ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

১৩ সেপ্টেম্বর নতুন রূপে চালু হচ্ছে হোটেল ইন্টারকন

প্রকাশিত: ০৪:২২, ৩১ আগস্ট ২০১৮

১৩ সেপ্টেম্বর নতুন রূপে চালু হচ্ছে হোটেল ইন্টারকন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পর্দা ওঠার দিনক্ষণও ঘনিয়ে এসেছে। মহাকর্মযজ্ঞে দম ফেলার ফুরসত যেন নেই শ্রমিকদের। শেষবেলায় চলছে তুলির আঁচড়। পূর্ণতা পেতে লাগবে আরও কটা দিন। দামী গ্লাসে ঢাকা পড়েছে প্রাসাদের বাইরের দিক। ভেতরে যেন রাজপ্রাসাদের মহাবারাম খানা। চোখ ধাঁধানো রঙের এমন খেলা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দেয়ালে দেয়ালে। অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়ে ফিরছে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হোটেলটির উদ্বোধন করবেন। এরপর এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হবে। বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের (বিএসএল) রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ‘রূপসী বাংলা’ বন্ধ হওয়ার পর দীর্ঘ চার বছর ধরে চলছে সংস্কার কাজ। সাবেক শেরাটনের সেই সাজসজ্জার প্রায় সবই বদলে ফেলা হয়েছে। এখন চলছে শেষ সময়ের কারুকার্য। স্বাধীনতা-উত্তর এটা ছিল দেশের প্রথম পাঁচতারকা হোটেল। এরপর এর নাম হয় ‘হোটেল শেরাটন’। শেরাটনের সঙ্গে সরকারের চুক্তি বাতিলের পর এটি ‘রূপসী বাংলা’ হিসেবে পরিচালনা করে কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী সময়ে নতুন করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল গ্রুপের (আইএইচজি) সঙ্গে চুক্তি হয়। দীর্ঘ সংস্কারকাজ শেষে হোটেলটির চেহারাই এখন বদলে ফেলা হয়েছে। বিএসএল সূত্র জানায়, ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের যাত্রা শুরু ১৯৬৬ সালে। ওই সময় এটিই ছিল দেশের প্রথম আন্তর্জাতিকমানের পাঁচতারকা হোটেল। চলে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত। এরপর স্টারউড কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হওয়ায় ১৯৮৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ঢাকা শেরাটন হোটেল নামে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলে। শেরাটনের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ‘রূপসী বাংলা হোটেল’ নামে এটি পরিচালিত হয়। ২০১৩ সালে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল গ্রুপের (আইএইচজি) সঙ্গে বিএসএলের চুক্তি সম্পাদিত হয়। ওই চুক্তির আওতায় ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সংস্কারের জন্য হোটেলটি বন্ধ রাখা হয়। হোটেলটির মার্কেটিং ও বিজনেস প্রমোশন ডিরেক্টর সহিদুস সাদেক বলেন, ‘শুধু রূপ ও সাজসজ্জায় নয়, সুযোগ-সুবিধায়ও হোটেলটি হবে অনন্য। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী এটির উদ্বোধন করবেন। এরপর থেকে বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত হবে।’ সরেজমিন দেখা যায়, হোটেলটির বাইরে বেশকিছু খেজুর গাছ লাগানো হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের দেশী-বিদেশী গাছও রয়েছে। নতুন এই সাজে মনোরম প্রকৃতির দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সাজসজ্জার কাজ এখনও চলছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে শ্রমিকরা বাড়িয়েছেন কাজের গতি। পুরো হোটেলটি যেন ঢেলে সাজানো হয়েছে। তবে বাইরের পুরনো ভবনের কাঠামো ঠিক রাখা হয়েছে। হোটেল কক্ষের আকার ও আয়তনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। কমেছে কক্ষের সংখ্যা। আগে হোটেলটির মোট কক্ষ ছিল ২৭২টি। আয়তন বাড়ানোর ফলে কক্ষের সংখ্যা কমে ২২৬টিতে দাঁড়িয়েছে। আগে হোটেলটির বলরুম ছিল একদিকে, উইন্টার গার্ডেন নামে সবচেয়ে বড় হলরুমের অবস্থান ছিল আরেকদিকে। এখন দুটি এক করে দেয়া হয়েছে। হোটেলটির মূল ফটকও সরিয়ে দেয়া হয়েছে। ভেতরের সুইমিং পুলটিও স্থানান্তর করে সাজানো হয়েছে নতুন করে। প্রসঙ্গত, বিশ্বের প্রায় ১০০ দেশে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল গ্রুপ (আইএইচজি) হোটেল ব্যবসা পরিচালনা করছে। এ গ্রুপের টপ ব্র্যান্ড হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল। বর্তমানে ৬০ দেশে এই ব্র্যান্ডের ১৮০ হোটেল পরিচালিত হচ্ছে। আইএইচজির অন্য ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ ক্রাউন প্লাজা, হলিডে ইন, হলিডে ইন এক্সপ্রেস, ক্যান্ডেলউড সুইট, হোটেল ইনডিগো, কিম্পটন হোটেল প্রভৃতি। সব মিলিয়ে এই গ্রুপের ছয় হাজার হোটেল রয়েছে সারাবিশ্বে।
×