ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত আত্মবিশ্বাসী মিরাজ

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ২৯ আগস্ট ২০১৮

চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত আত্মবিশ্বাসী মিরাজ

মিথুন আশরাফ ॥ এখন পর্যন্ত এশিয়া কাপে খেলা হয়নি মেহেদী হাসান মিরাজের। এবার সেই সুযোগ ধরা দিতে পারে। সেই সুযোগের অপেক্ষাতেই আছেন মিরাজ। সেই সঙ্গে যে কোন পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুতও মিরাজ। আত্মবিশ্বাসের সুরেই মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সেই কথা বলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, ‘এটা আমার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। জাতীয় দলের হয়ে আমি এশিয়া কাপ খেলিনি। লক্ষ্য থাকবে ভাল কিছু করার। আর এশিয়া কাপ যেহেতু আরব আমিরাতে, যদি সুযোগ পাই তাহলে অবশ্যই শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করব।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘প্রতিটা খেলাই কিন্তু চ্যালেঞ্জ। আমাদের দলে সবাই অনেক কঠোর পরিশ্রম করছে। ব্যক্তিগতভাবে অনেকে অনুশীলন করেছে। আশাকরি সবার পরিশ্রম কাজে লাগবে। যার যার সেরাটা দিতে পারলেই ভাল হবে।’ দুই বছর আগে ২০১৬ সালে সর্বশেষ এশিয়া কাপ হয়। সেবার অনুর্ধ-১৯ দলের অধিনায়ক ছিলেন মিরাজ। যুব দলের খেলা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। সেই বছরই সুযোগ পেয়ে জাতীয় দলে অভিষেক হতেই মাতিয়ে দেন। এরপর মিরাজ দলের নির্ভরশীল ক্রিকেটার হয়ে ওঠেন। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হতে যাওয়া এশিয়া কাপে তাই মিরাজকে দলে দেখা যেতে পারে। আর যেহেতু মিরাজ সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেটের ম্যাচ খেলেছেন। অভিজ্ঞতা আছে। তাই একাদশেও খেলার সুযোগ মিলতে পারে। অফস্পিনিং অলরাউন্ডার তিনি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে স্পিনারদের গুরুত্বই বেশি থাকবে। আর সুযোগ মিললেই নিজেকে উজাড় করে দেয়ার মানসিক ভিতও তার কণ্ঠে পরিষ্কার। তিনি বলেছেন, ‘আমি অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছি ওখানে। উইকেট সম্পর্কে একটু হলেও ধারণা আছে। সব ঠিক থাকলে ভাল করার চেষ্টা করব।’ সঙ্গে দলের প্রয়োজনে যে কোন স্থানে ব্যাটিং-বোলিং করতেও প্রস্তুত মিরাজ, ‘দলের প্রয়োজনে যখন যেটা করতে হবে, সেটা করাই আমার লক্ষ্য। দলের প্রয়োজনে পাওয়ার প্লেতে বোলিং করতে হলে কিভাবে ব্যাটসম্যানকে রান করা থেকে থামিয়ে রাখব, উইকেট আদায় করতে পারব, মিডেল ওভারে কিভাবে বল করব, এইভাবে পরিকল্পনা করেই বল করি। এছাড়া ব্যক্তিগত কোন লক্ষ্য নেই, এটা করব বা সেটা করব, এমন কোন চিন্তা নেই। বাড়তি কোন চাপ নিতে চাই না। দলের চাহিদা অনুযায়ী পারফর্ম করে যেতে চাই। এশিয়ার কন্ডিশনে খেলা। এখানকার কন্ডিশনে আমরা অনেক খেলেছি। আমাদের অনেক প্লেয়ার খেলেছে উপমহাদেশে। আশাকরি সব ঠিক থাকলে খুব ভাল হবে ফলাফল।’ এশিয়া কাপের শেষ তিন আসরের দুই আসরেই বাংলাদেশ দল ফাইনালে খেলেছে। এবারও দলের সেই আশা আছে। এমনকি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে। আর দল যে এশিয়া কাপে ভাল করছে সেই ধারাবাহিকতা এবারও বজায় থাকবে বলে মিরাজের বিশ্বাস। সঙ্গে গত চার বছর ধরেই যে ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দল ভাল করছে, সেই ধারাবাহিকতাও থাকবে বলে মনে করছেন মিরাজ। সেই বিশ্বাস থেকে ভাল খেলার আশাও করছেন তিনি। বলেছেন, ‘আমরা শেষ চার বছর কিন্তু ভাল ক্রিকেট খেলে আসছি। বিশ্বকাপ দেখেন, দেশে বলেন বাইরে বলেন; আমরা অনেক ভাল ক্রিকেট খেলেছি। দাপুটে ক্রিকেট খেলেছি। ওইটাই আমাদের আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে। আমাদের সিনিয়র ক্রিকেটাররা অনেক দাপট দেখিয়ে খেলে আসছে। জুনিয়ররাও অবদান রেখেছে। সবমিলিয়ে আমরা সবাই আত্মবিশ্বাসী। আমরা যদি আমাদের শতভাগ দিতে পারি তাহলে ভাল কিছু হবে।’ এশিয়া কাপকে সামনে রেখে চলছে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন। অনুশীলনের দ্বিতীয় দিনে তো কঠোর ফিল্ডিং সেখান হলো। একহাতে কিভাবে ক্যাচ ধরতে হয়, সেই প্র্যাকটিস করান হলো। দলের প্রধান কোচ স্টিভ রোডস ফিল্ডিং সেশনে তার শিষ্যদের এক হাতে ক্যাচ ধরার অনুশীলন করালেন। ক্রিকেট ম্যাচে বেশিরভাগ সময়ই এক হাতের ক্যাচ দেখা মিলে সিøপ কিংবা অন্য ক্লোন ইন পজিশনে। খেলোয়াড়রাও তার জন্যও আলাদা করে অনুশীলন করে থাকেন। তবে বাউন্ডারি লাইনে বা অন্য পজিশনে এক হাতে ক্যাচ ধরার অনুশীলন নতুনই টাইগারদের জন্য। এমন অনুশীলন নিয়ে মিরাজ জানান, ‘অনুশীলন কতটা কঠিন করা যায়, সেই চেষ্টা করছি। আমাদের সামনে খুব বেশি সময় নেই। আমরা এখানে যতটুকু সময় পাচ্ছি, সেই সময়টা আমরা বেশ কঠিনভাবে অনুশীলন করছি। এই অনুশীলনটা সঠিকভাবে করতে পারলে আমাদের ম্যাচের সময় কাজটা সহজ হয়ে যাবে। ম্যাচ পরিস্থিতির জন্য ক্যাচিংয়ের এমন অনুশীলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যালেন্স ঠিক রেখে বাউন্ডারি লাইনের পাশ থেকে ক্যাচ ধরার ক্ষেত্রে এই অনুশীলনগুলো অনেক সহায়তা করবে। এভাবে ক্যাচ ধরার কৌশল অনুশীলনে যারা ভালভাবে রপ্ত করতে পারবে, ম্যাচে তখন সেটা ততটাই কাজে আসবে।’ এশিয়া কাপ ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে শেষ হবে ২৮ সেপ্টেম্বর। টুর্নামেন্টের গ্রুপপর্বে বাংলাদেশ দল দুটি ম্যাচ খেলবে। প্রথমদিনই দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ২০ সেপ্টেম্বর আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে লড়াই করবে মাশরাফিবাহিনী। গ্রুপপর্ব পেরিয়ে গেলে ‘সুপার ফোরে’ খেলবে বাংলাদেশ দল। ‘সুপার ফোর’ উতরে গেলে খেলবে ফাইনাল। ফাইনাল জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে বাংলাদেশ। শিরোপা জেতার আশা এবার করছে বাংলাদেশ। সেই চ্যালেঞ্জ নিতে সব ক্রিকেটারই প্রস্তুত। প্রস্তুত মেহেদী হাসান মিরাজও।
×