ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রিকেটারদের অশোভন আচরণ ইস্যু নিয়ে বললেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন

অপরাধ প্রমাণ হলে জাতীয় দল থেকে বাদ

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৩১ আগস্ট ২০১৮

অপরাধ প্রমাণ হলে জাতীয় দল থেকে বাদ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একের পর এক ক্রিকেটারদের আচরণ ইস্যু সামনে চলে আসছে। সর্বশেষ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা হলো। এ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) বিব্রত। তবে সব ইস্যুতেই বিসিবি যুক্ত হবে তা ঠিক নয় বলে মনে করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তবে যখন দোষ প্রমাণ হবে তখন ছাড় নয়। বিসিবি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তই নেবে। বৃহস্পতিবার বিসিবি সভাপতি যেমন ক্রিকেটারদের অশোভন আচরণ ইস্যু নিয়ে বললেন, ‘প্রমাণ হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মানে জাতীয় দল থেকে স্থায়ীভাবে বাদ। এদের (ক্রিকেটারদের) আচরণে আপনি কতটা বিব্রত? সাংবাদিকরা বিসিবি সভাপতিকে প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, ‘এখানে নাম্বার অফ ইস্যুস আছে। হচ্ছে কি প্রাইভেট অনেক সমস্যা আছে। সেটা থাকতে পারে। সবকিছুর মধ্যে বিসিবিকে জড়ালে হবে না। সব বিসিবির পক্ষে করাও সম্ভব না। উদাহরণ- ডিভোর্স হয় না বাংলাদেশে? কেউ যদি কাউকে ডিভোর্স করতে চায় এটা নিয়ে আমরা কি করব। কেউ যদি একাধিক বিয়ে করে সেটাও আমাদের কিছু করার নেই। এখন তো আমরা বলতে পারি না, ক্রিকেট যারা খেলে তারা একাধিক বিয়ে করতে পারবে না। আমরা মনে করি ক্রিকেট প্লেয়াররা ডেফিনেটলি আইডল। তাদের অনেকে অনুসরণ করে। অবশ্যই তাদের ভাল মানুষ হতে হবে। এটার জন্য যা যা করা দরকার করতে হবে। কিছু মানুষ আছে যাদের আমরা শাস্তি দিচ্ছি। যদি দেখি তা দিয়েও কোন ইম্পেক্ট হচ্ছে না তখন তো আমাদের কড়া শাস্তি দিতেই হবে। যদি আমরা মনে করি একটা জিনিস করা উচিত না কোন খেলোয়াড়ের, সে যদি বারবার তা করতে থাকে। তখন কড়া সিদ্ধান্ত নিতেই হয়, নিব। আবার কিছু জিনিস আছে না জেনেও নিতে পারি না। একটা হচ্ছে অভিযোগ করতেই পারে একজন। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার আগেই যদি বিচার করে বসি। তারপর দেখা গেল আদালতে এটা ঠিক না, তাহলে তো অন্যায় হয়ে গেল। কাজেই নিশ্চিত হতে হবে। প্রমাণ হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমার কাছে একটাই ন্যাশনাল টিমে নাই। সে জাতীয় দলে খেলতে পারবে না। এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যদি কেউ খেলতে না পারে, এরচেয়ে বেশি আর কি করতে পারব বলেন।’ ক্রিকেটারদের জন্য সাইকোলজিস্ট আনার কথাও বললেন বিসিবি সভাপতি পাপন, ‘এছাড়াও আমরা সাইকোলজিস্ট নিয়ে আসার কথা ভাবছি। যে প্লেয়ারদের এই ব্যাপারে একটু ট্রেনিং দেয়া যায় কিনা। আমরা তো খালি খেলায় জেতার জন্য ট্রেনিং দেই। এখন ওই এ্যাসপেক্টেও কিছু করা যায় কিনা, আমি কথা বলেছি অলরেডি। তারা যোগাযোগ শুরু করে দেবে এবং প্লেয়ারদের সঙ্গেও কি কি করতে পারবে পারবে না। যেমন আজকেও একটা প্রস্তাব এসেছে, উদাহরণস্বরূপ যখন তারা ট্যুরে যায়, তখন সোশ্যাল মিডিয়াতে যোগাযোগ বন্ধ। ট্যুরের সময় যখন আছে তখন বন্ধ। এটা করব কিনা এটা কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নেইনি। কিন্তু এটা নিয়ে গাইডলাইন তৈরি করছি। তারা কি কি করতে পারবে, পারবে না তালিকা করে প্রত্যেক প্লেয়ারকে দিয়ে সই করাব। তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোন সিদ্ধান্ত নিলে সহজ হবে। সবকিছুর পরে কিন্তু ওদের নিজেদেরই ভাল হতে হবে। জোর করে কাউকে ভাল করানো যায় না। ওরা নিজেরা ভাল না হলে আমাদের কিছু করার নেই। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতেই হবে।’ শনিবার বিসিবির শৃঙ্খলা কমিটি সাব্বির রহমান রুম্মন, নাসির হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে ডেকেছে। তিনজনের সঙ্গে কথা বলে শৃঙ্খলা কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু ক্রিকেটাররা বারবার যে এ রকম অশোভন আচরণ করছেন। তাতে জুনিয়রদের ওপর প্রভাব পড়বে না? বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘জুনিয়র প্লেয়ার কাদের বলছেন? সাব্বির, নাসির। এরা বুড়া হয়ে গেছে। এখনও যদি ওদের জুনিয়র বলেন, তিন বছর/চার বছর ধরে খেলতেছে একেকজন। জুনিয়র প্লেয়ার যদি বলেন তাহলে শান্ত। বাকিদের জুনিয়র বলার কারণ নেই।’ সাকিব আল হাসানের সঙ্গে অস্ত্রোপচার নিয়ে বিসিবি সভাপতির হজ করার সময়ই কথা হয়েছে। সাকিব নাকি বিসিবি সভাপতিকে তখনই বলেছেন, এশিয়া কাপের পর অস্ত্রোপচার করাবেন। বিসিবি সভাপতি তাই জানালেন, ‘সাকিবের সঙ্গে সর্বশেষ আমার যেটা কথা হয়েছে মক্কায়। ওখানে যেটা বলল ও এশিয়া কাপ খেলেই তারপর সার্জারিটা করবে। আমি বলেছিলাম যদি সম্ভব হয় এশিয়া কাপ খেলে জিম্বাবুইয়ের সময় করো। কারণ এশিয়া কাপ তো খুব চ্যালেঞ্জিং। আমি মনে করি লাস্ট যত এশিয়া কাপ খেলেছি এবারেরটা সবচেয়ে কঠিন।’
×