ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৩১ আগস্ট ২০১৮

গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শ্রমিক ছাঁটাই ও বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে উত্তরখান থানার কয়েকটি গার্মেন্টস শ্রমিকরা বিমানবন্দর থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টানা তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধের ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান-চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। পরে বিজিএমইএ প্রতিনিধি, উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে দুপুর ২টা৩৫ মিনিটে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১১টা থেকে উত্তরখান এলাকার কয়েক গার্মেন্টসের শত শত শ্রমিক উত্তরা জসিমউদ্দীন রোড থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় আব্দুল্লাহপুর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত এবং জসিমউদ্দীন রোড থেকে বনানী পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। উত্তরখানে আটিপাড়ার টপ জিন্স ফ্যাক্টরির বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা জানান, ঈদের আগে ২০ আগস্ট বেতন-বোনাসের দাবিতে তারা আন্দোলন শুরু করে। সেই সময় অন্যায়ভাবে ২৮ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়। এমনকি বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে শ্রমিকদের মারধর করা হয়। এতে আয়রনম্যান মফিজুল গুরুতর আহত হন। এ নিয়ে সকালে তারা বিভিন্ন দাবিতে ফ্যাক্টরির সামনে জড়ো হলে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় উত্তরা এবং এর আশপাশের আরও বিভিন্ন গার্মেন্টসের শ্রমিকরা। চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহাল, আহত শ্রমিক মফিজুলের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় না আনা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট গার্মেন্টসের শ্রমিকরা। বিজিএমইএ’র জয়েন্ট সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে রাস্তা থেকে তাদেরকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে বসে সুরাহা করার চেষ্টা করছি। উত্তরখান থানার ওসি হেলাল উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১১টা থেকে উত্তরখান এলাকার কয়েক গার্মেন্টসের শত শত বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা রাস্তা নেমে এলে বিমানবন্দর থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ওসি জানান, উত্তরখানের টপ জিন্সের চাকরি হারানো শ্রমিকরা সকালে রাস্তায় নেমে আসে। পরে অন্য গার্মেন্টসের শ্রমিকরাও সেখানে যোগ দেয়। পরে দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে তারা অবরোধ তুলে নেন। এখন উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গী ও বিমানবন্দর সড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছে। ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, সড়ক অবরোধ তুলে নেয়ার পর শ্রমিকদের একটি দল বিজিএমইএ ভবনের দিকে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে তারা টপ জিন্সের সামনে অবস্থান নিয়েছে। সেখানে বিজিএমইএ প্রতিনিধিরা আসছেন। উত্তরা পুলিশের উপ-কমিশনার নাবিদ কামাল শৈবাল জানান, বেলা পৌনে তিনটার দিকে শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে গেছেন। তাদের সঙ্গে ও মালিকদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। মালিক সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। শ্রমিকেরা আগামী ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মালিককে সমস্যা সমাধানের সময় দিয়েছেন। এ ব্যাপারে উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) কামরুজ্জামান সরদার বলেন, শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছে শ্রমিকরা। ট্রাফিকের উত্তর বিভাগের ডিসি প্রবীর কুমার জানান, তিনটি গার্মেন্টসের কর্মীরা ঈদের আগে কোন ধরনের বেতন বোনাস পায়নি। এ কারণে তারা ছুটিতে আসার পর মালিককে চাপ দিতে থাকে। এজন্য সকালে আজমপুর জসিমউদ্দীন সড়ক। পরে আব্দুল্লাহপুর এবং সর্বশেষ তারা বিমানবন্দর সড়কে অবস্থান নেয়। গার্মেন্টসের মালিক পক্ষের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শ্রমিকরা বিকেল পৌনে ৩টার দিকে রাস্তা থেকে অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরে যান চলাচল শুরু হয়।
×