ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিয়োগপত্র হাতে হাতে তুলে দিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম

নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সাড়ে ৫শ’ মিডওয়াইফের আনুষ্ঠানিক যোগদান

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৩১ আগস্ট ২০১৮

নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সাড়ে ৫শ’ মিডওয়াইফের আনুষ্ঠানিক যোগদান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সাড়ে পাঁচ শ’ মিডওয়াইফের হাতে আনুষ্ঠানিক নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগদান অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এই নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় মিডওয়াইফদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার কমানোর লক্ষ্যে টেকসই উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে প্রথম তিন হাজার মিডওয়াইফের পদ সৃষ্টি করেছেন। প্রথম ব্যাচের ৫৯৩ জনসহ দেশে বর্তমানে মোট ১ হাজার ৪৩ মিডওয়াইফ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবার প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন ভালবাসা অনুধাবন করে মায়ের মমতা ও বোনের ¯েœহ-ভালবাসা দিয়ে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথ পালনের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত মিডওয়াইফদের পরামর্শ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের মহাপরিচালক তন্দ্রা সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জিএম সালেহ উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব (নার্সিং ও মিডওয়াইফারি) সুভাষ চন্দ্র সরকার, স্বাস্থ্য অধিদপতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ নাসিমা সুলতানা প্রমুখ। নার্সদের মর্যাদায় আসনে অধিষ্ঠিত করার বিষয়টি উপস্থিত সকলকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, নার্সদের মর্যাদা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নার্সিং পেশার গুরুত্ব ও ভূমিকা অনুধাবন করতে পেরেছেন তিনি। বিষয়টি ভুলে গেলে চলবে না। নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথ পালনের মাধ্যমে এই পেশার মর্যাদা বৃদ্ধিতে আরও ভূমিকা রাখতে হবে। স্বাস্থ্য সেক্টরের উন্নয়নের খ-চিত্র তুলে ধরে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও দক্ষ নেতৃত্বে দেশে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। দেশের সর্বত্র বিস্তার লাভ করেছে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার নেটওয়ার্ক। এমন মজবুত অবকাঠামোর ওপর দাাঁড়িয়ে দেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাত্রার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামো বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে জনবল বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যু হ্রাস, ওষুধের সরবরাহ বৃদ্ধি, কমিউনিটি ক্লিনিক চালু, স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম ইত্যাদি উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মা ও শিশু স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উদ্যোগ এবং সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে বলেন, শুধু রাজধানী বা জেলা শহর নয়, গ্রামে ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতেও এখন নিরাপদ প্রসব সম্পন্ন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানস সন্তান ১৩ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক বাংলাদেশে সফলভাবে কাজ করছে। এগুলোর বেশিরভাগ ক্লিনিকে নিরাপদ প্রসব সম্পন্ন হচ্ছে, যা বিশ্ব নেতৃবৃন্দ প্রত্যক্ষ করে বাংলাদেশকে উদাহরণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সরকারের স্বাস্থ্য কর্মীরা গত কয়েক বছরে গ্রামের মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারী স্বাস্থ্য এবং শিশুর পুষ্টি নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন যা সার্বিকভাবে মা ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আর মিডওয়াইফের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবার সাফল্যের মাত্রা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি প্রত্যাশিত মাত্রায় নেমে আসবে মা ও শিশু মৃত্যুর হার। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঘাটতি কমাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ গ্রহণ ॥ দেশের চিকিৎসা শিক্ষায় মৌলিক বিষয় ও এ্যানেসথেসিয়ায় শিক্ষক এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঘাটতি পূরণে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় বাংলাদেশের চিকিৎসা শিক্ষায় মৌলিক বিষয় ও এ্যানেসথেসিয়া শিক্ষায় উৎসাহ বাড়াতে বিশেষ প্রণোদনাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণে পদক্ষেপ নিতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এই বিষয়গুলোর শিক্ষক ও চিকিৎসক ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে অবসরপ্রাপ্তদেরকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদানের প্রক্রিয়া গ্রহণের নির্দেশনা দেন মন্ত্রী। এ লক্ষ্যে একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রেরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন মন্ত্রী। বৈঠকে স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জিএম সালেহ উদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ এনায়েত হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডাঃ আবদুর রশীদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ এম ইকবাল আর্সলান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×