ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় নির্বাচন ॥ ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২৯ আগস্ট ২০১৮

জাতীয় নির্বাচন ॥ ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন হবে। দিন তারিখ এখনও ঠিক হয়নি। তবে ওই সময়েই নির্বাচন হবে। সুবিধাও রয়েছে। কারণ ওই সময়ে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকে। আর সেগুলোই কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হয়। এছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি সংযোজিত হলেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই তা ব্যবহার করতে চায় ইসি। কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, এটি হলে আগামী নির্বাচনে এক তৃতীয়াংশ আসনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এই লক্ষে দেড় লাখ ইভিএম কেনার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এ বিষয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে আইন পাস, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতসহ সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সংসদ নির্বাচনে এক শ’ আসনে ইভিএম ব্যবহার করার মতো কমিশনের সক্ষমতা থাকবে উল্লেখ করেন। তবে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে এক শ’ আসনে ইভিএম ব্যবহারের কথা উল্লেখ করলেও তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে নির্বাচন কমিশন এখনও কোন সিদ্ধান্তে আসেনি। নির্বাচনী আইন সংস্কার হলে তার পরই বিষয়টি কমিশন বিবেচনা করবে। জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করতে হলে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) তা সংযোজন করতে হবে। ইভিএম ব্যবহার হবে কি হবে না তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে ৩০ আগস্ট কমিশন সভায়। যদি আরপিও সংশোধন হয়, তাহলে আমাদেরও প্রস্তুতি থাকবে। কমিশনে সিদ্ধান্ত হলেও এটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার বিষয়। কয়টি কেন্দ্রে হবে সে ধরনের সিদ্ধান্ত এখনও আমরা নেইনি। আইনগত ভিত্তি পেলে ইভিএম কেনা, প্রশিক্ষণের বিষয়টি আসবে উল্লেখ করেন। এদিকে ইভিএম ব্যবহারে জনগণকে সচেতন করতে ইভিএম মেলারও আয়োজন করতে যাচ্ছে ইসি। কেন্দ্রীয়ভাবে ইভিএম মেলার আয়োজন নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ইসি সচিব। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সেপ্টেম্বরেই কেন্দ্রীয়ভাবে একটি মেলা হবে। এর বাইরে ১০টি আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসেও মেলা হবে। দেড় লাখ ইভিএম কেনার জন্যে ইতোমধ্যে ইসি সচিবালয়ের প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির বিষয়ে বলেন, আমরা প্রকল্প প্রস্তাব করছি। ওইভাবে আলোচনা হয়নি। আগাম কিছু বলা যাবে না। এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। এসব কিছু আলোচনাই হয়নি; এখন বললে বিভ্রান্ত করা হবে। ইভিএম ব্যবহার করার আগে ভিত্তিস্বরূপ আইন দরকার। ৩০ আগস্ট কমিশন সভায় আরপিও সংশোধন-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। তারপর সেটি ভোটিংয়ের (যাচাই-বাছাই) জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে। আইন পাস হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলবে কমিশন। তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে, সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি হবে না? এছাড়া জাতীয় নির্বাচনের পরেই সারাদেশের সব উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেখানেও ইভিএম ব্যবহার করা হবে বলে জানান ইসি সচিব। এদিকে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা জানিয়ে বলেন, সে অনুযায়ী নির্বাচনী সব প্রস্তুতির কাজ করছে ইসি। জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ নতুন বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের স্কুল শুরু হয়ে যাবে। সে সময় নির্বাচন হলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি হবে। তাছাড়া ডিসেম্বরের শেষ দিকে শিক্ষার্থীদের স্কুল ছুটি থাকে। গেলবার ৫ জানুয়ারি (২০১৪) ভোট হয়েছিল। এখন তো ১ জানুয়ারি বই বিতরণ, একাডেমিক বর্ষ শুরু হয়। সাধারণত ডিসেম্বরের শেষে বন্ধ থাকে বিধায় স্কুল-কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হয়। তা বিবেচনায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেবে ইসি। ডিসেম্বরের শেষে নির্বাচনের বিষয়টি চিন্তাভাবনা করা হলেও কোন টাইম ফ্রেম নির্দিষ্ট করা হয়নি। তবে একটা সময় ধারণা করা হচ্ছে। যেহেতু ৩০ অক্টোবর নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হবে, এরপর যে কোন সময় তফসিল করতে পারে কমিশন। আমাদের প্ল্যান ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার। এক্ষেত্রে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহকে কমিশন উপযুক্ত বিবেচনা করতে পারে বলেও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান ইসি সচিব। সংবিধান অনুযায়ী ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির সামনে।
×