ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিদের সঙ্গে লড়াই করে হারল বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২৯ আগস্ট ২০১৮

পাকিদের সঙ্গে লড়াই করে হারল বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শক্তির বিচারে প্রতিপক্ষ অনেক বেশিই শক্তিধর। কাজেই হারটা অনুমেয়ই ছিল। তারপরও ক্ষীণ একটা আশা ছিলÑ যদি ঘটানো যায় কোন অঘটন! না, কোন অঘটন ঘটাতে পারেনি বাংলাদেশ। অঘটনের ধারে কাছেও যায়নি। এশিয়ান গেমস হকিতে তাদের হার মানতেই হয়েছে অবশ্যম্ভাবীভাবে। পাকিস্তানের কাছে তারা হেরেছে ৫-০ গোলে। মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার গেলোরা বাং কারনো স্পোর্টস কমপ্লেক্সে এই ম্যাচটি ছিল ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচ। এই হারের ফলে এখন বাংলাদেশের কমপক্ষে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করাটা নিশ্চিতই হয়ে গেল। আগামী ১ সেপ্টেম্বর স্থান নির্ধারণী ম্যাচে তাদের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ ‘এ’ গ্রুপের দল জাপান। ওই ম্যাচে যদি তারা জাপানকে হারায় তাহলে পঞ্চম হবে লাল-সবুজরা। আর হারলে ষষ্ঠ। উল্লেখ্য, ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার আগে বাংলাদেশ দল কমপক্ষে ষষ্ঠ স্থান অধিকারের লক্ষ্যের কথাই জানিয়ে গিয়েছিল। তার মানে সেই লক্ষ্য তাদের পূরণ হচ্ছেই। এমনকি একধাপ এগিয়ে আরও উন্নতিরও হাতছানি আছে। মঙ্গলবার পাকিস্তানের সঙ্গে লড়াইয়ে নামার মাত্র ৫৭ সেকেন্ডের মাথাতেই এক গোল হজম করেন জিমি-চয়নরা। আতিক মোহাম্মদের গোলে ম্যাচে লিড নেয় পাকিস্তান (১-০)। ৮ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার আদায় করে নেয় তারা। তবে ব্যবধান বাড়াতে পারেনি। তবে এর ১২ সেকেন্ড পরই আরও একটি পেনাল্টি কর্নার থেকেই বাংলাদেশকে আরও পিছিয়ে দেয় পাকিস্তান। এবার পিসি থেকে গোল করেন আলি মোবাশের (২-০)। ৯ মিনিটে আতিক মাহমুদের জোরালো শট আটকে দেন বাংলাদেশী গোলরক্ষক। দ্বিতীয় কোয়ার্টারে আরও এক গোল হজম করে বাংলাদেশ। ২৫ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার পায় পাকিস্তান। আলী মোবাশেরকে আটকে রাখতে পারেননি বাংলাদেশী গোলরক্ষক। বল পোস্টে পাঠিয়ে ব্যবধান বাড়িয়ে নেন আলী (৩-০)। তৃতীয় কোয়ার্টারেও একটি গোল হয়। ৩৬ মিনিটে সান আলীর গোলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৪-০তে। চতুর্থ কোয়ার্টারেও হয় এক গোল। সেটি ৪৮ মিনিটে। পিসি থেকে গোলটি করেন পাকিস্তানের আতিক মোহাম্মদ (৫-০)। বিশ্ব হকিতে পাকিস্তানের ১৩, বাংলাদেশের ৩১। এশিয়ান গেমসের হকি এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে মোট ১৫ বার। তাতে প্রতিবারই অংশ নিয়েছে পাকিস্তান। এই ১৫ বারের মধ্যে তারা ১১ বারই ফাইনাল খেলেছে। আর স্বর্ণপদক জিতেছে সর্বাধিক ৮ বার যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দক্ষিণ কোরিয়ার চেয়েও চারবার বেশি। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ ১৯৭৮ থেকে এ পর্যন্ত এশিয়ান গেমস হকিতে তারা অংশ নিয়েছে মোট ৯ বার। তাদের সেরা সাফল্য হচ্ছে চারবার সপ্তম স্থান অধিকার করা (১৯৮৬, ১৯৯৪, ২০০২, ২০০৬)। চলমান এশিয়ান গেমসে ‘বি’ গ্রুপে পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশ আছে ছয় দলের মধ্যে তৃতীয় স্থানে। ৫ খেলার ৩টিতে জয় এবং ২টি হারে ৯ পয়েন্ট তাদের। পক্ষান্তরে সমান খেলায় সবকটিতেই জিতে পূর্ণ ১৫ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান আছে শীর্ষ অবস্থানে। বাংলাদেশ হারিয়েছে ২-১ গোলে ওমানকে, ৬-১ গোলে কাজাখস্তানকে এবং ৩-১ গোলে থাইল্যান্ডকে। আর হেরেছে ০-৭ গোলে মালয়েশিয়ার কাছে। পক্ষান্তরে পাকিস্তানের জয়গুলো এসেছে ১০-০ গোলে থাইল্যান্ড, ১০-০ গোলে ওমান, ১৬-০ গোলে কাজাখস্তান এবং ৪-১ গোলে মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে। এ আসরে তাদের গোল দ্বিতীয় সর্বাধিক ৪৫টি (৭৬ গোল নিয়ে শীর্ষে ‘এ’ গ্রুপে ভারত)। তবে দুই গ্রুপ মিলিয়ে সবচেয়ে কম গোল (১টি) হজম করেছে তারাই। এদিকে বাংলাদেশের গোল ১১, খেয়েছে ১৫টি। এই আসরে মুখোমুখি লড়াইয়ে পাকিস্তাননের সঙ্গে এ পর্যন্ত চারটি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ১৯৭৮ সালে ব্যাংকক আসরে ০-১৭ গোলে শোচনীয়ভাবে হারে লাল-সবুজরা। যে কোন দলের কাছে সবচেয়ে বেশি গোল খাওয়ার এটিই তাদের নজির। দ্বিতীয় সাক্ষাত ১৯৮৬ সালে সিউলে অনুষ্ঠিত আসরে। সেবার হারের ব্যবধানটা ছিল বেশ কম মাত্র ০-৭ গোলে হার। কিন্তু ২০০২ সালে বুসানে অনুষ্ঠিত আসরে দুই গোল বেশি খেয়ে আবারও অবনমন ঘটে (০-৯ গোলে হার)। সর্বশেষ ২০১০ সালে গুয়াংজুতে অনুষ্ঠিত আসরে কিঞ্চিৎ উন্নতি ঘটে। এবার একটি গোলও করতে সক্ষম হয় (১-৬)। এই আসরে ষষ্ঠ হতে পারলে চার বছর পরের এশিয়ান গেমসে সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ।
×