ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

৪ সেপ্টেম্বর থেকে এই ভেন্যুতেই শুরু হবে সাফ ফুটবল, অথচ এখনও সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়নি স্টেডিয়ামের

বেহাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারি

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ৩১ আগস্ট ২০১৮

বেহাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারি

রুমেল খান ॥ খেলার প্রাণ দর্শক। আর দর্শকদের জন্য জরুরী উপাদান হচ্ছে সুন্দর অবকাঠামোর তৈরি গ্যালারি। কিন্তু ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিগুলো দেখলে মনে হয়, এটা কোন গ্যালারি নয়, বরং কোন যুদ্ধক্ষেত্র বা ময়লার ভাগাড়! আর এ রকম পরিবেশেই নাকি আগামী ৪-১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে ‘সাফ সুজুকি কাপে’র (সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ) দ্বাদশ আসর। ‘দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপখ্যাত’ এই আসরকে ঘিরে নতুন সাজে সাজছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। মাঠে চলছে ঘাস কাটার কাজ। ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে পুরো স্টেডিয়াম। কিন্তু মাঠ, প্রেসবক্স, ড্রেসিংরুম আর ফ্লাডলাইটের সমস্যা টুর্নামেন্ট শুরুর আগে কেটে যাবার নিশ্চয়তা দেয়া হলেও গ্যালারির সঙ্কটের সুরাহা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। ২০০৯ সালে সর্বশেষ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল সাফ ফুটবলের আসর। এবারের আসরে স্বাগতিক বাংলাদেশ মাঠে নামবে উদ্বোধনী দিনেই। এশিয়ান গেমসে জেমি ডে’র শিষ্যদের দুর্দান্ত পারফর্মেন্স সাফে ভাল কিছু করার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। সেটা হচ্ছে দলের হালচাল। কিন্তু দর্শকদের জন্য গ্যালারির হালচালের অবস্থা বড়ই সঙ্গীন। সাফ টুর্নামেন্ট উপলক্ষে ঘষে-মেজে নতুন রূপ দেয়ার চেষ্টা চলছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামকে। টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই চাহিদা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মানেই দাঁড় করানো যাবে ম্যাচ ভেন্যু এবং স্টেডিয়ামকেÑ এমনটাই প্রত্যাশা গ্রাউন্ডস এ্যান্ড ফ্লোর কমিটির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বাবুল এবং স্টেডিয়ামের প্রশাসক মোবারক করিম লিটনের। সবকিছু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু গ্যালারি থাকছে সেই পুরনো চেহারাতেই। সম্বল সেই ভাঙ্গা চেয়ার! চাইলেই এখন আর সাধারণ মানুষ ঢু মারতে পারছেন না বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। কারণ সাফের প্রস্তুতি চলছে। তবে স্টেডিয়ামের পাশের টোকাইরাও জানে এখানে দেশী-বিদেশী ফুটবল দল নিয়ে এক মহাযজ্ঞ আয়োজিত হতে যাচ্ছে আগামী মাস থেকে। কথা হলো একজন ফুটবলপ্রেমী দর্শকের সঙ্গে। ঢাকার একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এই ফুটবল পাগল দর্শকের নাম তোফাজ্জল হোসেন। দুঃখভরা কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘যখনই মাঠে ফুটবল থাকে ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আমরা ছুটে আসি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে। যখন আন্তর্জাতিক কোন আসর থাকে বন্ধুবান্ধব নিয়ে দল বেঁধে আসি। নিজের দেশকে সমর্থন জানাই। কিন্তু কখনই আমাদের কথা ভাবা হয় না। গ্যালারির চেয়ারগুলো থাকে ধুলোভর্তি, ময়লা, বেশিরভাগই ভাঙ্গাচোরা। বসতেও ভয় হয় কখন ভেঙ্গে পড়ে। আমার মনে হয় রোদ-বৃষ্টি ঠেকানোর জন্য গ্যালারির ওপরে আচ্ছাদনের ব্যবস্থা করা হলে খুবই ভাল হতো।’ তবে স্টেডিয়ামের প্রশাসক মোবারক করিম লিটন আশ্বস্ত করলেন নতুন চেয়ার না বসানো হলেও গ্যালারি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হবে। তিনি জানালেন স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ীই কাজ চলছে স্টেডিয়াম সংস্কারের, ‘আমাদের নিচের দুটি ড্রেসিংরুমের কাজ প্রায় শেষের দিকে। প্রেসবক্সে কিছু কাজ হচ্ছে। ধোয়া মোছা গ্যালারি পরিষ্কারের কাজ চলছে। ফ্লাডলাইটেরও ৯৯ ভাগ কাজ হয়ে গেছে। তারা মেডিক্যাল রুম চেয়েছিল। ওইগুলো আমরা করে দিচ্ছি।’ গ্রাউন্ডস এ্যান্ড ফ্যাসিলিটিস কমিটির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বাবুলও মনে করছেন একটু দেরিতে কাজ শুরু করলেও টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যাবে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একটু দেরিতে আমরা স্টেডিয়াম সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছি। ফুটবল ফেডারেশনের সীমাবদ্ধতা আছে। তারপরও মাঠের ব্যাপারে আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। এখনও অনেক কাজ বাকি। আমরা গ্রাউন্ডস এ্যান্ড ফ্যাসিলিটিস কমিটির পক্ষ থেকে চেষ্টা করছি বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে আসার। আগামী ৩ তারিখের মধ্যেই সেটি সম্ভব হবে ইনশাল্লাহ।’ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ আছে গ্রুপ ‘এ’তে। একই গ্রুপে রয়েছে নেপাল, ভুটান এবং পাকিস্তান। গ্রুপ ‘বি’তে আছে ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপ। ৬ জাতির এ টুর্নামেন্ট চলবে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
×