ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভোটকেন্দ্রে ইভিএম নয়, সিসিটিভি চায় বিএনপি

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৩১ আগস্ট ২০১৮

ভোটকেন্দ্রে ইভিএম নয়, সিসিটিভি চায় বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নয়,ু সিসিটিভি চায় বিএনপি। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে বলেন, ইভিএম বাদ দিয়ে সব কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগান। তিনি আরও বলেন, ইভিএম পদ্ধতি বন্ধ করা না হলে দেশে যে কোন উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) দায়ভার নিতে হবে। ফখরুল বলেন, সরকার জনদৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) দিয়ে ইভিএম বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে কিনা আমি সেটা বলতে চাই না। তবে আমরা গ্রহণ করি না করি সেটা ‘ মেটারিয়াল ইস্যু না’। সামনে তো একটা নির্বাচন হবেই। তবে এ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা জনগণের সিদ্ধান্ত নয়। সরকার জনগণের ওপর আস্থা হারিয়ে ইভিএমের ওপর ভর করে ক্ষমতায় যেতে চায়। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশন আছে কিনা আমরা বুঝতে পারছি না। একমাত্র নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীনই সব কথা বলছেন? মাঝে মধ্যে অন্য কমিশনাররা সামনে আসেন। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন একজন দলবাজ কর্মকর্তা। বিএনপি মহাসচিব বলেন, হঠাৎ করে কী ঘটল, কার নির্দেশে এবং কাকে বিজয়ী করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইসি গোপনে এই বিতর্কিত ও সারাবিশ্বে পরিত্যক্ত ইভিএম যন্ত্র কেনার জন্য উঠেপড়ে লেগে গেল? এই বিতর্কিত যন্ত্র কেনার জন্য ব্যয়িত অর্থ নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত দায় হিসেবে গণ্য হবে। এই অপকর্মের দায়ভার সম্পূর্ণ ইসিকেই বহন করতে হবে। অবিলম্বে ইভিএম যন্ত্র কেনার উদ্যোগ বাতিল করতে ইসির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের আস্থাহীনতাকে আর ঘনীভূত করবেন না। ডিজিটাল কারচুপির পথ থেকে সরে আসুন। অন্যথায় ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে এই তৎপরতার মূল্য দিতে হবে। ফখরুল বলেন, দেশের জনগণ যে কোন মূল্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহারের অপতৎপরতা প্রতিহত করবে। তিনি বলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে এবং দেশের অধিকাংশ আইটি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শকে তোয়াক্কা না করে সরকার ও তার অনুগত নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করার জন্য তড়িঘড়ি করে আরপিও সংশোধনের অপকৌশল গ্রহণ করেছে। তাই বিএনপি জনগণের অর্থ লুটপাট ও তাদের ভোটাধিকার হরণে নির্বাচন কমিশনের ইভিএম ব্যবহারের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। মির্জা ফখরুল বলেন, ’১০ সালে নির্বাচন কমিশন ১০ হাজার টাকা দিয়ে একটি ইভিএম যন্ত্র কিনেছিল। সেখানে এখন আরও ২০ গুণ বেশি দামে দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে প্রতিটি মেশিন কিনতে হচ্ছে। এটা জনগণের অর্থ লোপাটের আরেকটি উদ্যোগ নয় কি? আসলে সরকার ও ইসির এটা একটি অশুভ পার্টনারশিপ। বিষয়টা এমন, ‘তোমরা জনগণের অর্থ লুটপাট করে খাও, আমাদের ভোটে পাস করিয়ে দাও।’ ফখরুল বলেন, নির্বাচনে ইভিএম মেশিন ব্যবহারে কারচুপি করার সুযোগ থাকে। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে যে কোন সময় ফল পাল্টে দেয়া যায়। তাই অনেক আগে থেকেই আমরা এর বিরোধিতা করে আসছি। ইভিএমের পোল কার্ডে ভোটারদের সব তথ্য সংরক্ষিত থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই পোল কার্ডের মাধ্যমে ভোটের ফল গণনা করা হয়। যেখানে একটি ডুপ্লিকেট পোল কার্ডও থাকে, ফলে আগে থেকে ডুপ্লিকেট পোল কার্ডে ভোটের ফল সেট করে ভোট গণনার সময় তা ব্যবহার করে ফল পাল্টে দেয়া সম্ভব। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান, ড. মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ প্রমুখ। গাজীপুর মহানগর বিএনপির কমিটি গঠন ॥ গাজীপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্য হাসান উদ্দিন সরকারকে আহ্বায়ক ও সোহরাব উদ্দিনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে দুই সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমে পাঠানো বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
×