ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গলাচিপায় জোয়ারে বাঁধ ভেঙ্গে আমন ক্ষেত ডুবে গেছে

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ৩০ আগস্ট ২০১৮

গলাচিপায় জোয়ারে বাঁধ ভেঙ্গে আমন ক্ষেত ডুবে গেছে

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ জোয়ারের পানির চাপে ভেঙ্গে পড়েছে গলাচিপা-বাউফল সড়ক। এতে করে তিনটি উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। গলাচিপা উপজেলার ৬টি গ্রামের কয়েক হাজার একর জমির আমন ক্ষেত জোয়ারের পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে ৭-৮শ’ পরিবার। স্থানীয় প্রশাসন জরুরীভিত্তিতে সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে। জানা গেছে, উপজেলা গ্রোথ সেন্টার কানেক্টিং প্রকল্পের আওতায় ১০ বছর আগে গলাচিপা উপজেলা সদর থেকে খারিজ্জমা পর্যন্ত কার্পেটিং সড়ক নির্মাণ করা হয়। এ সড়কটি পটুয়াখালী সদর, বাউফল ও গলাচিপা উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে ব্যবহার করে। এছাড়া ঢাকার সঙ্গেও যোগাযোগে এ সড়ক ব্যবহার হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত তিন-চার দিন ধরে সড়কের কালারাজা গ্রামের গাজীবাড়ির কাছে চিকনিকান্দী শাখা খালের জোয়ারের পানির প্রবল চাপে ধীরে ধীরে করে ভাঙ্গন শুরু হয়। মঙ্গলবার বিকেলে সড়কের অন্তত ১০ ফুট এলাকা পানির চাপে ভেসে যায়। বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাঙ্গনের দুই পাশের সড়কে শত শত গাড়ি আটকা পড়েছে। তিন উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় যুবকরা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে কোনমতে মোটরসাইকেল পারাপার করছে। কিন্তু তিন-চার চাকার যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। ঢাকার সঙ্গেও এসব এলাকার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, সড়কের ভাঙ্গন অংশ দিয়ে প্রবল বেগে পানি গ্রামগুলোতে প্রবেশ করছে। এতে করে এরইমধ্যে মাঝগ্রাম, উত্তর পানখালী, দক্ষিণ পানখালী, কালারাজা, হরিদেবপুর ও কচুয়া গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, এসব গ্রামের অন্তত ৭-৮ হাজার একর জমির রোপা আমন ক্ষেত কোমর সমান পানির নিচে ডুবে গেছে। পূর্ণিমা পরবর্তী জো’ এর কারণে পানির চাপ দিন দিন আরও বাড়ছে। অবিলম্বে সড়কের ভেঙ্গে যাওয়া অংশ বন্ধ করে পানির স্র্রোত আটকানো না হলে এবং ক্ষেতের পানি নিষ্কাশন করা না গেলে জমিতে কোন ফসলই হবে না। আরেক কৃষক মোশারেফ হোসেন বলেন, গ্রামগুলোর ৭-৮শ’ বাড়িঘর পানির নিচে ডুবে গেছে। বহু পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। গবাদিপশু নিয়ে লোকজন খুবই সঙ্কটে পড়েছে। স্থানীয়রা আরও জানিয়েছেন, চিকনিকান্দী শাখা খালের পানির স্র্রোতে একই সড়কের কচুয়া, ফকির বাড়ির দরজা ও দারোগা বাড়ির দরজার অংশেও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। যা ক্রমে বাড়ছে। এ নিয়ে এলাকার লোকজন আতঙ্কিত। সরেজমিনে ভাঙ্গনস্থল পরিদর্শন শেষে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌসিফ আহমেদ জানান, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ যৌথভাবে জরুরীভিত্তিতে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন এমপি এ বিষয়ে জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরকে জরুরীভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
×