ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আরও চার বছর খেলবেন এ্যান্ডারসন!

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২৯ আগস্ট ২০১৮

আরও চার বছর খেলবেন এ্যান্ডারসন!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বয়স হয়ে গেছে ৩৬, এখন আর তাকে রেকর্ডের পেছনে ছুটতে হচ্ছে না। রেকর্ড যেন ধাওয়া করে জেমস এ্যান্ডারসনকেই আলিঙ্গন করতে আসছে। ডানহাতি এ ইংলিশ পেসার এখন সর্বকালের সেরা পেসার হওয়ার পথে। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বাধিক উইকেট শিকারি পেসার হতে আর মাত্র ৭ উইকেট প্রয়োজন তার। তাহলেই ছাড়িয়ে যাবেন ৫৬৩ উইকেট শিকার করে টেস্ট ইতিহাসে সর্বাধিক উইকেট শিকারি অস্ট্রেলিয়ার পেসার গ্লেন ম্যাকগ্রাকে। ভারতের বিপক্ষে চলমান টেস্ট সিরিজের ৩ ম্যাচেই নিয়েছেন ১৭ উইকেট। বৃহস্পতিবার সিরিজের চতুর্থ টেস্ট শুরু হবে সাউদাম্পটনে। সেদিকে এখন পুরো বিশ্ববাসীর মনোযোগ। এখানেই হয়ে যেতে পারে এ্যান্ডারসনের রেকর্ডটি। ম্যাকগ্রা দাবি করলেন তাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পর আর কেউ ভবিষ্যতে ছুঁতে সক্ষম হবে না এ্যান্ডারসনকে এবং তার রেকর্ড অটুট থাকবে চিরকাল। তাছাড়া আরও অনেক রেকর্ড গড়ার দিকে চোখ রেখে দীর্ঘ সময় খেলবেন এ ইংলিশ পেসার এমনটাও মনে করছেন তিনি। এ্যান্ডারসনসহ ইংলিশ কোচ ট্রেভর বেলিসও মনে করছেন ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত খেলতে সক্ষম এ পেসার। কারণ ৩৬ বছর বয়সে যে স্ট্যামিনা, প্রাণশক্তি, ফিটনেস ও গতি নিয়ে বোলিং করে যাচ্ছেন তাতে করে ম্যাকগ্রা মনে করছেন এ্যান্ডারসন আরও অনেক রেকর্ড গড়বেন এবং ভবিষ্যতেও কেউ তাকে পেছনে ফেলতে পারবে না। অর্থাৎ অসি এ সাবেক পেসারের দাবি এ্যান্ডারসনের রেকর্ড হবে চির অমলিন। দুই সপ্তাহ আগেই ইংল্যান্ডের কোন ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ র‌্যাঙ্কিং স্পর্শ করেছেন তিনি। নিজের শারীরিক সক্ষমতা এবং পারফর্মেন্স দেখে নিজেকে ৩২ বছর বয়সী মনে করছেন এ্যান্ডারসন। কিন্তু ম্যাকগ্রা অবশ্য এ বিষয়ে কিছুটা সন্দিহান যে সত্যিই এ পেসার ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত খেলতে পারবেন কিনা। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিতভাবেই জানি তিনি কতটা সেদিকে মনোযোগী। কিন্তু কিছু সময় এমন ইচ্ছাশক্তি ও সামর্থ্য যে কমে যাবে না সেটারও কোন কারণ নেই। এখনও একেবারে তরতাজা তরুণদের মতো দৌড়াচ্ছেন। কোন ধরনের বাড়তি ওজন হয়নি তার এবং তাকে দেখে একেবারে শুরুর মতোই ভাল কিছু করার জন্য ক্ষুধার্ত ও শক্তিশালী মনে হচ্ছে। ট্রেভর তাকে চল্লিশে পৌঁছার পরও খেলতে পারার ব্যাপারে যে মন্তব্য দিয়েছেন সেটা অনেক বড় ব্যাপার। আমি সবসময়ই হতবিহ্বল থাকতাম অবসর নেয়ার সঠিক সময় নিয়ে। ২০০৬ সালের এ্যাশেজে ব্রিসবেনে প্রথম টেস্টের পর আমার মধ্যে থেমে যাওয়ার কোন প্রবৃত্তিই ছিল না। আমি তখনও খুব তীক্ষèধী ছিলাম এবং মনে হচ্ছিল এক হাজার টেস্ট উইকেট নিতে পারব। এরপরও কিন্তু আমি তখনই শেষ করে ফেলেছি।’ ২০০৭ সালে অবসর নেয়া ম্যাকগ্রা এখন যাই বলুন না কেন, তার রেকর্ড ভাঙ্গা ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না। আর মাত্র ৭টি উইকেট পেলেই ম্যাকগ্রাকে পেছনে ফেলে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি পেসার হয়ে যাবেন এ্যান্ডারসন। তারপর অমরত্ব! অন্তত ম্যাকগ্রা তাই মনে করেন। ম্যাকগ্রা ১২৪ টেস্টে ৫৬৩, এ্যান্ডাসন ১৪১ টেস্টে ৫৫৭ এবং কোর্টনি ওয়ালশ ৫১৯। ৫০০ উইকেট শিকারি আর কেউ নেই। খুব দ্রুতগতিতে ছুটে আসছেন এমন কোন তরুণ পেসারও বর্তমান বিশ্বে নেই। সে কারণেই ম্যাকগ্রা বলছেন, ‘আমার বিশ্বাস, যখনই সে আমাকে ছাড়িয়ে যাবে আর কখনই কেউ তাকে পেছনে ফেলতে পারবে না।’ ম্যাকগ্রার ওপরে আছেন শুধু তিন স্পিন কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরলিধরন (৮০০ উইকেট), শেন ওয়ার্ন (৭০৮ উইকেট) ও অনীল কুম্বলে (৬১৯ উইকেট)। সেদিক থেকে এ্যান্ডারসনের অবস্থান পাঁচে। কিন্তু ম্যাকগ্রা মনে করেন এ্যান্ডারসন অন্তত চাইবেন কুম্বলেকেও ছাড়িয়ে যেতে। তিনি বলেন, ‘সব রেকর্ডই ভাল। টেস্ট ইতিহাসে অন্য যে কোন ফাস্ট বোলারের চেয়ে বেশি উইকেট নিতে পেরে আমি খুবই গর্বিত। তবে যে কোন উচ্চতাই পেরোনো সম্ভব, আর জিমি আমাকে ছাড়িয়ে গেলে আমি সমান গর্বই করব। জিমি আমাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পর রেকর্ডটা কোন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায় সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। মনে হচ্ছে তিনি চাইবেন কুম্বলেকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার। তবে আজকাল খেলাটার যে ধরন হয়েছে যে পরিমাণ টি২০ খেলা হচ্ছে, আমার বিশ্বাস আর কোন ফাস্ট বোলার তাকে ছাড়াতে পারবে না।’ শুধু এ্যান্ডারসনের পরিশ্রম নয়, ম্যাকগ্রা মুগ্ধ ৩৬ বছর বয়সী এ্যান্ডারসনের সুইং করানোর ক্ষমতা দেখেও, ‘যখন তার বিপক্ষে প্রথম খেলেছি সেই সময় থেকেই বলে আসছি জিমি জাত খেলোয়াড়। আমি লক্ষ্য করেছি সে কিভাবে সহজাতভাবে দুই দিকেই সুইং করায়। এটা সত্যিকারের এক শিল্প। এমনটা করার মতো মানুষ খুব বেশি নেই। আমার আর যার কথা মনে পড়ে, সে হলো ওয়াসিম আকরাম।’
×