকাল
×