ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আগামীকাল পিরোজপুর;###;সম্ভাব্য প্রার্থীদের ছবি ৩-এর পাতায়

দুই আসনেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক প্রার্থী ॥ চুয়াডাঙ্গা

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৯ আগস্ট ২০১৮

দুই আসনেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক প্রার্থী ॥ চুয়াডাঙ্গা

রাজীব হাসান কচি, চুয়াডাঙ্গা ॥ দেশের পিছিয়ে পড়া জেলা চুয়াডাঙ্গা। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলার দুটি আসনেই বইছে নির্বাচনের দমকা হাওয়া। নির্বাচনী এলাকার শহর-হাট-বাজারে সর্বত্র এখন একই আলোচনা, সেটি হচ্ছে আগামী নির্বাচন। দুটি আসনেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নির্বাচনী মাঠ দাপিয়ে বেড়ালেও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচী পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছেন। তবে সবাই নিজ নিজ দলীয় হাইকমান্ডের সঙ্গে মনোনয়নের জন্য করছেন জোর লবিং। বর্তমানে জেলার দুটি আসনই রয়েছে আওয়ামী লীগের দখলে। জেলার দুটি আসনেই বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নতুন-পুরনো মিলিয়ে রয়েছে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। আওয়ামী লীগসহ মহাজোটের নেতারা চান জেলার দুটি আসনই ধরে রাখতে। অপর দিকে বিএনপি-জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোট নেতারা চান তাদের হারানো রাজ্য ফিরে পেতে। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে সংশয়ে থাকলেও ভেতরে ভেতরে ঘর গোছানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে আসলে দুটি আসনেই জমজমাট ভোটের লড়াই হবে বলেই মনে করছেন এলাকার ভোটাররা। চুয়াডাঙ্গা জেলার গ্রাম-গঞ্জে এক সময় ছিল কাঁচা রাস্তা, ছিল না বৈদ্যুতিক বাতি। ছিল চরমপন্থীদের অবাধ বিচরণ। প্রতি রাতেই চলত রক্তের হলি খেলা। এখন আর সেই অবস্থা নেই। আওয়ামী লীগের শাসনামলে বদলে গেছে এলাকার সার্বিক চিত্র। বর্তমানে পাকা রাস্তার পাশে বৈদ্যুতিক সুবিধায় চায়ের দোকানে ডিস লাইনে টিভি দেখতে দেখতে চলে গভীর রাত অবদি আড্ডা। এই আড্ডায় চলছে প্রার্থীদের নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এখন দুটি আসনই আওয়ামী লীগের দখলে। বেড়েছে সাংগঠনিক শক্তি ও ভোটের সমর্থন। চুয়াডাঙ্গা-১ (সদর-আলমডাঙ্গা) ॥ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন এবং আলমডাঙ্গা উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়ন নিয়ে এ আসন গঠিত। ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ব্যারিস্টার বাদল রশীদ। তারপর দীর্ঘ বিরতি। ২০০৮ সালে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এসে জয়লাভ করেন মহাজোটের আওয়ামী লীগ প্রার্থী সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। মাঝখানের ৭টি সংসদ নির্বাচনে জয়ের মুখ দেখেনি আওয়ামী লীগ বা এই জোট। ১৯৭৫ সালের পর থেকে ২০০৮ সালের আগ পর্যন্ত দীর্ঘ ৩৩ বছর এ আসনটি বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জাসদের (রব) দখলে ছিল। ২০১৪ সালে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জয়লাভ করেন মহাজোট প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। দীর্ঘদিন দলের দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালনকারী দুবার নির্বাচিত এ সংসদ সদস্যকে বর্তমান সরকারের আমলে হুইপ পদে নিয়োগ দেয়া হয়। করেছেন এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন। এ প্রসঙ্গে হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন জানান, বর্তমান সরকারের আমলে চুয়াডাঙ্গায় ২৫০ শয্যার হাসপাতাল ভবন, আধুনিক স্টেডিয়াম, যুব উন্নয়ন, টিটিসি, জেলা নির্বাচন অফিস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, ৯৫ ভাগ পাকা রাস্তা, বিশুদ্ধ পানির প্ল্যান্টসহ ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছি। বর্তমান সরকারের আমলে চরমপন্থী সন্ত্রাসী দমন করে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে এনেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মনোনয়ন পেয়ে পুনরায় বিজয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের অন্যতম দাবিদার কেন্দ্রীয় যুবলীগের তিনবার নির্বাচিত জ্যেষ্ঠ প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সামসুল আবেদীন খোকন বলেন, ২০০১ সাল থেকে দলের কাছে মনোনয়ন চাচ্ছি। এবার আমি আশাবাদী। তবে দল যাকে যোগ্য মনে করে, তাকে মনোনয়ন দিলেও কাজ করতে প্রস্তুত আছি। গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন শেখ সামসুল আবেদীন খোকন। এরপর থেকে আবারও শুরু করেছেন গণসংযোগ, করছেন সভা-সমাবেশ। এদিকে গত ১০ মাস ধরে মনোনয়নের আশায় প্রতিদিনই কোন না কোন গ্রামে গণ-সংযোগ, সভা-সমাবেশ করে বেড়াচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আশাদুল হক বিশ্বাস। পরপর দুবার নির্বাচিত সদর উপজেলার বর্তমান এ চেয়ারম্যান জানান, এবার গতানুগতিক ধারার মনোনয়ন হবে না। দলের হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্লিন ইমেজের প্রার্থী বিবেচনায় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য হাইকমান্ডের কাছে জোর লবিং করে যাচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর ডাঃ মাহাবুব হোসেন মেহেদী। পেশাগত কারণে তিনি ঢাকায় থাকলেও প্রতি সপ্তাহের দু’তিন দিন নির্বাচনী এলাকায় থেকে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি গণসংযোগ করে যাচ্ছেন, করছেন সভা-সমাবেশ। তিনি বলেন, মনোনয়ন পেলে চুয়াডাঙ্গার মানুষকে শতভাগ শিক্ষিত করতে চাই এবং বেকারত্বকে জাদুঘরে পাঠাতে চাই। আওয়ামী লীগের টিকেট প্রত্যাশীদের তালিকায় আরও একজনের নাম আলোচনায় আসছে। তিনি হলেন চুয়াডাঙ্গার কৃতীসন্তান দেশের সফল ব্যবসায়ী ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। তিনি বেশ আগে থেকেই চুয়াডাঙ্গায় তাঁর মায়ের নামে তারাদেবী ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে নানা ধরণের সেবামূলক কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে- বিদ্যালয়ে মিডডে মিল, শিক্ষাবৃত্তি, চিকিৎসা সহায়তা, ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে সহায়তা প্রদান প্রভৃতি। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা মনোনয়ন পাবার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের দেশের উন্নয়নের স্বার্থে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আনুপাতিক হারে সংসদে ব্যবসায়ী ও সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব নেই। তাই আমি মনে করি ব্যবসায়ী মহল, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং যারা চুয়াডাঙ্গার উন্নয়ন চান তারা আমার পাশে আছেন। এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপ সক্রিয় থাকলেও বিএনপিতে রয়েছে স্বনামে অসংখ্য গ্রুপ। গ্রুপগুলোর মধ্যে তিনটি কেন্দ্রীয় কর্মসূচী পালন করে। এর মধ্যে একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি শামসুজ্জামান দুদুর সহদর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট ওয়াহিদুজ্জামান বুলা। শামসুজ্জামান দুদু রাজনৈতিক কারণে ঢাকায় থাকলেও মাঝে মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় এসে কেন্দ্রীয় কর্মসূচী, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ প্রসঙ্গে সাবেক এমপি দুদু বলেন, পরিবেশ সৃষ্টি হলে, দল নির্বাচনে গেলে, দলীয় মনোনয়ন চাইব। মনোনয়ন পাবার শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে এ নেতা বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে অবশ্যই এ আসন পুনরুদ্ধার করব। অপর গ্রুপের নেতা ২০ দলীয় জোটের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অন্যতম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার দু’বার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস এবারও জোটের দলীয় মনোনয়ন পাবার ব্যাপারে আশাবাদী। অপর দিকে দলীয় মনোনয়ন পাবার জন্য হাইকমান্ডে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন অপর গ্রুপের নেতা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শরীফুজ্জামান শরীফ। তিনি ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ঢাকায় থাকলেও বেশির ভাগ কেন্দ্রীয় কর্মসূচী পালনে চুয়াডাঙ্গায় আসেন। স্থানীয় দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ দলীয় মনোনয়ন পাবার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, দল নির্বাচনে গেলে অবশ্যই ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করবে। ২০ দলীয় জোট সরকারের আমলে ছাত্রনেতারা মন্ত্রী-এমপি হয়ে সফল হয়েছেন, আমিও সফল হব। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য লে. কর্নেল (অব) সৈয়দ কামরুজ্জামান জানান, দলের মনোনয়ন চাওয়া প্রতিটি সদস্যের গণতান্ত্রিক অধিকার। সে হিসাবে আমি টিকেট চাইব, তবে দল যাকেই মনোনয়ন দিক আমরা একসঙ্গে কাজ করব। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক যুগ্ম সচিব ড. মোঃ আব্দুস সবুর (এম.এ.সবুর) দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। ২০০১ সালে ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে দলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি ২০০৮ সালে দলীয় মনোনয়ন পেলেও মহাজোটের কারণে প্রত্যাহার করে নেন। তিনি জানান, ২০১৪ সালেও দলের মনোনয়ন পেয়েছিলাম। কিন্তু চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশে প্রত্যাহার করেছিলাম। অতীতের চেয়ে দলের অবস্থান অনেক ভালো। তাই মনোনয়ন ও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। জামায়াতের নিবন্ধন না থাকলেও দলের জেলা আমীর আনোয়ারুল হক মালিক দাবি করে বলেছেন, তিনি দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের দল চুয়াডাঙ্গার ২টিসহ দেশের ১০০ আসনে নার্সিংয়ের কাজ করছে। এদিকে জাসদ (রব) থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে মাঠে রয়েছেন মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের নেতৃত্বে যুক্ত ফ্রন্ট নির্বাচনে গেলে আমি প্রার্থী হব। চুয়াডাঙ্গা-২ (দামুড়হুদা-জীবননগর ও সদরের আংশিক) ॥ দামুড়হুদা উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন, জীবননগর উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন এবং সদর উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে এ আসন গঠিত। এ আসনে ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডাঃ আসহাব-উল হক (হ্যাবা ডাক্তার) নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৬ সালে ৮ দলীয় জোট প্রার্থী জনতা মুক্তি পার্টির সভাপতি মীর্জা সুলতান রাজা নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। আবারও দীর্ঘ বিরতি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাজী আলী আজগার টগর নির্বাচিত হয়ে আসনটি তাদের দখলে নেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার আওয়ামী লীগের তিন নতুন মুখসহ ৭ জন, বিএনপির ২ জন, জামায়াত ও জাতীয় পার্টির ১ জন করে নতুন মুখ প্রার্থী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দুবার নির্বাচিত বর্তমান সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান আজাদুল ইসলাম আজাদ, দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মঞ্জু, দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনবার নির্বাচিত বর্তমান পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নজরুল মল্লিক, বঙ্গবন্ধু জাতীয় শিশু- কিশোর মঞ্চের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ড্রিমল্যান্ড গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ সাদিকুর রহমান বকুল ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক হাশেম রেজা। বিএনপির দুজন প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় উপ-কোষাধ্যক্ষ ও জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক ব্যবসায়ী নেতা শিল্পপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু ও জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শিল্পপতি হাজী ইঞ্জিনিয়ার মোখলেছুর রহমান তরফদার টিপু। এছাড়া জাতীয় পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার উদ্দিন জোয়ার্দ্দার দুলুু এবং জামায়াতের জেলা সেক্রেটারী রুহুল আমীন। এ আসন থেকে পরপর দু’বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি হাজী আলী আজগার টগর বলেন, গত ১০ বছর যাবৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকা- এলাকার মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার কাজ করছি। এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, দলীয় মনোনয়ন চাইব, দল তাদের পরীক্ষিত সৈনিকদেরই টিকেট দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছি। পাশাপাশি বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকা- তুলে ধরছি। ১৯৯১ সাল থেকে মনোনয়ন চাচ্ছি, এবার চাইব কিনা ঠিক নেই। মনোনয়ন প্রত্যাশী দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মঞ্জু বলেন, দীর্ঘদিন থেকে মাঠে আছি। এবারও মনোনয়ন চাইব। মনোনয়ন পেলে এ আসন অবশ্যই জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারব, যা একমাত্র আমার পক্ষেই সম্ভব। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আরেক দাবীদার দলের দর্শনা পৌর সাধারণ সম্পাদক ও তৃতীয়বারের মতো দর্শনার পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, দীর্ঘদিন মেয়র হিসেবে মানুষের সেবা করছি। দল অবশ্যই মনোনয়নের ক্ষেত্রে এটি বিবেচনায় আনবে। অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নজরুল মল্লিক বলেন, এলাকার বঞ্চিত, ত্যাগী, তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে আছে। দল মাঠ জরিপ করে মনোনয়ন দিলে অবশ্যই আমি টিকেট পাব। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌঁড়ে অপর নতুন মুখ আলহাজ সাদিকুর রহমান বকুল। ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক এ নেতা জানান, দলের ত্যাগী, বঞ্চিত নেতা-কর্মীরাও আমাকে চাচ্ছে। দলের মনোনয়ন চাইব, পাওয়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী। কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক হাশেম রেজা একজন ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক। ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার প্রকাশক-সম্পাদক। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আরেক নতুন মুখ। তিনিও বেশ আগে থেকে চুয়াডাঙ্গা-২ নির্বাচনী এলাকায় সভা-সমাবেশ, পথসভা, উঠান বৈঠকসহ নানা কর্মকা- করে ভোটরদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, এলাকা ও এলাকার মানুষের উন্নয়নের কথা চিন্তা করেই দলীয় মনোনয়ন চাইব। অন্যদিকে একাধিকবার নির্বাচিত বিএনপির সংসদ সদস্য শিল্পপতি হাজী মোজাম্মেল হকের মৃত্যুর পর থেকে দলের হাল ধরে নির্বাচনী এলাকার নেতাকর্মীদের সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও জেলা বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক শিল্পপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু। তিনি জানান, দল যদি নির্বাচনে যায় সে ক্ষেত্রে মনোনয়ন চাইবো ১০ বছর ধরে মাঠে আছি, মনোনয়ন পেলে বিএনপির হারানো সিট উদ্ধার করবো। বিএনপির মনোনয়ন দৌঁড়ে থাকা জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বিশিষ্ট শিল্পপতি ইঞ্জিনিয়ার হাজী মোখলেছুর রহমান তরফদার টিপু বলেন, এবারই প্রথম মনোনয়ন চাইবো। মনোনয়ন পেলে আমি অবশ্যই বিএনপির হারানো আসন পুনরুদ্ধার করব। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে জামায়াত প্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান নির্বাচিত হন। জামায়াত নেতাদের দাবী, সেই উত্তাপ আজও আছে। জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী রুহুল আমীন বলেন, দলের মনোনয়ন নিয়ে নেতা-কর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। মানুষ যদি ভোট দেয়ার সুযোগ পায়, তাহলে অবশ্যই জয়ী হব। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা জাপার (এরশাদ) সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার উদ্দিন জোয়ার্দ্দার দুলু জানান, মানুষ এরশাদ শাসনামলের সুফল এখন বুঝতে পারছে, তারা এখন আবার সেই শাসনামলে ফিরে যেতে চায়।
×