ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আবু আফজাল মোহা. সালেহ

মহাযন্ত্রণা মহাদুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ৩০ আগস্ট ২০১৮

মহাযন্ত্রণা মহাদুর্ভোগ

যানজট, ভাঙাচোরা, খানাখন্দ এই হচ্ছে বাংলাদেশের মহাসড়কের অবস্থা। কোন কোন ক্ষেত্রে অপ্রশস্ত। সারা দেশে মহাসড়ক এবং আঞ্চলিক সড়ক মিলিয়ে ২২শ’ কিলোমিটারের মতো রাস্তা আছে। বর্ষার এই মৌসুমে অনেক সড়কের নাজুক অবস্থা বা বেহাল দশা হয়েছে। রাস্তায় জলাবদ্ধতা এবং অতিমাত্রায় ওভারলোড ট্রাক চলার কারণে সড়কের ক্ষতি হচ্ছে। যেসব সড়ক সংস্কার করা হচ্ছে, বছর না পেরুতেই দেখা যাচ্ছে তার বেহাল দশা। সড়ক-মহাসড়কের দৈন্যদশা নতুন কিছু নয়। কারণ সরকার আন্তরিক হলেও বছর জুড়েই সড়ক বেহাল অবস্থায় থাকে। কেবল ঈদ এলেই এই দুরবস্থার চিত্রটি জোরেসোরে উঠে আসে। তখন মেরামতের তোড়জোড় শুরু হয়। নির্বিঘেœ মানুষ ঘরে ফিরতে পারবে এই আশায়। সড়কের ভাঙাচোরা জায়গাগুলোতে ইট-বালু ফেলে এক ধরনের অস্থায়ী ব্যবস্থা করা হয়। তারপর এগুলো ভেঙ্গে যায় এবং খানা-খন্দে রূপ লাভ করে। সংস্কার কাজ যে থেমে থাকে তা নয়, সারাবছরই এ কাজ। তবে সুষ্ঠু পরিকল্পনা করলে অনেক আউটপুট পাওয়া যাবে বলে মনে করি। ঢাকা থেকে সিলেট, রংপুর, খুলনা ও বরিশালে যাওয়ার দেশের চারটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক রয়েছে। এগুলোর সম্মিলিত দূরত্ব ১ হাজার ৬০ কিলোমিটার। এসব সড়কের অনেক স্থানে খারাপ অবস্থা, ভাঙাচোরা, খানাখন্দ। ঢাকা-চট্টগ্রাম পথের দূরত্ব ২৪২ কিলোমিটার এবং গত বছর চার লেনে উন্নীত করার পর সড়কটি এখন ভাল। তবে মেঘনা- গোমতী সেতুতে অব্যবস্থাপনার কারণে যানজট নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিযোগিতা-সক্ষমতা প্রতিবেদন ২০১৭ অনুযায়ী, এশিয়ার মধ্যে অন্যতম নিকৃষ্ট সড়কের দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। কেবল নেপাল বাংলাদেশের চেয়ে খারাপ। সওজের হাইওয়ে ডিজাইন ম্যানুয়াল (এইচডিএম) বিভাগের ২০১৬ সালের আগস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের ৩৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ সড়ক-মহাসড়ক খারাপ। ৩৯ শতাংশ সড়ক-মহাসড়ক ভালো। আর সাড়ে ২৩ শতাংশ চলনসই। এখন খারাপের হার কিছুটা বাড়তে পারে। এর মধ্যে খুলনা অঞ্চলের (বিশেষকরে যশোর-খুলনা) অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের সড়কের অবস্থাও খারাপ। (তথ্যসূত্র- বিভিন্ন পত্রিকা)। সড়ক-মহাসড়কগুলো ভাঙাচোরা, বড় বড় গর্ত ও খানা-খন্দ ভরে ওঠার কারণে প্রতিদিনই কিলোমিটারজুড়ে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকা পড়ে শ্রম, অর্থ ও জ্বালানির ক্ষতি হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছার বিষয়টি স্বপ্নের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোন কোন সড়কের অবস্থা এতই খারাপ যে হেলেদুলে গাড়ি চলে। এতে গাড়ির আয়ুষ্কাল কমে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে পানিতে সড়কের অবস্থা আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সরকার আন্তরিক। তবে টেকনিক্যাল বা অন্য কিছু কারণে ব্যয় করেও কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। দরকারের সময় বা ঈদের সময় তড়িঘড়ি করে প্রচুর ব্যয় করেও সুফল পাওয়া যাচ্ছে কম। এ জন্য দরকার সুষ্ঠু পরিকল্পনা। আর দরকার দীর্ঘমেয়াদী মাস্টার প্লান তৈরি করা। দামুরহুদা, চুয়াডাঙ্গা থেকে
×