ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অপহৃত চার বছরের শিশু সিমন উদ্ধার, ছয়জন গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০১৮

অপহৃত চার বছরের শিশু সিমন উদ্ধার, ছয়জন গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে ঢাকা থেকে অপহৃত চার বছরের শিশু তোয়াসিন ইসলাম সিমনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ। অপহরণের সঙ্গে জড়িত এক নারীসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই শিশুকে অপহরণ করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল গ্রেফতারকৃতরা। এমন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। বৃহস্পতিবার বিকেলে এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গত মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে নিজ বাসায় খেলা করছিল সিমন। খানিক পরেই সিমনকে খুঁজতে গিয়ে তার পিতা দেখেন সিমন নেই। পুরো বাড়ি তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তার হদিস মিলছিল না। সিমনের পিতামাতা, পরিবারের লোকজন আত্মীয়স্বজন রীতিমত মূর্ছা যাচ্ছিলেন বার বার। শেষ পর্যন্ত ওই রাতেই তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় সিমনের পিতা সাইফুল ইসলাম একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তাতে সিমনের নিখোঁজের বিষয়টি বলা হয়। তবে এর সঙ্গে কারও জড়িত থাকার বিষয়ে কোন কিছুই লেখা হয়নি। ওই জিডির সূত্র ধরেই তারা সিমনকে খুঁজতে থাকে। বুধবার দুপুর ২টার দিকে সিমনের পিতার মোবাইলে অজ্ঞাতনামা একটি মোবাইল নম্বর থেকে কল আসে। আশার বাণী শোনায় সে, বলে সিমন তাদের কাছে আছে। সিমনকে তারা ফেরত দেবে। বিনিময়ে তারা ২০ লাখ টাকা দাবি করে। না হলে ছেলের লাশ পাবে। কোন রকম চালাকি কিংবা থানা পুলিশের সাহায্য নিলেও সিমনকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা। সিমনের বাবা তাদেরকে আশ্বস্ত করেন। আত্মীয় স্বজনের নিকট হতে কোন রকমে দেড় লাখ টাকা যোগাড় করেন সিমনের বাবা। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট নয় অপহরণকারীরা। অবশেষে সিমনের পিতা ঘটনাটি থানা পুলিশকে জানায়। তারা অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে স্বল্প সময়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারীদের অবস্থান সর্ম্পকে নিশ্চিত হয়। ওইদিনই রাত পৌনে দুইটার দিকে পূর্ব নাখালপাড়ার লিচু বাগান এলাকা থেকে সিমনকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করতে পুলিশ সক্ষম হয়। অভিযানে গ্রেফতার করা হয় অপহরণকারী চক্রের ছয় সদস্যকে। যাদের মধ্যে একজন নারীও আছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, রুমান মিয়া (১৮), শহিদুল ইসলাম মানিক (১৮), জিসান মিয়া (১৮), সাইফুল ইসলাম ইমন (১৮), আলী আহম্মেদ (১৮) ও মীম আক্তার রিয়া (১৮)। গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা একই মহল্লার বাসিন্দা। গ্রেফতারকৃত রুমান মিয়া ছোট্ট সিমনকে চিপস্ খাওয়াতে খাওয়াতে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তারপর থেকেই সিমন পরিবারের কাছে নিঁখোজ ছিল। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ৫টি মোবাইল ও ৬টি চাপাতি উদ্ধার হয়েছে। সিমন ও তার পরিবার সম্পর্কে তদন্ত এবং নিরাপত্তার স্বার্থে আর কিছু জানাতে রাজি হননি পুলিশের এই কর্মকর্তা। তবে তিনি বলছেন, নেপথ্যে কেউ আছে কিনা, সে বিষয়ে গভীর তদন্ত চলছে। গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার অপহরণকারী নাকি শিশু পাচারকারী সে সর্ম্পকেও জানার চেষ্টা চলছে।
×